বাংলাদেশ সরকার ট্রেজারি বিল ও ট্রেজারি বিলের বৈশিষ্ট্যসমূহ
ব্যাংকিং নিউজ বাংলাদেশঃ ট্রেজারি বিল এক ধরনের স্বল্পমেয়াদি শর্তহীন সরকারি ঋণপত্র। অন্য কথায় ট্রেজারি বিল হল একটি স্বল্পকালীন (১-৩৬৫ দিন মেয়াদি) মানি মার্কেট প্রোডাক্ট। স্বল্পকালীন বাজেট ঘাটতি মেটানো অথবা অন্যান্য প্রয়োজনে স্বল্পকালীন তহবিল সংগ্রহের উদ্দেশ্যে সরকার ট্রেজারি বিল ইস্যু ও বিক্রয় করে। সরকার এ বিলে মেয়াদান্তে তার ধারককে নিঃশর্তভাবে অভিহিত মূল্য ফেরত প্রদানের জন্য অঙ্গীকার করে। এটি বাংলাদেশ ব্যাংকের নিলামের মাধ্যমে কেনা-বেচা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের যেকোনো তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান এর নিলামে অংশ নিতে পারে।
‘Treasury Bill বা T-Bill’ সম্পর্কে Investopedia তে বলা হয়েছে-
A Treasury bill (T-Bill) is a short-term debt obligation backed by the Treasury Dept. of a country.
অর্থাৎ Treasury Bill (T-Bill) একটি দেশের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট দ্বারা সমর্থিত একটি স্বল্পমেয়াদী ঋণের বাধ্যবাধকতা।
১৯৯৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকার তিন প্রকারের ৯০ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিল ইস্যু ও বিক্রয় করে। এগুলির মধ্যে অধিকাংশ ছিল ৯০ দিন মেয়াদি অ্যাডহক বিল যা সরকারের নগদ অর্থের প্রয়োজন মেটানোর জন্য বাজারে ছাড়া হয়েছিল। ১৯৭২ সালের আগস্ট মাসে চালুকৃত ট্যাপ ভিত্তিতে বিক্রয়কৃত ৩ মাস মেয়াদি বিলগুলি ছিল বাংলাদেশ সরকারের ইস্যুকৃত দ্বিতীয় প্রকারের ট্রেজারি বিল। অর্থনীতিতে সে সময়ে বিদ্যমান অতিরিক্ত তারল্য প্রত্যাহার করার উদ্দেশ্যে ৩ মাস মেয়াদি এ সকল ট্রেজারি বিল চালু করা হয়েছিল। তৃতীয় দফায় ইস্যুকৃত ট্রেজারি বিলগুলিও ছিল ৩ মাস মেয়াদি।
ট্রেজারি বিলের বৈশিষ্ট্য
নিম্নে ট্রেজারি বিলের বৈশিষ্ট্যসমূহ তুলে ধরা হলো-
– স্বল্পমেয়াদী (অনধিক এক বছর) সরকারি সিকিউরিটিজ।
– বর্তমানে আমাদের দেশে ৩ (তিন) ধরণের ট্রেজারি বিল প্রচলিত আছে। এগুলো হলঃ ৯১ দিন ১৮২ দিন ও ৩৬৪ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিল।
– ট্রেজারি বিলের সুদের হার নিলামের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়।
– ট্রেজারি বিল সেকেন্ডারি মার্কেটে ক্রয়-বিক্রয় যোগ্য।
ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন। |
ট্রেজারি বিল ক্রয়ের যোগ্যতা
নিম্নে ট্রেজারি বিল ক্রয়ের যোগ্যতাসমূহ তুলে ধরা হলো-
বাংলাদেশী কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যেমন ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান বীমা কোম্পানি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান এবং ভবিষ্যৎ তহবিল হতে হবে ইত্যাদি রক্ষণাবেক্ষণকারী কর্তৃপক্ষ।
Treasury বিল ক্রয়ের পদ্ধতি
নিম্নে ট্রেজারি বিল ক্রয়ের পদ্ধতি তুলে ধরা হলো-
প্রাইমারি মার্কেটঃ প্রতি সপ্তাহে অনুষ্ঠিত নিলাম হতে প্রাইমারি ডিলারদের মাধ্যমে ক্রয় করা যায়।
সেকেন্ডারি মার্কেটঃ যে কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে যেকোনো সময় ক্রয় করা যায়।
তবে উল্লেখ্য যে, কোন প্রতিষ্ঠানের শাখা পর্যায়ে ট্রেজারি বিল ক্রয়-বিক্রয় করতে পারেনা। শুধুমাত্র প্রধান কার্যালয়ের ট্রেজারি বিভাগ থেকে এটি ক্রয়-বিক্রয় করা যায়। বর্তমান অর্থনীতিতে তারল্যের আধিক্যের কারণে ট্রেজারি বিলের হার খুবই কম। এই হার ৩% থেকে ৬% এর মধ্যে উঠানামা করে।
সূত্রঃ বাংলাদেশ ব্যাংক