ইসলামী অর্থনীতিসুদ ও মুনাফা

ইসলামে সুদ হারাম হওয়ার বিধান

“আল্লাহ সুদকে হারাম করেছেন এবং ব্যবসাকে হালাল করেছেন।” সুদ একটি অত্যাচারী প্রথা। এর মাধ্যমে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। এ প্রথার কারণে সম্পদ কতিপয় মানুষের হাতে পুঞ্জীভূত হয়। শ্রেণী বৈষম্য ব্যাপক আকার ধারণ করে। পবিত্র কুরআনুল কারীমে আল্লাহ তা‘আলা একমাত্র সুদখোরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা করেন।

আল্লাহ বলেন, يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَذَرُوا مَا بَقِيَ مِنَ الرِّبَا إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِينَ – فَإِنْ لَمْ تَفْعَلُوا فَأْذَنُوا بِحَرْبٍ مِنَ اللَّهِ وَرَسُولِهِ ‘’হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর আর সুদের যা কিছু অবশিষ্ট আছে তা সব পরিত্যাগ কর যদি তোমরা ঈমানদার হয়ে থাক। আর যদি তোমরা তা না কর তাহলে তোমরা আল্লাহ ও তার রাসূলের পক্ষ হতে যুদ্ধের ঘোষণা শোনো’।’ (বাক্বারাহ ২/২৭৮-২৭৯)

অত্যাচারী যালিম সুদখোর ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে রাসূল (সা:) বদ দো‘আ করেছেন। জাবের (রাঃ) বলেন, لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم آكِلَ الرِّبَا وَمُوكِلَهُ وَكَاتِبَهُ وَشَاهِدَيْهِ وَقَالَ هُمْ سَوَاءٌ ‘‘রাসূল (সা:) সুদ গ্রহীতা, সুদ দাতা, সুদের লেখক আর সুদের দুজন সাক্ষীকে অভিশাপ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে, তারা সকলে সমান অপরাধী’’। (মুসলিম হা/৪১৭৭; মিশকাত হা/২৮০৭)

সুদের কঠিন ভয়াবহতা সম্পর্কে রাসূল (সা:) বলেছেন, اَلرِّبَا ثَلَاثَةٌ وَسَبْعُونَ بَابًا أَيْسَرُهَا مِثْلُ أَنْ يَنْكِحَ اَلرَّجُلُ أُمَّهُ، وَإِنَّ أَرْبَى اَلرِّبَا عِرْضُ اَلرَّجُلِ اَلْمُسْلِمِ ‘‘সুদের ৭৩টি দরজা বা স্তর রয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে সহজ স্তরটি হ’ল আপন মায়ের সাথে ভ্যবিচার করার সমতুল্য। আর সবচেয়ে কঠিন স্তরটি হ’ল কোন মুসলিম ব্যক্তিকে অপমান-অপদস্থ করা’’ (মুস্তাদরাক হাকিম হা/২২৫৯; বুলূগুল মারাম হা/৮৩১; ছহীহুল জামে‘ হা/৩৫৩৯। হাদীছ ছহীহ)

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

অন্যত্র রাসূল (সা:) বলেন, دِرْهَمُ رِباً يَأْكُلُهُ الرَّجُلُ وَهُوَ يَعْلَمُ أَشَدُّ مِنْ سِتَّةٍ وَثَلاَثِينَ زَنْيَةً ‘’কেউ যদি জেনে শুনে এক টাকা সুদ খায় তাহলে ৩৬ বার যেনা করলে যে পাপ হবে তার চাইতে মারাত্মক পাপ হবে’’। (মুসনাদে আহমাদ হা/২২০০৭; দারাকুত্বনী হা/২৮৮০; মিশকাত হা/২৮২৫; ছহীহুল জামে‘ হা/৩৩৭৫ সনদ ছহীহ)

আর সুদের সবচেয়ে ছোট ক্ষতি হল মালের বরকত উঠে যায়। যদিও বাহ্যিকভাবে সুদের মাল যতই বেশী দেখা যাক না কেন। এ প্রসঙ্গে রাসূল (সা:) বলেন, الرِّبَا وَإِنْ كَثُرَ فَإِنَّ عَاقِبَتَهُ تَصِيرُ إِلَى قُلٍّ ‘‘বাহ্যিকভাবে সুদ পরিমাণে যতই বেশী দেখা যাক না কেন প্রকৃতপক্ষে তা কম হয়ে যায়’’। (মুসনাদে আহমাদ হা/৩৭৫৪; হাকেম হা/২২৬২; মিশকাত হা/২৮২৭ ছহীহুল জামে‘ হা/৩৫৪২ হাদীছ ছহীহ)

অতএব বলা যায় যে, সুদ ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবার জন্য হারাম। সকলকেই তা পরিহার করতে হবে। তাহলেই বৈষম্যহীন শোষণমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা লাভ করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button