ব্যাংকিং ডিপ্লোমা

ব্যাংকিং ডিপ্লোমা বাধ্যতামূলক করার উদ্দেশ্যে যদি

রবিউল বাশারঃ ব্যাংকিং ডিপ্লোমা বাধ্যতামূলক করার উদ্দেশ্যে যদি- ব্যাংকিং ডিপ্লোমা বাধ্যতামূলক করার উদ্দেশ্যে যদি মহৎ হয়, দাগ থেকে যদি ভালো কিছু আসে আমরা তাকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত। তবে আমরা যারা এই অতিগুরুত্বপুর্ণ সেক্টরে পেশাগত দায়িত্ব পালন করছি, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে নিরবে ভূমিকা পালন করছি তাদের মতামত, অভিজ্ঞতা ও সময়ের বাস্তবতাকে বিবেচনায় নেয়া জরুরি বলে মনে করি। আমলাতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া যাবে কিন্তু সুদূর প্রসারী ফলাফল হিতে বিপরীত হতে পারে।

কে প্রমোশন পাবে আর কে পাবে না এটা সংশ্লিষ্ট ব্যাংক নিজস্ব বিবেচনায় নির্ধারন করবে। আমরা জানি, আপনারা অনেক কিছু করতে পারেন ও পারবেন কিন্তু আল্টিমেট রেজাল্ট বা আউটপুট কি পাচ্ছি তা একটু রিভিউ করুন।

আরও দেখুন:
◾ ব্যাংকারদের পদোন্নতিতে নতুন শর্ত ও ব্যাংকিং ডিপ্লোমার আবশ্যকতা

প্রকৃত অর্থে ব্যাংক খাতের উন্নয়ন করতে হলে-
১. সব ব্যাংকের জন্য একটি অভিন্ন চাকুরী বিধিমালা প্রনয়ণ করা দরকার।
২. শিক্ষক নিবন্ধন এর মতো একটা প্রি রিক্রুটমেন্ট পরীক্ষার ব্যবস্থা করে যোগ্য প্রার্থী তালিকা তৈরি করা হোক।
৩. ব্যাংকে কর্মরতদের যোগ্য করে গড়ে তোলার জন্য একটি মান সম্মত ট্রেনিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করে জব স্টেশন থেকে রিলিজ করে শিক্ষা ছুটিতে রেখে কমপক্ষে তিন মাস মেয়াদী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হোক।
৪. সকল ব্যাংকের কর্মকর্তাদের পদ বিন্যাসে অভিন্নতা/ সমতা বিধান করা হোক।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

বর্তমান অবস্থায় ডিপ্লোমা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে-
১. ব্যাংকিং ডিপ্লোমার সংশ্লিষ্ট সাবজেক্ট এর কোনটি স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে থাকলে পরীক্ষা থেকে অব্যাহতি দান করা উচিৎ। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এ ধরনের নিয়ম অনুসৃত হচ্ছে।
২. মনে রাখা দরকার- ব্যাংকিং জব শুধুমাত্র ডে টু ডে অফিস হাজিরা দেয়া নয়। শাখার বিভিন্ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এখন একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছে। অফিস আওয়ার শেষ করে দৌড়াতে হয় ডিপোজিট সংগ্রহ করতে, বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য ভালো গ্রাহক খুজতে। বিদ্যমান পোর্টফলিও ভালো রাখার জন্যও ভিজিট করতে হয়। নিজের ফ্যামিলি, আত্নীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও সোশ্যাল সার্কেলতো বাদই দিলাম।
৩. আর একটা কথা বলতে হয়- একাডেমিক পড়াশোনার জন্য বয়স একটা ফ্যাক্টর হয়ে যায়। চাকুরী, ফ্যামিলি নানা ধরনের প্যাড়া সামলে রচনা মুখস্ত করার কসরত করতে হয়। যাদের চাকুরিকাল ২০-২৫ বছর চলছে তাদেরকেও এখন গরুর রচনা মুখস্ত করে পরীক্ষায় যোগ্যতার পরিচয় দিতে হবে। পাবলিক ইউনিভার্সিটির স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রির কি মুল্য থাকলো?
৪. চাকুরিজীবীদের জন্য মান্ধাতার আমলের মতো এক টানা তিন ঘন্টা করে দিনে মোট ছয় ঘন্টা ব্যাপী রচনামুলক প্রশ্নের উত্তর লিখতে বাধ্য করা মোটেই মেনে নেয়া যায়না। পরীক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তন হওয়া সময়ের একান্ত দাবি। দিনে একটা পরীক্ষা রাখা হোক।
৫. অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহন পদ্ধতি চালু করা হোক এবং এমসিকিউ/ ট্রু-ফলস পদ্ধতি চালু করা উচিৎ।
৬. শুধুমাত্র বিভাগীয় শহরগুলোতে পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপন করায় বহু ব্যাংকারকে মফস্বল শহর থেকে দীর্ঘপথ রাত্রি ভ্রমণ করে শ্রান্ত-ক্লান্ত হয়ে এসে ছয় ঘন্টা ব্যাপী পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। এ অবস্থার বিকল্প ভেবে দেখা দরকার।

লেখকঃ রবিউল বাশার, ব্যাংকার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button