কাগজি মুদ্রার ভবিষ্যৎ কি শেষ?
কাগজি মুদ্রার ভবিষ্যৎ কি তবে শেষ হয়ে আসছে? প্রযুক্তির উৎকর্ষতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এ সম্ভাবনা। লেনদেনের জন্য দৃশ্যমান মুদ্রার পরিবর্তে অদৃশ্য মুদ্রা প্রচলনের আলোচনা সময়ের সঙ্গে বাড়ছে। যুক্তরাজ্যের ব্যাংক অব ইংল্যান্ড গ্রাহক ও ব্যবসায়ীদের জন্য ইলেকট্রনিক মুদ্রা প্রচলন করার কথা ভাবছে। তবে ইলেকট্রনিক মুদ্রা ক্রিপ্টোকারেন্সির মতো কিছু নয় বলে জানিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। খবর বিবিসি।
ব্যাংকটির গভর্নর মার্ক কার্নি বলেন, লেনদেনের ক্ষেত্রে বিপ্লব সম্পন্ন হওয়ার মাঝামাঝিতে অবস্থান করছে তারা। আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে ইলেকট্রনিক মুদ্রা প্রচলনের সম্ভাবনার মাধ্যমে বিপ্লবের স্বপ্ন দেখছে ব্যাংকটি। এ বিপ্লবের নাম ডিজিটাল লেনদেন।
তবে কাগজি মুদ্রার ভবিষ্যৎ সহসাই কমছে না। এছাড়া ব্যাংকটি কাগজি মুদ্রার প্রতি এখনো সংবেদনশীল। মার্ক কার্নি বলেন, এর মধ্য দিয়ে কাগজি মুদ্রার সঙ্গে নতুন এক অধ্যায়ের সংযোগ ঘটবে। ইলেকট্রনিক মুদ্রা মোটেই কাগজি মুদ্রার কোনো প্রতিস্থাপন নয়। কাগজি মুদ্রার প্রতি মানুষের এখনো আকর্ষণ রয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তবে ইলেকট্রনিক মুদ্রার প্রচলন হোম অ্যাপ্লায়েন্স ও কর পদ্ধতির ক্ষেত্রে একটি নতুন দ্বার উন্মোচন করবে। কাগজি মুদ্রা ৩০০ বছর ধরে লেনদেনের একমাত্র উপায় ছিল। কিন্তু কিছুদিন ধরে মানুষ নোটের মাধ্যমে খুব কম লেনদেন করছিল। এর পর পরই ব্যাংকটি প্রোগ্রামেবল অর্থের কথা ভাবা শুরু করে।
ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন। |
বর্তমানে আর্থিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন পদ্ধতিতে অর্থ লেনদেনের প্রস্তাব করছে। কিন্তু এর জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে মুদ্রা সরবরাহের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। এ অবস্থায় যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইলেকট্রনিক অর্থ প্রচলন করতে চাচ্ছে। এ মুদ্রা কাগজি মুদ্রার মতোই প্রভাব বিস্তার করবে। অর্থাৎ ১০ পাউন্ড মূল্যমানের জন্য ১০ পাউন্ড মূল্যমানের ইলেকট্রনিক মুদ্রাই প্রচলন হবে।
তবে ব্যাংক হিসাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে অর্থ গচ্ছিত রাখার মতো কোনো পদ্ধতি এটি হবে না। এটি ক্রিপ্টোকারেন্সির মতো করেও কাজ করবে না। বরং এর সঙ্গে দুটোরই ভিন্নতা বিদ্যমান থাকবে। এ পদ্ধতিতে গ্রাহক তথ্য-উপাত্ত ছাড়াই লেনদেন করতে পারবে। নগদ অর্থ যেমন পরিচয় উল্লেখ না করেও লেনদেন করা যায়, এটিও সে রকম পদ্ধতি হিসেবে গড়ে উঠবে।
এছাড়া কাগজি মুদ্রার চাহিদা যতদিন থাকবে, ব্যাংক তা পূরণ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানানো হয়েছে। ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ প্রক্রিয়াটি কার্ডের মাধ্যমে সম্পাদিত লেনদেন থেকেও আলাদা হবে। অর্থাৎ ভিসা, মাস্টারকার্ড কিংবা কোনো কার্ডের প্রযুক্তিগত ব্যর্থতার জন্য এ প্রক্রিয়া ব্যর্থ হবে না।
ডিজিটাল পদ্ধতিতে স্বল্পমূল্যের স্বল্প লেনদেন সহায়ক হবে। প্রতিদিনের সংবাদ পড়তে মাসিক নিবন্ধন করার পরিবর্তে দৈনিক মাশুল পরিশোধ করা যাবে। এভাবে যেকোনো কিছুর তাত্ক্ষণিক মাশুল প্রদান করা যাবে।
সারা বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাংক কাগজি মুদ্রার পরিবর্তে এ ধরনের লেনদেন শুরু করার বিষয়টি চিন্তাভাবনা করছে। এ প্রক্রিয়ায় আগ্রহী কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোকে একটি আলোচনা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড। আলোচনা অনুষ্ঠানটি চলতি বছরের ১২ জুন অনুষ্ঠিত হবে।