ব্যাংক নোট

বাংলাদেশী টাকার সচিত্র ইতিহাস

টাকা (মুদ্রা প্রতীক: ৳; ব্যাংক কোড: BDT) হল বাংলাদেশের মুদ্রা। বাংলাদেশের জন্ম ১৯৭১ সালে হলেও শুরুটা ছিল ১৯৪৭ সালে পূর্ব পাকিস্তান হিসেবে। তখন দেশে পাকিস্তান রুপির প্রচলন ছিল, যেটিকে কাগজে–কলমে টাকাও বলা হতো। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে বাঙালি জাতীয়তাবাদীরা বেসরকারিভাবে পাকিস্তানি টাকার একপাশে ‘বাংলা দেশ’ এবং অপর পাশে ‘Bangla Desh’ লেখা রাবার স্ট্যাম্প ব্যবহার করতেন।

১৯৭১ সালের ৮ জুন পাকিস্তান সরকার এই রাবার স্ট্যাম্প যুক্ত টাকাকে অবৈধ এবং মূল্যহীন ঘোষণা করে। জানা যায় এরপরেও ১৯৭৩ সালের ৩রা মার্চ পর্যন্ত এই রাবার স্ট্যাম্পযুক্ত পাকিস্তানি টাকা চলেছিল সারা দেশে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পরে নতুন মুদ্রা প্রচলনের ঘোষণা দেয়া হয়। তাতে সময় লেগেছিল তিন মাসের মতো। তাই ঐ সময়ে পাকিস্তানি রুপিই ব্যবহৃত হতো। ১৯৭২ সালের ৪ মার্চ বাংলাদেশি কারেন্সিকে ‘টাকা’ হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়।

নিজস্ব কাগুজে মুদ্রার আবির্ভাব
বাংলাদেশে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতা লাভের পর কিছু সময় পাকিস্তানী ১, ৫ এবং ১০ রূপী ব্যবহৃত হয় যা পরের দিকে সরকার বাতিল করে দেয়। পরবর্তীতে ১৯৭২ সালের ৪ মার্চ প্রথম নোট চালু হয়। প্রথমে ১, ৫, ১০ এবং ১০০ টাকার নোট ছাপা হয়। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত যতগুলো নোট বাজারে ছাড়া হয়েছে তার সচিত্র ইতিহাস নিম্নে তুলে ধরা হলো-

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

এক টাকা নোট
বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর কিছু দিন পাকিস্তানী ১ রূপী প্রচলিত ছিল। বর্তমানে অপ্রচলিত।

চিত্রঃ ১৯৭১ সালের চালু থাকা পাকিস্তানী ১ রূপী

❏ পরবর্তীতে ১৯৭২ সালের ৪ মার্চ প্রথম বাংলাদেশী ১ টাকার নোট ইস্যু করা হয়। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম এক টাকার কাগজের মুদ্রা। এতে দেশের মানচিত্রের মধ্যে বিন্দুর মাধ্যমে দেখানো হয়েছে রাজধানী ঢাকার অবস্থান।

চিত্রঃ ১৯৭২ সালের ৪ মার্চ বাংলাদেশী প্রথম ইস্যুকৃত ১ টাকার নোট

❏ ১৯৭৩ সালের ২ মার্চ প্রথম বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীক সম্বলিত ১ টাকার নোট ইস্যু হয়। যার সামনে মুঠো ভর্তি ধানের শীষ ও পিছনে শাপলা প্রতীক রয়েছে। এর রং ছিল কমলা ও নীল। এই নোটটি ডিসেম্বর ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত চালু ছিল, বর্তমানে অপ্রচলিত।

চিত্রঃ ১৯৭৩ সালের ২ মার্চ প্রথম ইস্যুকৃত জাতীয় প্রতীক সম্বলিত ১ টাকার নোট

❏ এরপর ১৯৭৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর পুনরায় আরেকটি ১ টাকার নোট ইস্যু হয়। যার সামনে মহিলার ধান ভানার চিত্র ও পিছনে মুঠো ভর্তি ধানের শীষ ও জাতীয় ফুল শাপলার ছবি রয়েছে। এর রং ছিল কমলা ও নীল। এই নোটটি ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত চালু ছিল, বর্তমানে অপ্রচলিত।

চিত্রঃ ১৯৭৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর ইস্যুকৃত ১ টাকার নোট

❏ পরবর্তীতে ১৯৭৯ সালের ৩ সেপ্টেম্বর রয়েল বেঙ্গল টাইগার এর জলছাপ সম্বলিত ১ টাকার নোট ইস্যু হয়। এর সামনে জাতীয় ফুল শাপলা ও পিছনে তিনটি হরিণের ছবি রয়েছে। এরপর আর কোন ১ টাকার কাগুজে নোট ইস্যু হয়নি। এর রং বেগুনি ও কমলা। এই নোটটি বর্তমানে স্বল্প প্রচলিত।

চিত্রঃ ১৯৭৯ সালের ৩ সেপ্টেম্বর রয়েল বেঙ্গল টাইগার এর জলছাপ সম্বলিত ইস্যুকৃত ১ টাকার নোট

দুই টাকা নোট
❏ ১৯৮৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর দ্বিতীয় সরকারী নোট ২ টাকা ইস্যু হয়। ২০১২ সালে রাশিয়ার একটি অনলাইন এন্টারটেইনমেন্ট আউটলেটে পোলের মাধ্যমে বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর নোট হিসেবে স্বীকৃতি পায় ২ টাকার এই নোটটি। এই নোটের সামনে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও পিছনে জাতীয় পাখি দোয়েলের ছবি রয়েছে। এর রং ছিল কমলা ও সবুজ।

চিত্রঃ ১৯৮৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর ইস্যুকৃত ২ টাকার নোট

❏ ২০১১ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি ২ টাকার নোট ইস্যু করে। এই নোটে সামনে বামপাশে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুখমন্ডলের প্রতিকৃতি এবং ডানপাশে ঐ প্রতিকৃতির জলছাপ এবং মাঝখানে জাতীয় স্মৃতিসৌধের প্রতিকৃতির জলছাপ যুক্ত করা হয়। এছাড়া পিছনে জাতীয় স্মৃতিসৌধের প্রতিকৃতি রয়েছে।

চিত্রঃ ২০১১ সালের ৯ আগস্ট ইস্যুকৃত বঙ্গবন্ধুর ছবিযুক্ত ২ টাকার নোট

পাঁচ টাকা নোট
❏ ১৯৭২ সালের ৪ মার্চ প্রথম ৫ টাকার নোট ইস্যু করা হয়। যার সামনে বাম পাশে বাংলাদেশের মানচিত্রের মধ্যে বিন্দুর মাধ্যমে দেখানো হয়েছে রাজধানী ঢাকার অবস্থান ও ডান পাশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ছবি রয়েছে। বর্তমানে এই নোটটি অপ্রচলিত।

চিত্রঃ ১৯৭২ সালের ৪ মার্চ ইস্যুকৃত ৫ টাকার নোট

❏ পরবর্তীতে ১৯৭৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ছবি সম্বলিত আরো একটি নোট ইস্যু করা হয়। যার পিছনে জাতীয় ফুল শাপলার ছবি রয়েছে। বর্তমানে এই নোটটি অপ্রচলিত।

চিত্রঃ ১৯৭৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত ৫ টাকার নোট

❏ পরবর্তীতে ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ছবি সম্বলিত আরো একটি নোট ইস্যু করা হয়। যার পিছনে নৌকার ছবি রয়েছে। বর্তমানে এই নোটটি অপ্রচলিত।

চিত্রঃ ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত ৫ টাকার নোট

❏ ১৯৭৬ সালের ১১ অক্টোবর তারা মসজিদের ছবি সম্বলিত এই নোট ইস্যু করা হয়। যার পিছনে বাংলাদেশের কৃষির ছবি রয়েছে।

চিত্রঃ ১৯৭৬ সালের ১১ অক্টোবর তারা মসজিদের ছবি সম্বলিত ৫ টাকার নোট

❏ ১৯৭৮ সালের ২ মে তারা মসজিদের পরিবর্তে কুসুম বাগ মসজিদের মেহরাবের ছবি সম্বলিত নোট ইস্যু করা হয়। যার পিছনে বাংলাদেশের কৃষির ছবি রয়েছে।

চিত্রঃ ১৯৭৮ সালের ২ মে কুসুম বাগ মসজিদের মেহরাবের ছবি সম্বলিত ৫ টাকার নোট

❏ ২০০৬ সালের ৮ অক্টোবর, ১৯৭৮ সালের নোটটি পুনরায় ইস্যু করা হয়। পার্থক্য হল নোটটিতে ৩ মিমি চওড়া নিরাপত্তা সূতা ব্যবহার করা হয় এবং কালারে পরিবর্তন আনা হয়।

চিত্রঃ ২০০৬ সালের ৮ অক্টোবর ইস্যুকৃত ৫ টাকার নোট

❏ ২০১১ সালের ৯ আগস্ট নোটটি ইস্যু করা হয়। যার সামনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ছবি এবং পিছনে কুসুম্বা মসজিদের চিত্র যোগ করা হয়েছে।

চিত্রঃ ২০১১ সালের ৯ আগস্ট ইস্যুকৃত ৫ টাকা নোট

দশ টাকা নোট
❏ ১৯৭২ সালের ৪ মার্চ প্রথম ১০ টাকার নোট ইস্যু করা হয়। যার সামনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ছবি ও বাংলাদেশের মানচিত্রের মধ্যে বিন্দুর মাধ্যমে দেখানো হয়েছে রাজধানী ঢাকার অবস্থান এবং পিছনে নদীমার্তৃক এলাকার চিত্র যোগ করা হয়েছে। বর্তমানে এই নোটটি অপ্রচলিত।

চিত্রঃ ১৯৭২ সালের ৪ মার্চ প্রথম ১০ টাকার নোট

❏ পরবর্তীতে ১৯৭২ সালের ২ জুন আরো একটি নোট ইস্যু করা হয়। যাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ছবি ও বাংলাদেশের মানচিত্র রয়েছে। বর্তমানে এই নোটটি অপ্রচলিত।

চিত্রঃ ১৯৭২ সালের ২ জুন বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত ১০ টাকার নোট

❏ ১৯৭৩ সালের ১৫ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ছবি সম্বলিত আরো একটি নোট ইস্যু করা হয়। যার পিছনে কিষানের ধান কাটার ছবি রয়েছে। বর্তমানে এই নোটটি অপ্রচলিত।

চিত্রঃ ১৯৭৩ সালের ১৫ অক্টোবর বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত ১০ টাকার নোট

❏ ১৯৭৬ সালের ১১ অক্টোবর তারা মসজিদের ছবি সম্বলিত নোট ইস্যু করা হয়। যার পিছনে বাংলাদেশের কৃষি তথা কিষানের ধান কাটার ছবি রয়েছে। বর্তমানে এই নোটটি অপ্রচলিত।

চিত্রঃ ১৯৭৬ সালের ১১ অক্টোবর তারা মসজিদের ছবি সম্বলিত ১০ টাকার নোট

❏ পরবর্তীতে ১৯৭৮ সালের ৩ আগস্ট আতিয়া জামে মসজিদের ছবি সম্বলিত একটি নোট ইস্যু করা হয়। যার পিছনে কিষানের ধান কাটার ছবি রয়েছে। বর্তমানে এই নোটটি অপ্রচলিত।

চিত্রঃ ১৯৭৮ সালের ৩ আগস্ট আতিয়া জামে মসজিদের ছবি সম্বলিত ১০ টাকা নোট

❏ পরবর্তীতে ১৯৮২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর আতিয়া জামে মসজিদের ছবি সম্বলিত ভিন্ন একটি নোট ইস্যু করা হয়। এর পিছনে রয়েছে কর্ণফুলি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্পিলওয়ে। বর্তমানে এই নোটটি স্বল্প প্রচলিত।

চিত্রঃ ১৯৮২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর আতিয়া জামে মসজিদের ছবি সম্বলিত ১০ টাকার নোট

❏ ১৯৯৭ সালের ১১ ডিসেম্বর একটি নোট ইস্যু করা হয়। যাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ছবি ও ঢাকার অন্যতম প্রধান মোগল স্থাপত্য লালবাগ কেল্লার অভ্যন্তরে কেল্লা মসজিদ বা শাহী মসজিদ নামে পরিচিত মসজিদের ছবি রয়েছে।

চিত্রঃ ১৯৯৭ সালের ১১ ডিসেম্বর লালবাগ কেল্লা মসজিদের ছবি সম্বলিত ১০ টাকার নোট

❏ ২০০০ সালের ১৪ ডিসেম্বর অস্ট্রেলিয়া থেকে ১০ টাকার পলিমার নোট তৈরী করে আনা হয়। যাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ও ঢাকার বাইতুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ এবং জাতীয় সংসদ ভবনের ছবি রয়েছে। যা বাংলাদেশের জন্য ব্যবহারের অনুপযোগী হিসেবে পরিচিতি পায়।

চিত্রঃ ২০০০ সালের ১৪ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত ১০ টাকার পলিমার নোট

❏ ২০০২ সালের ৭ই জানুয়ারী ১০ টাকার আরেকটি নোট ইস্যু করা হয়। যাতে ঢাকার বাইতুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ এবং জাতীয় সংসদ ভবনের ছবি রয়েছে।

চিত্রঃ ২০০২ সালের ৭ জানুয়ারী ১০ টাকার নোট

❏ সর্বশেষ ২০০৬ সালের ২১ সেপ্টেম্বর নিরাপত্তা উপাদান বাড়িয়ে পুনরায় আগের নোটটি ইস্যু করা হয়। যাতে ঢাকার বাইতুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ এবং জাতীয় সংসদ ভবনের ছবি রয়েছে।

চিত্রঃ ২০০৬ সালের ২১ সেপ্টেম্বর নিরাপত্তা বর্ধিত ১০ টাকার নোট

বিশ টাকা নোট
❏ ১৯৭৯ সালের ২০ আগস্ট প্রথম ২০ টাকার নোট ইস্যু করা হয়। যাতে সামনে ছোট সোনা মসজিদ ও পিছনে ৪ জন কিষানের পাট ধোয়ার ছবি রয়েছে।

চিত্রঃ ১৯৭৯ সালের ২০ আগস্ট ২০ টাকার নোট

❏ পরবর্তীতে হলোগ্রাফিক নিরাপত্তা সংযুক্ত করে ২০০২ সালের ১৩ জুলাই পুনরায় আগের নোটটি ইস্যু করা হয়। যাতে সামনে ছোট সোনা মসজিদ ও পিছনে ৪ জন কিষানের পাট ধোয়ার ছবি রয়েছে।

চিত্রঃ ২০০২ সালের ১৩ জুলাই ২০ টাকার নোট

❏ ২০১২ সালে এই নোটটি আবার ইস্যু করা হয়। যাতে সামনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ছবি ও পিছনে ষাট গম্বুজ মসজিদের ছবি রয়েছে।

চিত্রঃ ২০১২ সালের ৭ মার্চ ইস্যুকৃত ২০ টাকা নোট

পঞ্চাশ টাকা নোট
❏ ১৯৭৬ সালের ১ মার্চ প্রথম ৫০ টাকার নোট ইস্যু করা হয়। যাতে সামনে তারা মসজিদের ছবি ও পিছনে চা বাগানের ছবি রয়েছে।

চিত্রঃ ১৯৭৬ সালের ১ মার্চ তারা মসজিদের ছবি সম্বলিত প্রথম ৫০ টাকার নোট

❏ ১৯৭৯ সালে তারা মসজিদের পরিবর্তে ঢাকার জাফরাবাদের ঐতিহাসিক সাত গুম্বুজ মসজিদের ছবি সম্বলিত নোট ইস্যু করা হয়। এর পিছনে চা বাগানের ছবি রয়েছে।

চিত্রঃ ১৯৭৯ সালে ষাট গুম্বুজ মসজিদের ছবি সম্বলিত ৫০ টাকার নোট

❏ ১৯৮৭ সালের ২৪ আগস্ট প্রথমবারের মত জাতীয় স্মৃতিসৌধ সাভারের ছবি সম্বলিত নোট ইস্যু করা হয়। এর পিছনে রয়েছে স্থপতি লুই আই কানের নকশায় রাজধানী ঢাকায় জাতীয় সংসদ ভবনের ছবি।

চিত্রঃ ১৯৮৭ সালের ২৪ আগস্ট স্মৃতিসৌধের ছবি সম্বলিত ৫০ টাকার নোট

❏ এরপর ১৯৯৯ সালের ২২ আগস্ট এই নোট ইস্যু করা হয়। যাতে সামনে জাতীয় সংসদ ভবনের ছবি ও পিছনে বাঘা মসজিদের ছবি রয়েছে।

চিত্রঃ ১৯৯৯ সালের ২২ আগস্ট ৫০ টাকার নোট

❏ এরপর ২০০৩ সালের ১২ মে ঈষৎ রং পরিবর্তন করে এই নোট ইস্যু করা হয়। যাতে সামনে জাতীয় সংসদ ভবনের ছবি ও পিছনে বাঘা মসজিদের ছবি রয়েছে।

চিত্রঃ ২০০৩ সালের ১২ মে ৫০ টাকার নোট

❏ ৭ মার্চ, ২০১২ তে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি সম্বলিত যে নতুন ৫০ টাকার নোটটি বাজারে আনা হয়, সেইদিনই আবার বাজার থেকে তুলে নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এটি ছিল একটি বানান ভুলের মাশুল। নোটটির পিছনের পিঠে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের নামের বানান ভুল ছাপা হয়েছিল (আবেদিন স্থলে আবেদীন)। ২.২৫ কোটি সংখ্যক নোট ছাপা হয়েছিল এই ভুল নিয়ে। পরবর্তীতে বাজার থেকে তুলে নিয়ে সংশোধনীর মাধ্যমে পুনরায় বাজারে আসে এই নোট। পূর্বে ছিল- ‘মই দেয়া’ জলরং চিত্র, শিল্পী জয়নুল আবেদীন।

চিত্রঃ ২০১২ সালের ৭ মার্চ ছাপানো ৫০ টাকার ভুল নোট

❏ এরপর ২০১২ সালের ৭ মার্চ ইস্যুকৃত ৫০ টাকার ব্যাংক নোটেও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি এবং জলছাপ ও মাঝখানে জাতীয় স্মৃতিসৌধের প্রতিকৃতির জলছাপ যুক্ত করা হয়। এর ৫০ টাকার নোটের পেছনে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের আঁকা বিখ্যাত পেইন্টিং ‘মই দেয়া’ যুক্ত করা হয়।

চিত্রঃ ২০১২ সালের ৭ মার্চ ইস্যুকৃত ৫০ টাকার নোট

একশ টাকা নোট
❏ ১৯৭২ সালের ৪ মার্চ প্রথম ১০০ টাকার নোট ইস্যু করা হয়। যাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ছবি ও বাংলাদেশের মানচিত্রের মধ্যে বিন্দুর মাধ্যমে দেখানো হয়েছে রাজধানী ঢাকার অবস্থান এবং নদী এবং নৌকার ছবি রয়েছে।

চিত্রঃ ১৯৭২ সালের ৪ মার্চ প্রথম বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত ১০০ টাকার নোট

❏ ১৯৭২ সালের ১ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ছবি সম্বলিত একটি নোট ইস্যু করা হয়। যার পিছনে নদী এবং নৌকার ছবি রয়েছে।

চিত্রঃ ১৯৭২ সালের ১ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত ১০০ টাকার নোট

❏ ১৯৭৬ সালের ১লা মার্চ তারা মসজিদের ছবি সম্বলিত একটি নোট ইস্যু করা হয়। যার পিছনে নদী এবং নৌকার ছবি রয়েছে।

চিত্রঃ ১৯৭৬ সালের ১ মার্চ তারা মসজিদের ছবি সম্বলিত ১০০ টাকার নোট

❏ ১৯৭৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর সম্পূর্ণ নতুন ডিজাইনের ১০০ টাকার নোট ইস্যু করা হয়। যাতে তারা মসজিদের ছবি রয়েছে। আর পিছনে রয়েছে লালবাগ কেল্লা নামে পরিচিত ঢাকার অন্যতম প্রধান মোগল স্থাপত্যটি।

চিত্রঃ ১৯৭৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর তারা মসজিদের ছবি সম্বলিত নতুন ডিজাইনে ১০০ টাকার নোট

❏ ২০০১ সালের ১৫ মার্চ optical variable ink (ovi) ব্যবহার করে নোট ইস্যু করা হয়। যাতে ষাট গম্বুজ মসজিদ ও বঙ্গবন্ধু সেতুর ছবি রয়েছে।

চিত্রঃ ২০০১ সালের ১৫ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত ১০০ টাকার নোট

❏ ২০০২ সালের ৫ জুন জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও ষাট গম্বুজ মসজিদের ছবি সম্বলিত নোট ইস্যু করা হয়। যার পিছনে বঙ্গবন্ধু সেতুর ছবি রয়েছে।

চিত্রঃ ২০০২ সালের ৫ জুন স্মৃতিসৌধের ছবি সম্বলিত ১০০ টাকার নোট

❏ ২০০৫ সালের ২৮ জুলাই পূর্বের ১০০ টাকার “100” শব্দটিকে সোনালী রঙে পরিবর্তন করে এই নোট ইস্যু করা হয়।

২০০৫ সালের ২৮ জুলাই স্মৃতিসৌধের ছবি সম্বলিত ১০০ টাকার নোট

❏ ২০১১ সালের ৯ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ছবি সম্বলিত ১০০ টাকার নোট ইস্যু করা হয়। এই নোটে সামনে বামপাশে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুখমন্ডলের প্রতিকৃতি এবং ডানপাশে ঐ প্রতিকৃতির জলছাপ এবং মাঝখানে জাতীয় স্মৃতিসৌধের প্রতিকৃতির জলছাপ যুক্ত করা হয়।

চিত্রঃ ২০১১ সালের ৯ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত ১০০ টাকার নোট

পাঁচশত টাকা নোট
❏ ১৯৭৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর প্রথম ৫০০ টাকার নোট ইস্যু করা হয়। যার সামনে রয়েছে ঢাকার তারা মসজিদ ও পিছনে রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের মূল ভবনটি।

চিত্রঃ ১৯৭৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর প্রথম ৫০০ টাকার নোট

❏ পরবর্তীতে ডিজাইনে ব্যপক পরিবর্তন এনে ১৯৯৮ সালের ২ জুলাই আরেকটি নোট ইস্যু করা হয়। যার সামনে রয়েছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও পিছনে রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের মূল ভবনটি।

চিত্রঃ ১৯৯৮ সালের ২ জুলাই ৫০০ টাকার নোট

❏ ২০০০ সালের ১০ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ছবি সম্বলিত নোট ইস্যু করা হয়। যার সামনে রয়েছে ঢাকার তারা মসজিদ ও পিছনে রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের মূল ভবনটি।

২০০০ সালের ১০ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত ৫০০ টাকার নোট

❏ ২০০২ সালের ১৭ জুলাই জাতীয় স্মৃতিসৌধের ছবি সম্বলিত নোট ইস্যু করা হয়। যার সামনে রয়েছে ঢাকার তারা মসজিদ ও পিছনে রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের মূল ভবনটি।

চিত্রঃ ২০০২ সালের ১৭ জুলাই স্মৃতিসৌধের ছবি সম্বলিত ৫০০ টাকার নোট

❏ ২০০৪ সালের ২৪ অক্টোবর পূর্বের নোটের “৫০০” এর পরিবর্তে “পাঁচশত টাকা” শব্দে optical variable ink (ovi) ব্যবহার করে নোট ইস্যু করা হয়। যার সামনে রয়েছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও ঢাকার তারা মসজিদ এবং পিছনে রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের মূল ভবনটি।

চিত্রঃ ২০০৪ সালের ২৪ অক্টোবর স্মৃতিসৌধের ছবি সম্বলিত ৫০০ টাকার নোট

❏ ২০১১ সালের ৯ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ছবি সম্বলিত ৫০০ টাকার নোট ইস্যু করা হয়। এই নোটে সামনে বামপাশে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুখমন্ডলের প্রতিকৃতি এবং ডানপাশে ঐ প্রতিকৃতির জলছাপ এবং মাঝখানে জাতীয় স্মৃতিসৌধের প্রতিকৃতির জলছাপ যুক্ত করা হয়। এর পিছনে বাংলাদেশের কৃষি তথা নদীর পাশে চাষের দৃশ্য রয়েছে।

চিত্রঃ ২০১১ সালের ৯ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত ৫০০ টাকার নোট

এক হাজার টাকা নোট
❏ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মানের নোট। নোটটি ২০০৮ সালের ২৭ অক্টোবর ইস্যু হয়। এর সামনের অংশে শহীদ মিনার এবং পেছনের অংশে ১৯০৪ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা ঢাকার নয়নাভিরাম কার্জন হলের ছবি রয়েছে। এতে মোট ১১টি নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে।

চিত্রঃ ২০০৮ সালের ২৭ অক্টোবর প্রথম ইস্যুকৃত ১০০০ টাকার নোট

❏ ২০১১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ছবি সম্বলিত ১০০০ টাকার নোট ইস্যু করা হয়। এই নোটে সামনে বামপাশে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুখমন্ডলের প্রতিকৃতি এবং ডানপাশে ঐ প্রতিকৃতির জলছাপ এবং মাঝখানে জাতীয় স্মৃতিসৌধের প্রতিকৃতির জলছাপ যুক্ত করা হয়।

চিত্রঃ ২০১১ সালে বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত ইস্যুকৃত ১০০০ টাকার নোট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button