এজেন্ট ব্যাংকিং অফিসারদের বেতন ভাতা
আরাফাত হোসাইনঃ এজেন্ট ব্যাংকিং এখন সময়ের আলোচিত একটি বিকল্প ব্যাংকিং ব্যাবস্থা। দিনে দিনে এর পরিধি যেমন বাড়ছে তেমনি ভাবে এই ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানও তৈরি হচ্ছে। বলা হচ্ছে বিগত সাত বছরে প্রায় পঞ্চাশ হাজার কর্মসংস্থান হয়েছে এই খাতে। এদের মধ্যে অল্প কিছু সংখ্যক কর্মকর্তা কর্মচারী সরাসরি ব্যাংক কর্তৃক নিয়োগ প্রাপ্ত আর বাঁকিরা এজেন্ট দ্বারা নিয়োগ প্রাপ্ত। এজেন্ট ব্যাংকিং এর এইসব বিপ্লবী সৈনিকেরা রাত দিন শ্রম ও মেধার বিনিময়ে ব্যাংকিং খাতে এক নিরব বিপ্লব সাধন করে চলেছেন। গ্রামীন অর্থনীতির সাথে শহরের অর্থনীতির এক সেতু বন্ধন তৈরি করছেন।
মূলত এজেন্ট ব্যাংকিং হলো প্রান্তিক জনসাধারণের জন্য এক অনন্য আর্থিক ব্যবস্থাপনা। গ্রামীণ আর্থনীতির চাকা সচল করার লক্ষে ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তির অংশ হিসাবে ২০১৩ সালে এই ব্যবস্থার প্রচলন করা হয়। দীর্ঘ এ সাত বছরে এজেন্ট ব্যাংকিং ব্যাবস্থা এক দিকে যেমন হয়েছে পরিপূর্ণ অন্য দিকে জনপ্রিয়। গ্রামের দরিদ্র কৃষক, জেলে, কামার, কুমার, মুচি, তাঁতি, গৃহিণী সহ ছোট ছোট ব্যবসায়ীরাই এই ব্যাংকিং ব্যাবস্থার গ্রাহক।
সেক্ষেত্রে দেখা যায় শতকরা প্রায় ৮০ ভাগ গ্রাহকই অল্প শিক্ষিত বা নিরক্ষর। আর এই সব গ্রাহককে ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে বুঝানো বা আর্থিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার যে কাজটি এজেন্ট ব্যাংকিং পেশার সাথে জড়িত ব্যক্তিরা করছেন সেটি মোটেও সহজ নয়। অথচ এই পেশার বিপ্লবী সেনারা বিভিন্ন ভাবে অবহেলিত।
শাখায় বসে যে সব অফিসারেরা ব্যাংকিং করেন তাদের সাথে এজেন্ট ব্যাংকিং অফিসারদের পার্থক্য হলো- শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত শাখায় বসে এজেন্ট ব্যাংকিং অফিসারদের কাজ করার সুযোগ কম। এজেন্ট আউটলেটগুলোতে কোট টাই পরা লোকের দেখা খুব একটা পাওয়া যায় না। নিম্ন পেশা শ্রেণীর মানুষ নিয়েই তাদের কাজ করতে হয়। এমনকি তাদেরকে গ্রামে গঞ্জে হাটে বাজারে দৈনিক রুটিন অনুযায়ী ছুটতে হয়। এক আউটলেট থেকে আরেক আউটলেটে যেতে হয় কাজের প্রয়োজনে। রোদ বৃষ্টি শীত কি ঝড় কোন কিছুতেই তাদের এই পথ চলাকে দমিয়ে রাখতে পারে না।
ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন। |
মাসিক বা বাৎসরিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য এক দিকে যেমন গ্রাহকের দ্বারে দ্বারে যেতে হয় তেমনি ভাবে আউটলেটে কর্মরত কর্মকর্তাদের সার্বিক দেখাশুনা, আউটলেটের আর্থিক ব্যবস্থাপনা, কমপ্লায়েঞ্চ পরিপালন, সেবার মান উন্নয়ন, ব্যবসায়ীক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সহ নানামুখী চাপ নিয়ে সারাটাদিন নিরলসভাবে কাজ করতে হয়। সেক্ষেত্রে একজন এজেন্ট ব্যাংকিং অফিসাররের দৈনিক খরচ শাখার কর্মকর্তাদের তুলনায় অনেক বেশি। বলতে গেলে শাখার কর্মকর্তাদের দৈনিক তেমন কোন খরচই হয় না। গ্রাহক আপ্যায়নটা পুরোটায় শাখার খরচের সাথে ধরা হয় এবং সেটার একটা নির্দিষ্ট বাজেট থাকে।
এমনকি তারা শাখার কাজের প্রয়োজনে বাহিরে গেলে সেটার বিল জমা দিয়ে ক্যাশ নিয়ে নেন। কিন্তু এজেন্ট ব্যাংকিং অফিসারদের গ্রাহক আপ্যায়নের জন্য নিজের পকেটেই হাত দিতে হয়। যাতায়াত বিল বাবদ যে সামান্য টাকা দেয়া হয় তা এক সপ্তাহের খরচের পরিমানও হয় না। আমি এখানে বিশেষ কোন ব্যাংকের কথা বলছি না। এই চিত্র প্রায় সব কয়টি ব্যাংকেরই।
কোন কোন ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং কর্মকর্তা কর্মচারীদেরকে সাধারণ কর্মকর্তাদের থেকে আলাদা হিসেবে বিবেচনা করেন। তাদের জন্য কর্মকর্তা সুবিধা পলিসি আলাদা করে রেখেছেন। পদ বা পদবীতেও রেখেছেন ভিন্নতা। তাতে করে সাধারণ কর্মকর্তাদের থেকে দেরিতে পদোন্নতি ও তুলনামূলক কম ইনক্রিমেন্ট পায় তারা। এমনকি তুলনামূলক অনেক কম বেতন দিয়ে লোক নিয়োগ দিচ্ছেন ব্যাংকগুলো। সাধারনের চেয়ে কম সুবিধা প্রদান করছেন ও চুক্তি ভিত্তিক লোক নিয়োগের দিকে ঝুঁকছেন।
অথচ ব্যাপারটি এর বিপরীত হবার কথা ছিল। সাধারনের চেয়ে এজেন্ট ব্যাংকিং কর্মকর্তাদের কম করে হলেও শতকরা ২০/৩০ ভাগ বেশি বেতন দেয়া উচিৎ। যেহেতু এজেন্ট ব্যাংকিং কর্মকর্তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় থাকেন সেক্ষেত্রে তাদের ঝুঁকি ভাতার একটা ব্যাবস্থা থাকা উচিৎ। অথচ অনেক ব্যাংকই এ ব্যাপারটায় উদাসীন।
সময় এসেছে নতুন করে ভাবার। এজেন্ট ব্যাংকিং এখন আর অবহেলার বিষয় নয়। অনেক ব্যাংকই এই বিকল্প ব্যাংকিং ব্যবস্থায় লাভবান হচ্ছে। শাখা ব্যাবস্থার চেয়ে কয়েক গুনে বাড়ছে গ্রাহক সংখ্যা। লো কস্ট বা নো কস্ট আমানত সংগ্রহের ক্ষেত্রে এজেন্ট ব্যাংকিং ব্যাবস্থা অন্যন্য ভূমিকা পালন করছে।
লেখকঃ মোঃ আরাফাত হোসাইন, মধুমতি ব্যাংক লিমিটেড, নওগাঁ শাখা।
আমি ও একজন এজেন্ট সৈনিক, ভাই দিন রাত পরিশ্রম করে পাচ্ছি ৫ হাজার টাকা। অথচ একজন দিন মুজুর পাচ্ছে দৈনিক ৩-৪ শত টাকা, মাসে পাচ্ছে ৯০০০-১০০০০ হাজার টাকা। এই ক্ষেত্রে সরকার এবং ব্যাংকের প্রধান শাখা যদি আমাদের দিকে সুনজরে তাকায় তবে আমরা খুবই উপকৃত হতাম।
ধন্যবাদ স্যার, আমার কথায় কোনো ভুল হলে মাফ করবেন৷
৩,০০,০০০ লাখ টাকা জামানত দিয়ে প্রতি মাসে গড়ে একাই ৫০টা একাউন্ট দিয়ে বেতন পাই ৫ হাজার টাকা, এজেন্ট মালিক ষ্ট্যাফদের ঠকানো ছাড়া আর কিছুই না।আর ভবিষৎ বলতে কাল সকালে এজেন্ট মালিক যদি বলে তোমার আর আসার দরকার নাই তাহলে কেমন হয়? ১ বছর হল এখন নিয়োগ পত্র হাতে পেলাম না।তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে আমার দাবি, এজেন্ট ষ্ট্যাফদের বেতন, বোনাচসের দিকে নজর দেওয়া। স্যার আমার কথায় ভুল হলে আমাকে ক্ষমা করে দিবেন।
এজেন্ট ব্যাংক এ এজেন্ট কতৃক নিয়োগ হওয়া কেমন হবে? আর বেতন বলছে ২৩০০০ এটা কি ঠিক বলেছে? কিছুদিন পর কি এজেন্ট চাইলে চাকরি থেকে বাদ দিতে পারবে? জানাবেন দোয়া করে৷
বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার অনুযায়ী এজেন্ট ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বেতন ভাতা এত হওয়ার কথা না৷
এইটা ঠিক বলছেন না। একজন এজেন্টের একজন সিএসওকে ২৩০০০ টাকা বেতন দিতে অনেক স্টেবলসের দরকার হয়। দেখে নিন এজেন্ট কত টাকা কমিশন পায়।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের Customer service executive পদের চাকরির বেতন কত? এইটার নিয়োগ কে দিয়ে থাকেন? এবং এই পদের সুযোগ-সুবিধা কেমন। জানালে উপকৃত হতাম।
বিস্তারিত জানতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন-
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে “কাস্টমার সার্ভিস এক্সিকিউটিভ- এজেন্ট ব্যাংকিং” পদে নিয়োগ
এজেন্ট যারা হন তাদের কমিশন কেমন?
ব্যাংকের মূল শাখা যদি কোন চিন্তা ভাবনা করে তাহলে সম্ভব। আমরা অনেক কষ্টে আছি। অনেক শ্রম দিতে হয়। সকলকে সুন্দর চিন্তা ভাবনা করার সুযোগ দিন।
এজেন্ট ব্যাংকে যে ভাবে বেতন দেয়, এতে করে বেকারত্ব দূর হবে বলে আমার মনে হয় না।