একজন ব্যাংকারের স্যালারি কেন বেশি হওয়া উচিত!
ব্যাংকার বলতে বুঝায়, যিনি ব্যাংকিং কার্যাবলী পরিচালনা বা সম্পাদন করেন। তাহলে এখানে দেখা যাচ্ছে যে, একটি ব্যাংকের মালিক যেমন ব্যাংকার, তেমনি উক্ত ব্যাংকের কর্মচারী ও কর্মকর্তাগণও একজন ব্যাংকার। সুতরাং বলা যায় যে, ব্যাংকার বলতে ব্যাংকিং কার্যে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গকে বুঝানো হয়ে থাকে।
এই লেখায় একজন ব্যাংকারের স্যালারি কেন বেশি হওয়া উচিত তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। কেন একজন ব্যাংকার এর স্যালারি একটু বেশি হওয়া উচিত! একজন নতুন ব্যাংকার হিসেবে আমার এখন অব্দি স্বল্প অভিজ্ঞতায় কিছু পয়েন্ট তুলে ধরছিঃ
১. ব্যাংকিং পেশা ও অন্যান্য পেশাঃ
প্রথমত ব্যাংকিং পেশাকে কোনো ভাবেই বিসিএস, ডিফেন্স এবং ডাক্তারী পেশার সাথে মিলানো যাবেনা। এই প্রতিটা সেবামূলক পেশাই নিজ নিজ অবস্থানে ‘বেস্ট’।
২. ব্যাংকাররা অর্থনীতি গতিশীল রাখেঃ
ব্যাংক এবং ব্যাংকার তাদের কাজের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল রাখে। বৈদেশিক বানিজ্য মধ্যস্থতা করে এবং রেমিট্যান্স আনার মাধ্যমে ফরেন রিজার্ভ বৃদ্ধি করে। সুতরাং ব্যাংক হচ্ছে দেশের উন্নয়নের প্রধান বাহক।
ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন। |
৩. টপ টু মিড রেঞ্জের স্টুডেন্টঃ
সাধারণত ব্যাংকিংকে পেশা হিসেবে বেছে নেয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের টপ টু মিড রেঞ্জের স্টুডেন্টরাই। এবং প্রচুর পড়াশোনা করে প্রিপ্রারেশন নিয়ে এই পেশায় এসে থাকেন।
৪. ব্যাংকারদের শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ
ব্যাংকারদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ৯৮%ই পোস্ট গ্রাজুয়েশন এবং সাথে ১/২টা স্পেশাল কোর্স। তুমুল প্রতিযোগিতা করেই জবটা পান। যেমনঃ একজন সিএনজি চালক বা ব্যবসায়ী চাইলেই ব্যাংকে জব পাবেনা কিন্তু একজন ব্যাংকার চাইলেই একটা ব্যবসা করতে পারে।
৫. ব্যাংকারদের রিস্ক ফ্যাক্টরঃ
অন্য যেকোনো পেশা থেকে ব্যাংক জবের রিস্ক অনেক অনেক বেশি। প্রতিদিনই টাকা নিয়ে ব্যবসা। এবং গ্রাহকদের বিশ্বাস করে কাজ করা। এখানে ভুলের কোনো ক্ষমা নেই।
৬. ব্যাংকারদের সততাঃ
আমার দৃষ্টিতে একমাত্র এই একটি পেশা, যেখানে নিজের পুরোটা সময় সততার পরিচয় দিয়ে থাকেন। একজন ব্যাংকার একজন সাধারণ মানুষের সততা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম থাকেন।
৭. ব্যাংকারদের ধৈর্য্যঃ
আসলে এই বিষয়টা কিছু বলার দরকার মনে হয়না। প্রতিটা ব্যাংকারই ধৈর্য্য পরীক্ষায় প্রথম হবেন। গ্রাহক সেবার প্রতিটি অভিজ্ঞতা প্রতিটি ব্যাংকারের ধৈর্যের বাহক।
৮. ব্যাংকারদের স্ট্রেসঃ
একজন ব্যাংকার এর প্রতিদিন যেই পরিমাণ স্ট্রেস নিতে হয়, আমার মনে হয়, দেশের অন্য কোনো পেশায় নেয়া লাগেনা। এর জন্যই ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট শিক্ষিত, চারমিং,মেন্টালি এডভান্সড এসপিরান্টসকেই নিয়োগ দিয়ে থাকেন।
৯. ব্যাংকারদের সেবাঃ
শুধুমাত্র এই সেবামুলক পেশাতেই সর্বদা গ্রাহকদের হাসিমুখে অনটাইমে সেবা দেয়া হয়ে থাকে। গ্রাহক সেটিসফেকশন টেকস প্রাইওরিটি ফার্স্ট। একজন ব্যাংকার গ্রাহক সেবার জন্য তার ব্যক্তিগত নানা স্বার্থকে স্কিপ করে প্রতিদিন ১০টায় উপস্থিত হয়ে বের হওয়ার কোনো নির্দিষ্ট সময় থাকেনা। আর তারা তেমন একটা ছুটিও পায়না।
১০. ব্যাংকারদের প্রেসারঃ
একজন ব্যাংকার এর নিজের ডেস্কের পুরো কাজ করার সাথে সাথে ব্যাংক কর্তৃক প্রদত্ত ব্যক্তিগত ‘বিজনেস টার্গেট’ পূরনের জন্যে আরও এক্সট্রা এফোর্ট দেয়া লাগে। তাতে মেধার সাথে সাথে প্রচুর ক্যালরিও নস্ট হয়।
(এইসব রেস্পন্সিবিলিটসগুলো একজন এক্সটা অরডিনারি ট্যালেন্টেড শিক্ষিত ব্যক্তিই নিতে পারেন। এক কথায়, একজন ব্যাংকার হচ্ছে একজন সব্যসাচী। তিনি একি সময়ে ৩/৪টা সিচুয়েশন এডাপ্ট করে থাকেন।)
পুনশ্চঃ দয়া করে ব্যাংকিং পেশাকে কেউ বিসিএস, ডিফেন্স এবং ডাক্তারী পেশার সাথে কম্পেয়ার করতে যাবেন না। কোনো ভুল বললে আপনার ছোট ভাই মনে করে পয়েন্টগুলো লাইটলি নিয়ে থাকবেন এবং সংশোধন করে দিবেন। ধন্যবাদ।