ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থ প্রেরণ
ব্যাংকিং নিউজ বাংলাদেশঃ ব্যবসার প্রয়োজনে বা ব্যক্তিগত কারণে একস্থান থেকে অন্যস্থানে টাকা স্থানান্তর করতে হয়। তবে নগদ টাকা একস্থান থেকে অন্যস্থানে বহন করা বেশ কষ্টসাধ্য, সময়সাপেক্ষ এবং ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। বড় অংকের টাকা হলে তো ঝুঁকি আরো বেশি। আধুনিককালে বাণিজ্যিক ব্যাংক গ্রাহকদেরকে দেশের অভ্যন্তরে এক স্থান হতে অন্য স্থানে এবং দেশ হতে বিদেশে তহবিল স্থানান্তরের সুযোগ-সুবিধা গ্রদান করে থাকে। সাধারণত ব্যাংক ড্রাফট, পেমেন্ট অর্ডার, মেইল ট্রান্সফার, টিটি ট্রান্সফার, তারযোগে স্থানান্তর ইত্যাদি পদ্ধতির মাধ্যমে ব্যাংক এক স্থান হতে অন্য স্থানে তহবিল স্থানান্তর করে থাকে। নিচে অর্থ প্রেরণের বিভিন্ন মাধ্যমগুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে অথবা তার মাধ্যমে আদিষ্ট ব্যক্তিকে কোনো নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদানের জন্য এক ব্যাংক কর্তৃক অন্য কোনো ব্যাংকের প্রতি বা একই ব্যাংকের কোনো শাখা হতে অন্য কোনো শাখার প্রতি আদেশ প্রদানের মাধ্যমে যে পত্র লিখা হয়, তাকে ব্যাংক ড্রাফট বলে।
প্রদান আদেশও (payment order) ব্যাংক ড্রাফটের মতই। তবে এদের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে এই যে, প্রদান আদেশ কোনো ব্যাংকের একই শাখা কর্তৃক ইস্যু এবং প্রদান করা হয়। গ্রাহকরা সাধারণত সরকারি বিভাগের অর্থ প্রদানের জন্য এইরূপ আদেশপত্র সগ্রহ করে। ব্যাংক এরূপ আদেশ সংগ্রহ করে, কিন্তু এগুলো ১৯৮১ সালের হস্তান্তরযোগ্য দলিল আইনের ৮৫ (A) এবং ১৩ (A) ধারানুযায়ী কভার হয় না। ব্যাংক ড্রাফট যদিও চেক নয়, তবুও উপরিউক্ত আইনের ধারাসমূহ দ্বারা কভার হয়। প্রদান আদেশ হস্তান্তরযোগ্য নহে, এর অর্থ কেবল প্রাপককেই প্রদান করতে হয়। কিন্তু ব্যাংক ড্রাফট হতান্তরযোগ্য। যে স্থানে বা এলাকায় প্রেরক ব্যাংকের কোনো শাখা নাই সে স্থানে যদি অপর কোনো ব্যাংকের শাখা থাকে, তবে প্রেরক ব্যাংক দ্বিতীয় বা অন্য ব্যাংকের নিকট হতে উহার শাখার উপরে আদেশপত্র সংগ্রহ করে নিজ গ্রাহক বা অর্থ প্রেরণকারীকে প্রদান করে।
ব্যাংক আবার মেইল ট্রান্সফার বা তারযোগে এক স্থান হতে অন্য স্থানে অর্থ প্রেরণ করে। এই পদ্ধতিতে অবশ্য প্রথম পদ্ধতির তুলনায় বেশি তাড়াতাড়ি অর্থ স্থানান্তর করা সম্ভব হয়। এক স্থান হতে অন্য স্থানে অর্থ প্রেরণের ব্যাপারে ব্যাংক ভ্রমণকারীর চেকও ব্যবহার করে। তবে ব্যাংক ড্রাফটের সাথে এর কিছুটা পার্থক্য আছে। ব্যাংক কর্তৃক যে শাখার উপর আদেশপত্রটি দেয়া হয় কেবল সেই শাখার নিকট হতেই টাকা পাওয়া যায়। কিন্তু ভ্রমণকারীর চেকের অর্থ যে ব্যাংকের নামে চেক দেয়া হয়, সে ব্যাংকের যে কোনো শাখা হতেই পাওয়া সম্ভব।
ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন। |
গ্রাহকের কষ্ট এবং ঝুঁকি এড়ানোর জন্য আধুনিক ব্যাংকিং ব্যবস্থায় অর্থ স্থানান্তরের অত্যন্ত কার্যকর পদ্ধতি রয়েছে। ব্যাংক নির্দিষ্ট চার্জের বিনিময়ে অতি দ্রুত ও নিরাপদে অনলাইন ব্যাংকিং এর মাধ্যমে গ্রাহকের টাকা গ্রহণ করে গ্রাহকের ইচ্ছানুযায়ী তা অন্য শাখায় নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে প্রেরণ করে থাকে।
টেলিগ্রাফিক ট্রান্সফার (Telegraphic Transfer, TT) অর্থ স্থানান্তর করতে গিয়ে ব্যাংকের অনেক গ্রাহক চান অর্থকে খুব দ্রুত স্থানান্তর করতে। এ জন্য ডিডি ক্রয় না করে তারা টিটি ক্রয় করতে চান। এটি অর্থকে দ্রুততার সাথে অন্যত্র স্থানান্তরের একটি অন্যতম মাধ্যম। এ ক্ষেত্রে ব্যাংক গ্রাহকের কাছ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন, টেলিফোন বা টেলেক্স চার্জ গ্রহণ পূর্বক অর্থ গ্রহণ করে এবং তা টেলিফোন বা টেলেন্সের মাধ্যমে অপর শাখায় পাঠানোর ব্যবস্থা করে।