ব্যাংকিং সেক্টর ধ্বংসের মিশনে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার
দেশের ব্যাংকিং ধ্বংসের ষড়যন্ত্র চলছে। এই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দিচ্ছে প্রথম আলো এবং ডেইলী স্টার। দেশের ব্যাংকিং খাত নিয়ে গুজব এবং মিথ্যা অপপ্রচার করছে মূলধারার প্রভাবশালী এই দুই গণমাধ্যম। থামছেই না। দেশের অর্থনীতি এবং ব্যাংকিং সেক্টরকে ধ্বংস করে দেয়ার এক ভয়ংকর মিশনে নেমেছে দেশের এই দুটি পত্রিকা।
গত বছর নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময় থেকেই গুজব ছড়ানো হয় ব্যাংকে টাকা নেই। এর প্রধান উদ্দেশ্য ছিলো আমানতকারীরা যেন ব্যাংক থেকে তারা তাদের টাকা তুলে নেয়। ফলে ব্যাংকিং খাতে সংকট সৃষ্টি হয়। হঠাৎ এমন গুজবে অস্থির হয়ে উঠে দেশের ব্যাংকিং খাত। ২৪ নভেম্বর- ইসলামী ব্যাংকে ‘ভয়ংকর নভেম্বর’, এই শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে প্রথম আলো। যেখানে কোন রকম সঠিক ও গ্রহণযোগ্য তথ্য উপাত্ত ছাড়াই ব্যাংকিং খাত নিয়ে গুজব ছড়ানো হয়েছে এবং এর মূল উদ্দেশ্যই ছিলো ব্যাংকিং খাত নিয়ে গ্রাহকের মনে সন্দেহ বাড়িয়ে দেয়া।
এটিই শেষ নয়। এরপর ১৩ ডিসেম্বর- ‘ব্যাংকে টাকা রেখে ঠকছেন মানুষ’, ২৭ ডিসেম্বর- ‘তারল্য ঘাটতিতে ইসলামী ব্যাংকসহ ৫ ব্যাংক’, ২৯ ডিসেম্বর- ‘৮% সুদে আমানত নিতে চায় ইসলামী ব্যাংক’, সর্বশেষ ৪ জানুয়ারি- ‘কেলেঙ্কারি কি বন্ধ হবে ব্যাংক খাতে’ এমন শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করে প্রথম আলো। পাশাপাশি ডেইলি স্টার ২ জানুয়ারি- ‘Islami Bank takes emergency Tk 8,000 cr from BB (বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জরুরি ভিত্তিতে ৮ হাজার কোটি টাকা নিলো ইসলামী ব্যাংক)’, ৬ ডিসেম্বর- The rise and fall of Islami Bank (ইসলামী ব্যাংকের উত্থান পতন), এমন শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
তাদের সাথে যোগ দেয় একদল সুশীল। ব্যাংকে যেয়ে টাকা পায়নি বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাসও দেয় তারা এবং তারা মূলত টার্গেট করে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশকে। অথচ অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এসব খবরই ভিত্তিহীন বানোয়াট। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জরুরী ভিত্তিতে ঋণ নেয়ার একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। সব ব্যাংকই জরুরী প্রয়োজন মেটাতে এ ধরনের ঋণ নেয়। অথচ এটিকেই খবর বানানো হয়েছে।
ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন। |
মাসের পর মাস প্রতিনিয়ত এ ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার তাদের নিজেদের জন্ম দেয়া এ সকল গুজবকে একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ায় পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। মানুষ যেন ব্যাংকে টাকা না রাখে এবং ব্যাংকগুলো যেন গ্রাহকদের টাকা তোলার চাপে বিপর্যস্ত হয় এটাই যে তাদের মিশন। তাদের এই বিরামহীন প্রচারণার কারণে ব্যাংকিং সেক্টরে এক অনাকাঙ্ক্ষিত চাপ সৃষ্টি হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, এই ষড়যন্ত্রের সাথে এখন পুরোদমে যুক্ত হয়েছে প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টার। যেকোন একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে যদি টাকা তুলে নেয়ার হিড়িক শুরু হয়, তাহলে সেই প্রতিষ্ঠান সংকটে পরবেই। এখন তেমন একটি সংকট সৃষ্টির চেষ্টা চলছে।
ব্যাংকের শত শত কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতি, ব্যাংকে তারল্য সংকট, ব্যাংকে টাকা নেই বা থাকবে না- এমন গুজবে আতঙ্কে ব্যাংক থেকে ৫০ হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন গ্রাহকরা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতের মোট আমানত ১৪ লাখ ৮২ হাজার ৮২৯ কোটি টাকা, যা আগের মাসের চেয়ে ১১ হাজার ১৫৬ কোটি টাকা বেশি। বর্তমানে মোট তারল্যের পরিমাণ ৪ লাখ ১৫ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকা। অতিরিক্ত তারল্যের পরিমাণ ১ লাখ ৬৯ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা। ব্যাংক খাতে তারল্যের সংকট নেই।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, এ ধরনের গুজবকে সবাই মিলে প্রতিহত করতে হবে। তা না হলে চক্রান্তকারীরা দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেবে।
ব্যাংকিং সেক্টর হলো অর্থনীতির মেরুদন্ড। যদি ব্যাংকিং সেক্টরে অনাস্থা তৈরি হয় তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ব্যবসা বাণিজ্য। সংকটে পড়বে দেশের অর্থনীতি। দেশকে সংকটে ফেলতেই এই অপচেষ্টা বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদ এবং ব্যবসায়ীরা।
সোর্সঃ বাংলা ইনসাইডার