ব্যাংকিং উপশাখার মাধ্যমে নতুন সম্ভাবনা
সবার মধ্যে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দিতে উপশাখা চালু করেছে ২১টি ব্যাংক। আগে যা ব্যাংকিং বুথ নামে পরিচিত ছিল, তা–ই এখন উপশাখা। এতে কম খরচে ব্যাংকিং সেবা ছড়িয়ে পড়ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। তৈরি হচ্ছে নতুন গ্রাহক, বাড়ছে আমানত। ফলে ব্যাংকিং সেবা দেওয়ার নতুন সম্ভাবনা হয়ে উঠছে উপশাখা। এই উপশাখা আর্থিক অন্তর্ভুক্তির অগ্রগতিকে আরও একধাপ এগিয়ে নেবে বলে মনে করছেন ব্যাংকার ও বিশ্লেষকেরা।
এর আগে ব্যাংকিং সেবার বাইরে থাকা জনগোষ্ঠীর আর্থিক অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে মোবাইল ব্যাংকিং, এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা চালু হয়, যা ইতিমধ্যে বড় আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। উপশাখাগুলো পরিচালিত হচ্ছে সরাসরি নিকটবর্তী ব্যাংক শাখার অধীনে। উপশাখায় বৈদেশিক বাণিজ্যিক কার্যক্রম ছাড়া আমানত, ঋণসহ সব ধরনের ব্যাংকিং সেবা মিলছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাব মতে, সারা দেশে ইতিমধ্যে ২১ ব্যাংকের ৩৫৫টি উপশাখা চালু হয়েছে। সবচেয়ে বেশি উপশাখা খুলেছে নতুন প্রজন্মের এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক। ব্যাংকটি সারা দেশে ১০৫টি ভূমি নিবন্ধন কার্যালয়ে উপশাখা স্থাপন করেছে। এর বাইরে আরও ২৫টি শাখা খুলেছে ব্যাংকটি। যাতে সাড়ে ৭ হাজার গ্রাহক তৈরি হয়েছে। জমা পড়েছে ১৮৩ কোটি টাকার আমানত। ঋণ বিতরণ হয়েছে ২১ কোটি টাকা।
এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্বে) মো. মুখতার হোসেন বলেন, ‘উপশাখাগুলোতে ভালো সাড়া মিলছে। আমরা চলতি বছরের জুনের মধ্যে উপশাখা ৩০০–তে উন্নীত করব। একসময় দেশের সব ভূমি নিবন্ধন কার্যালয়ে আমাদের উপশাখা থাকবে।’
ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন। |
ব্যাংকিং উপশাখা কী?
ব্যাংকিং উপশাখা হলো ব্যাংকের শাখার আদলে ছোট পরিসরের ব্যবসাকেন্দ্র। কম খরচে আর্থিক সেবার জন্য একটি শাখার অধীনে কাজ করে উপশাখা। উপশাখায় সর্বোচ্চ ১০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করেন। তবে কোনো কোনো উপশাখা দুজন কর্মকর্তাও চালাচ্ছেন। কম লোকবল ও সাজসজ্জার কারণে খরচও কম। এর ফলে ব্যাংকগুলো উপশাখা স্থাপনে দিনে দিনে আগ্রহী হয়ে উঠছে। এসব উপশাখা থেকে বৈদেশিক বাণিজ্যিক কার্যক্রম ছাড়া সব ধরনের সেবা দেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের পর সবচেয়ে বেশি উপশাখা খুলেছে আইএফআইসি ব্যাংক। ব্যাংকটি ৭০টি উপশাখা খুলেছে। ইসলামী ব্যাংক ২৪টি, যমুনা ব্যাংক ২২, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ২১, সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক ১৯, ন্যাশনাল ব্যাংক ১৪, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক ১২ ও সাউথইস্ট ব্যাংক ১১টি উপশাখা খুলেছে।
এর বাইরে ওয়ান, অগ্রণী, ফার্স্ট সিকিউরিটি, প্রিমিয়ার, ব্যাংক এশিয়া, পূবালী, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, মিডল্যান্ড, ঢাকা, ট্রাস্ট, শাহ্জালাল ইসলামী ও ইস্টার্ণ ব্যাংকও উপশাখা খুলেছে।
ব্যাংকিং উপশাখা বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের সবাইকে ব্যাংকিং সেবায় আনতে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর একটি হলো উপশাখা। যার মাধ্যমে একেবারে গ্রামে গিয়ে সব ধরনের ব্যাংকিং সেবা দেওয়া যাচ্ছে। সবার ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত হলে দেশ এগিয়ে যাবে। যার সুফল পাবে সবাই।’
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ব্যাংকিং বুথ স্থাপন সংক্রান্ত নীতিমালা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে বলা হয়, ব্যাংকিং বুথের আয়তন হবে এক হাজার বর্গফুটের মধ্যে। এরপরই ব্যাংকগুলো বুথ স্থাপন জোরদার করে। আর গত ডিসেম্বর ব্যাংকিং বুথের নাম পাল্টে উপশাখা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।