ঋনের ঝুঁকি বা খেলাপী ঋন কমিয়ে আনতে করণীয়
আবুল বরকত সেরনিয়াবাতঃ পার্টনারশীপ আইন ১৯৩২ আইনগতভাবে সংশোধন করে বা ব্যাংক কোম্পানী আইন ১৯৯১ এর ন্যায় “ব্যাংক পার্টনারশীপ আইন” নামে একটি নতুন আইন প্রণয়নের মাধ্যমে বা অতিব জরুরী পরিপত্র বা আদেশ জারীর মাধ্যমে সকল রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংক, প্রাইভেট ব্যাংক, লিজিং কোম্পানী, ফাইন্যান্স কোম্পানী, অর্থলগ্নী প্রতিষ্ঠানের প্রদত্ত ঋন এর বিপরীতে আরজেএসসি-তে Charge Creation বাধ্যতামূলক করত: সকল রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংক, প্রাইভেট ব্যাংক, লিজিং কোম্পানী, ফাইন্যান্স কোম্পানী, অর্থলগ্নী প্রতিষ্ঠানের খেলাপী ঋন বা ঋনের ঝুঁকি কমিয়ে আনলে বা খেলাপী ঋনের পরিমাণ কমিয়ে আনলে সরকারের রাজস্ব (ট্যাক্স ও ভ্যাট) বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।
দীর্ঘদিন যাবৎ আমি বিভিন্ন প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানী ও পাবলিক লিমিটেড কোম্পানী, পার্টনারশীপ ফার্ম, ট্রেড অর্গানাইজেশন, সোসাইটি, ফাউন্ডেশন, ট্রাষ্ট, ট্যাক্স, ভ্যাট এর আইনগত প্রতিনিধি বা কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করে আসছি। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ বিনির্মাণে হাজার বছরের শ্রেষ্ট বাঙালী বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অদম্য বাংলাদেশ যখন আজ উন্নয়নের অভিযাত্রায় অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলেছে তখন দেশের অগ্রযাত্রা ও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে রাজস্ব (ট্যাক্স ও ভ্যাট) বৃদ্ধি এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ একটি অগ্রাধিকার ভিত্তিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
আরও দেখুন:
◾ জামানত নিয়ে ব্যাংকের বিড়ম্বনা ও প্রাসঙ্গিক কিছু কথা
◾ ঋণ খেলাপিদের সামাজিকভাবে বয়কট করুন
বিরাজমান আইনি কাঠামোর ভেতর কতিপয় আইন আইনগত ভাবে সংশোধন করে বা অতিব জরুরী পরিপত্র বা অতিব জরুরী আদেশ জারী বা নোটিশ জারীর মাধ্যমে বর্তমান আদায়যোগ্য রাজস্বের (ট্যাক্স ও ভ্যাট) পরিমাণ ও গ্রাহক সেবার মান বহুগুণে বৃদ্ধি করা সম্ভব। আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে, দেশরত্ন শেখ হাসিনার অনুসারী এক নগণ্য কর্মী হয়ে, একজন দেশপ্রেমিক সচেতন নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশের অধিকতর আর্থিক উন্নয়নের জন্য আমার দীর্ঘ বছর যাবৎ কনসালটেন্ট পেশা এর অভিজ্ঞতার আলোকে সরকারের রাজস্ব (ট্যাক্স ও ভ্যাট) বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিম্নলিখিত কিছু প্রস্তাবনা মমতাময়ী মা, মাদার অফ হিউম্যানিটি, মাদার অফ কওমী যার স্বপ্ন শুধু বাংলার মানুষের উন্নয়ন তিনি হলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ যথাযথ বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ ও সু-বিবেচনার জন্য তুলে ধরছি।
ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন। |
বানিজ্য মন্ত্রনালয় এর অধিনস্থ পরিদপ্তর অফিস অফ দ্যা রেজিষ্ট্রার অফ জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ এন্ড ফার্মস (আরজেএসসি) কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পার্টনারশীপ আইন ১৯৩২ অনুসারে পার্টনারশীপ ফার্ম নিবন্ধন দেয়া হয়, ব্যবসা পরিচালনার জন্য নিবন্ধনের পর পার্টনারশীপ ফার্ম এর নামে বিভিন্ন রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংক, প্রাইভেট ব্যাংক, লিজিং কোম্পানী, ফাইন্যান্স কোম্পানী, অর্থ লগ্নী প্রতিষ্ঠানে হিসাব খুলে পরিচালনা করেন এবং ঐ সমস্ত নিবন্ধিত পার্টনাশীপ ফার্মকে বিভিন্ন রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংক, প্রাইভেট ব্যাংক, লিজিং কোম্পানী, ফাইন্যান্স কোম্পানী, অর্থলগ্নী প্রতিষ্ঠান ঋন প্রদান করেন। কিন্তু পার্টনারশীপ আইনে রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংক, প্রাইভেট ব্যাংক, লিজিং কোম্পানী, ফাইন্যান্স কোম্পানী, অর্থ লগ্নী প্রতিষ্ঠান থেকে ঋন গ্রহনের বিপরীতে আরজেএসসি-তে Charge Creation কোন আইন নাই। যার কারণে সরকার শত কোটি টাকার রাজস্ব (ট্যাক্স ও ভ্যাট) হারাচ্ছে ও খেলাপি ঋন বা ঋনের ঝুঁকি দিন দিন বেড়েই চলছে।
যেমন: যে কোন প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানী ও পাবলিক লিমিটেড কোম্পানীকে কোন রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংক, প্রাইভেট ব্যাংক, লিজিং কোম্পানী, ফাইন্যান্স কোম্পানী, অর্থ লগ্নী প্রতিষ্ঠান ঋন প্রদান করলে আরজেএসসি-তে প্রতিটি ঋনের বিপরীতে Charge Creation (Form-XVIII, Form-XIX) জমা করতে হয় যার কারনে সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব (ট্যাক্স ও ভ্যাট) পায় এবং কোন লিমিটেড কোম্পানীর পরিচালক যদি তার শেয়ার এর আংশিক বা সম্পূর্ন, বিক্রয় বা হস্তান্তর বা ট্রান্সফার করে তাহলে “ব্যাংক কোম্পানী আইন ১৯৯১” এর ২৭(ক) ধারা অনুসারে ঐ সংশ্লিষ্ট ঋন প্রদানকারী রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংক, প্রাইভেট ব্যাংক, লিজিং কোম্পানী, ফাইন্যান্স কোম্পানী, অর্থ লগ্নী প্রতিষ্ঠান থেকে অনাপত্তি পত্র বা NOC গ্রহন করে আরজেএসসি-তে জমা দেয়া প্রয়োজন হয় আবার যদি কোন কোম্পানী বিলুপ্তি বা Winding Up করতে চায় আর ঐ কোম্পানীর যদি কোন রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংক, প্রাইভেট ব্যাংক, লিজিং কোম্পানী, ফাইন্যান্স কোম্পানী, অর্থ লগ্নী প্রতিষ্ঠানের ঋন থাকলে ঋন প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান থেকে আরজেএসসি-তে Form-XXVIII (Memorandum of Satisfaction) জমা না দেয়া পর্যন্ত ঐ কোম্পানী Winding Up করতে পারে না।
কিন্তু পার্টনারশীপ আইনে পার্টনারশীপ ফার্ম Re-Constitution বা Dissolution এর ক্ষেত্রে এ ধরনের কোন নিয়ম বা আইন নাই। আরজেএসসি থেকে কোন পার্টনারশীপ ফার্ম নিবন্ধনের পর ঐ পার্টনারশীপ ফার্ম রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংক, প্রাইভেট ব্যাংক, লিজিং কোম্পানী, ফাইন্যান্স কোম্পানী, অর্থ লগ্নী প্রতিষ্ঠান থেকে ঋন গ্রহন করে এবং ঋন গ্রহনের পর যে কোন Partner যদি তার আংশিক বা সম্পূর্ন অংশ বিক্রির মাধ্যমে পার্টনারশীপ ফার্ম Re-Constitution করে থাকে তাহলে উক্ত File টি আরজেএসসি-তে রেকর্ড করতে “ব্যাংক কোম্পানী আইন ১৯৯১” এর ন্যায় আরজেএসসি-তে কোন রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংক, প্রাইভেট ব্যাংক, লিজিং কোম্পানী, ফাইন্যান্স কোম্পানী, অর্থ লগ্নী প্রতিষ্ঠানের অনাপত্তি পত্র বা NOC প্রয়োজন হয় না, আবার যদি পার্টনারশীপ ফার্মটি বিলুপ্তি বা পার্টনারশীপ ফার্মটি Dissolve করে সেক্ষেত্রে ও আরজেএসসি-তে কোন রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংক, প্রাইভেট ব্যাংক, লিজিং কোম্পানী, ফাইন্যান্স কোম্পানী, অর্থ লগ্নী প্রতিষ্ঠানের বা ঋন প্রদান কারী প্রতিষ্ঠানের NOC বা অনাপত্তি পত্রের প্রয়োজন হয় না।
যার ফলে রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংক, প্রাইভেট ব্যাংক, লিজিং কোম্পানী, ফাইন্যান্স কোম্পানী, অর্থ লগ্নী প্রতিষ্ঠানের ঋন খেলাপী বা ঋনের ঝুঁকি দিন দিন বেড়েই চলছে এবং পার্টনারশীপ ফার্ম এর প্রতিটি ঋনের বিপরীতে আরজেএসসি-তে Charge Creation না হওয়ায় এতে করে প্রতি বছর সরকারের আর্থিক খাতের রাজস্ব (ট্যাক্স ও ভ্যাট) ঘাটতির পরিমান বৃদ্ধি পাচ্ছে। এক্ষেত্রে ঋন প্রদানের জন্য যে কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান পার্টনারশীপ ফার্মকে ঋন প্রদান করলে প্রতিটি ঋনের বিপরীতে আরজেএসসি-তে Charge Creation বাধ্যতামূলক করতে পার্টনারশীপ আইন-১৯৩২ সংশোধন বা অতিব জরুরী পরিপত্র বা আদেশ বা নোটিশ জারী করা খুবই জরুরী।
পার্টনারশীপ আইন ১৯৩২ সংশোধন বা ব্যাংক কোম্পানী আইন ১৯৯১ এর ন্যায় “ব্যাংক পার্টনারশীপ আইন” নামে একটি নতুন আইন প্রণয়নের মাধ্যমে বা অতিব জরুরী পরিপত্র বা আদেশ বা নোটিশ জারী করে রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংক, প্রাইভেট ব্যাংক, লিজিং কোম্পানী, ফাইন্যান্স কোম্পানী, অর্থ লগ্নী প্রতিষ্ঠনের প্রতিটি ঋনের বিপরীতে আরজেএসসি-তে Charge Creation বাধ্যতামূলক করার মাধ্যমে রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংক, প্রাইভেট ব্যাংক, লিজিং কোম্পানী, ফাইন্যান্স কোম্পানী, অর্থ লগ্নী প্রতিষ্ঠনের ঋনের ঝুঁকি বা খেলাপী ঋনের পরিমান কমাতে এবং প্রতিটি ঋনের বিপরীতে আরজেএসসি-তে Charge Creation বাধ্যতামূলক করার মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব (ট্যাক্স ও ভ্যাট) বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে আইনের বাস্তব রূপ দেওয়া প্রয়োজন।
তাতে দেখা যাবে যে রাষ্ট্রয়াত্ত ব্যাংক, প্রাইভেট ব্যাংক, লিজিং কোম্পানী, ফাইন্যান্স কোম্পানী, অর্থ লগ্নী প্রতিষ্ঠানের ঋনের ঝুঁকি বা খেলাপি ঋনের পরিমান কমবে এবং আরজেএসসি-তে প্রতিটি ঋনের বিপরীতে Charge Creation এর মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব (ট্যাক্স ও ভ্যাট) বৃদ্ধি সম্ভাবনার ক্ষেত্র তৈরী হবে। কারন কোম্পানির ঋনের Charge Creation এ সরকারী ফি প্রথম কোটি টাকায় ৩৫৫০ টাকা +১৫% ভ্যাট এবং পরবর্তী প্রতি কোটি টাকায় ২০০০ টাকা +১৫% ভ্যাট। তাই রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংক, প্রাইভেট ব্যাংক, লিজিং কোম্পানী, ফাইন্যান্স কোম্পানী, অর্থ লগ্নী প্রতিষ্ঠনের ঋনের ঝুঁকি বা খেলাপী ঋনের পরিমান কমাতে এবং পার্টনারশীপ আইন ১৯৩২ সংশোধন বা ব্যাংক কোম্পানী আইন ১৯৯১ এর ন্যায় “ব্যাংক পার্টনারশীপ আইন” নামে একটি নতুন আইন প্রণয়নের মাধ্যমে বা অতিব জরুরী পরিপত্র বা আদেশ বা নোটিশ জারী করে সরকারের রাজস্ব (ট্যাক্স ও ভ্যাট) বৃদ্ধির লক্ষ্যে পার্টনারশীপ ফার্মের প্রতিটি ঋনের বিপরীতে আরজেএসসি-তে Charge Creation করা বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত এবং Charge Creation বাধ্যতামূলক করা হলে প্রতি বছর সরকারের শত শত কোটি টাকার রাজস্ব (ট্যাক্স ও ভ্যাট) বাড়বে ও পর্যায়ক্রমে প্রতিবছর রাজস্ব (ট্যাক্স ও ভ্যাট) বৃদ্ধি পেতে থাকবে, খেলাপি ঋন বা ঋনের ঝুঁকির পরিমান কমবে, অর্থনৈতিক ভাবে দেশ শক্তি শালী হবে এবং বিশ্ব অর্থনীতির সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান এগিয়ে যাবে।
অতএব সকলের নিকট আবেদন যাতে পার্টনারশীপ আইন ১৯৩২ সংশোধন বা ব্যাংক কোম্পানী আইন ১৯৯১ এর ন্যায় “ব্যাংক পার্টনারশীপ আইন” নামে একটি নতুন আইন প্রণয়নের মাধ্যমে বা অতিব জরুরী পরিপত্র বা আদেশ বা নোটিশ জারী করে রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংক, প্রাইভেট ব্যাংক, লিজিং কোম্পানী, ফাইন্যান্স কোম্পানী, অর্থ লগ্নী প্রতিষ্ঠনের প্রতিটি ঋনের বিপরীতে আরজেএসসি-তে Charge Creation বাধ্যতামূলক করার মাধ্যমে রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংক, প্রাইভেট ব্যাংক, লিজিং কোম্পানী, ফাইন্যান্স কোম্পানী, অর্থ লগ্নী প্রতিষ্ঠনের ঋনের ঝুকি বা খেলাপী ঋনের পরিমান কমাতে এবং প্রতিটি ঋনের বিপরীতে আরজেএসসি-তে Charge Creation বাধ্যতামূলক করার মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব (ট্যাক্স ও ভ্যাট) বৃদ্ধিতে সহায়তা করা হয় তার বিহীত বিধান করার আজ্ঞা হয়।
লেখকঃ মো: আবুল বরকত সেরনিয়াবাত
কনসালটেন্ট
ট্যাক্স, ভ্যাট ও কোম্পানি ম্যাটার।