ব্যাংকঋণের উচ্চ সুদহারই ব্যবসায়ের একমাত্র প্রতিবন্ধক নয়-১
মোশারফ হোসেনঃ যেকোনো ব্যবসা সেটা ছোট একক মালিকানাধীন টং দোকান, কিংবা লাখ লাখ শেয়ারহোল্ডারের লিমিটেড কোম্পানি, যা-ই হোক না কেন, তা চালিয়ে নিতে বিভিন্ন উপায়-উপকরণের প্রয়োজন পড়ে। যেমন: অর্থ, জনশক্তি, ভবন, যন্ত্রপাতি, মালামাল, ইউটিলিটি (পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস, টেলিফোন, ইন্টারনেট), যোগাযোগ, প্রযুক্তি, বাজার প্রভৃতি। প্রতিটি উপায়-উপকরণের জন্যই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে খরচ গুনতে হয়, যেমন: জনশক্তির জন্য বেতন বা মজুরি, অর্থ বা পুঁজির জন্য সুদ। এ খরচগুলোই হচ্ছে ‘কস্ট অব ডুয়িং বিজনেস’ বা ‘ব্যবসা করার খরচ’।
মুনাফামুখী যেকোনো ব্যবসার মূল লক্ষ্যই হচ্ছে মুনাফা করা এবং প্রতি বছরই মুনাফায় উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জন করা। মুনাফা বা মুনাফার প্রবৃদ্ধি উভয়ের জন্যই খরচ বড় নিয়ামক ও বিবেচ্য বিষয়। খরচ বিবেচনায় মুনাফার এ প্রবৃদ্ধি কয়েকভাবেই করা যায়: আয় বাড়িয়ে কিন্তু খরচ স্থির রেখে, খরচ কমিয়ে কিন্তু আয় স্থির রেখে, আয় বাড়িয়ে কিন্তু খরচ কমিয়ে, আয় ও খরচ উভয় বাড়িয়ে (খরচের চেয়ে আয় বেশি বাড়িয়ে), আয় ও খরচ উভয় কমিয়ে (আয়ের চেয়ে খরচ বেশি কমিয়ে)।
আরও দেখুন:
◾ ব্যাংকঋণের উচ্চ সুদহারই ব্যবসায়ের একমাত্র প্রতিবন্ধক নয়-২
তবে তৃতীয় কৌশলটি, অর্থাৎ খরচ কমিয়ে আয় বাড়িয়ে অধিক পরিমাণে মুনাফা করার প্রবণতাই বেশি প্রচলিত। তাই আমরা ধরে নিচ্ছি, আয় বাড়–ক বা স্থির থাকুক, ব্যবসার বিভিন্ন উপায়-উপকরণ আহরণের খরচ যত কমবে, ব্যবসার ব্যয় (কস্ট অব ডুয়িং বিজনেস) তত কমবে; অর্থাৎ ব্যবসার মুনাফা তত বাড়বে। ব্যবসার এ মুনাফায় আরও অনেক উপাদান জড়িত থাকলেও আমার আলোচনা কেবল ব্যবসার ব্যাংকঋণের খরচ নিয়ে।
ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন। |
ব্যবসার জন্য প্রাথমিক ও সবচেয়ে প্রয়োজনীয় উপকরণ হচ্ছে পুঁজি বা অর্থ। অর্থ না থাকলে অন্যান্য উপকরণ সংস্থানও অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। আর এ পুঁজি বা অর্থের বড় উৎস হচ্ছে ব্যাংকঋণ। তবে ব্যাংকঋণ স্বয়ংক্রিয় বা দাতব্য কিছু নয়, যা চাইলেই পাওয়া যায় বা না চাইলেও পাওয়া যায়। একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি ও রীতিনীতি অনুসরণের মাধ্যমেই ব্যাংকঋণ পেতে হয় এবং ঋণের বিপরীতে মূল্য বা খরচ হিসেবে গুনতে হয় ‘সুদ’।
সুদের হার কম- অর্থ হচ্ছে ব্যাংকঋণের খরচ কম, তথা ব্যবসার খরচ কম। তবে বর্তমানে ব্যাংকঋণের সুদকে কেবল ব্যবসার খরচ হিসেবেই দেখা হচ্ছে না, বরং ব্যাংকের উচ্চ সুদহারকে সহজে ব্যবসা করার প্রতিবন্ধক এবং দেশের জগদ্দল পাথররূপী খেলাপি ঋণের অন্যতম কারণ হিসেবে দায়ী করা হচ্ছে। এজন্য সম্প্রতি সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার এবং সুদের চক্রবৃদ্ধি তুলে দিয়ে সরল সুদ পদ্ধতির কথাও ভাবা হচ্ছে।
ব্যবসায়ীদের পক্ষ নিয়ে যদি বলি তাহলে বলতে হয়, ভালো উদ্যোগ। তবে দৃষ্টি শুধু ব্যাংকঋণের সুদের হারে নিবদ্ধ না করে ঋণের সার্বিক খরচে (কস্ট অব লোন) নিবদ্ধ করাটাই সমীচীন বলে আমি মনে করছি। কারণ সুদই ব্যাংকঋণের একমাত্র খরচ নয়। সুদের বাইরেও আরও একাধিক খরচের বোঝা বইতে হয় ঋণগ্রাহকদের। কিন্তু এসব সুদবহির্ভূত খরচ নিয়ে কোনো কথা হচ্ছে না কোথাও। কথা হচ্ছে শুধু সুদ নিয়েই।
ব্যাংক তার ঋণের বিপরীতে যে সুদ আয় করে, তার বৈধতা-অবৈধতা নিয়েও কারও কোনো প্রশ্ন নেই। প্রশ্ন থাকার কোনো অবকাশও নেই, কারণ ব্যাংকের সুদের হার ঋণচুক্তির একটি উপযুক্ত শর্ত। প্রশ্ন উঠছে সুদের উচ্চ হার নিয়ে। ব্যাংকের ডাবল ডিজিটের উচ্চ সুদহার কমিয়ে সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনতে হবে, এটাই ব্যবসায়ী মহলের দাবি।
সাধারণ পাঠকদের জ্ঞাতার্থে সুদ আদায় পদ্ধতি নিয়ে একটু বলি। ঋণের সুদ দুইভাবে হিসাবায়ন হয়Ñসরল ও চক্রবৃদ্ধি। সরল সুদে শুধু মূল টাকারই সুদ হিসাব হয় এবং বছরান্তে একবার সুদ আরোপ করা হয়। চক্রবৃদ্ধি সুদে মূল টাকার পাশাপাশি সুদের ওপরও সুদ ধার্য হয়, যদি না আরোপিত সুদ পরিশোধ করা হয়। বছরে একাধিকবার (যেমন ১২ বার/ চারবার/ দুবার) সুদ আরোপ করা হয়। সুদ যখন চক্রবৃদ্ধি হয় তখন কার্যকর সুদহার (ইফেক্টিভ ইন্টারেস্ট রেট) কোটেড সুদহারের (নমিনাল ইন্টারেস্ট রেট) চেয়ে আরও বেশি হয়।
সুদের চক্রবৃদ্ধি এবং স্বল্প মেয়াদে আরোপ ও আদায়ের কারণে ঋণসীমা ব্যবহারের সময়ও কিছুটা কমে যায় ঋণগ্রহীতার। তাই সুদের হার এবং তার চক্রবৃদ্ধি সময়কাল উভয়ই যৌক্তিক হওয়া প্রয়োজন। বর্তমান নিয়মমতে, সিএমএসএমই খাতের ঋণের সুদ তিন মাস পরপর চক্রবৃদ্ধি হয়। ক্রেডিট কার্ডে মাসিক চক্রবৃদ্ধি হয়। কর্মচারীদের হাউজ বিল্ডিং ঋণ ও দারিদ্র্যমুক্তি ঋণে (দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য ন্যাশনাল ব্যাংকের একটি ঋণপণ্য) সুদের কোনো চক্রবৃদ্ধি হয় না এবং বছরান্তে সুদ আরোপ করা হয়।
সুদের চক্রবৃদ্ধির সমালোচনা থাকলেও এর কিছু যৌক্তিকতা আছে। বিলম্বিত ও অনিয়মিত ঋণ পরিশোধকে নিরুৎসাহিত করতে ব্যাংক সুদের চক্রবৃদ্ধির পাশাপাশি জরিমানা সুদ এবং লেট পেমেন্ট চার্জও আরোপ করে থাকে। তাই সুদের চক্রবৃদ্ধি ঋণগ্রহীতাদের যথাসময়ে ঋণের সুদ পরিশোধে তাগাদা দেয়। সুদের চক্রবৃদ্ধি সেসব ঋণগ্রহীতাদের জন্যই অসুখের বিষয়, যারা নিয়মিত বা যথাসময়ে ঋণের কিস্তি বা সুদ পরিশোধে অনিচ্ছুক। খেলাপিদোষে দুষ্ট এই ব্যাংক খাতে সুদের চক্রবৃদ্ধি তুলে দিলে অনেকে ঋণের সুদ পরিশোধ করতেই ভুলে যাবে।
সিসি হাইপো ঋণ গ্রাহকরা নির্দিষ্ট মেয়াদকালে টাকা জমা ও উত্তোলনের স্বাধীনতা ভোগ করে। সুদের চক্রবৃদ্ধি যদি না থাকে তাহলে এসব ঋণের সুদ হিসাবায়নে দীর্ঘসূত্রতার তৈরি হবে। ফলে যেসব ব্যবসার টাইড-আপ পিরিয়ড কম, সেসব ব্যবসায় প্রত্যেক টাইড-আপ পিরিয়ডে তাদের ঋণের প্রকৃত সুদ খরচ প্রতিফলিত না হওয়ার কারণে ব্যবসার স্বল্পকালীন প্রকৃত খরচ বের করাটা দুরূহ হয়ে পড়বে। এতে পণ্যমূল্য নির্ধারণ কষ্টসাধ্য হবে। ফ্ল্যাট রেটে কিংবা অনুমান করে সুদ হিসাব করে পণ্যমূল্য নির্ধারণ করার কারণে এসব ব্যবসার সাধারণ ক্রেতারা ঠকবেন।
ব্যবসায়ীদের দাবি মেনে ধরে নিচ্ছি, ব্যাংকঋণে সুদের চক্রবৃদ্ধি তুলে দেওয়া হবে; অর্থাৎ সরল সুদহার চালু হবে এবং সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে না নামলেও বর্তমানের চেয়ে আরও কমবে। তাহলেই কি আমাদের ঋণগ্রহীতারা বেঁচে যাবেন? এরপর কি আর কোনো ঋণ খেলাপি হবে না? যদি ঋণের সুদহারই একমাত্র প্রতিবন্ধক হতো তাহলে হয়তো তা-ই হতো। কিন্তু ব্যাংকঋণের উচ্চ সুদহারই ব্যবসার একমাত্র প্রতিবন্ধক নয়। ঋণ প্রক্রিয়ায় আরও একাধিক উপাদান রয়েছে, যা ঋণ মঞ্জুরি, বিতরণ ও আদায় প্রক্রিয়ায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। আমাদের দেশে ঋণ আদায়ে যেমন বর্তমান আইন কার্যকারিতা দেখাতে পারে না, তেমনি ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রেও ডকুমেন্টেশন যজ্ঞ ও খরচের দীর্ঘ ফর্দ প্রতিষ্ঠিত করে রেখেছে।
সুদ অতিরিক্ত অন্যান্য খরচ বাবদ আরও প্রায় দুই-তিন শতাংশ খরচের বোঝা চাপে ঋণ গ্রহীতাদের ওপর। আর ঋণটি যদি প্রথমবারের মতো হয় এবং বন্ধকি জামানতের বিপরীতে হয়, তাহলে গ্রাহকের চড়কগাছ অবস্থা হয়। সম্প্রতি ঋণ মঞ্জুর করার পর প্রাথমিক ডকুমেন্টেশন সম্পাদন করার পর মর্টগেজ করার ঠিক আগ মুহূর্তে মর্টগেজ করতে এবং ঋণ উত্তোলন করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন আমার পরিচিত এক ঋণগ্রহীতা। কারণটা ‘কস্ট অব লোন’ই ছিল, তবে সেটা সুদের হার ছিল না। অন্য কারণে তিনি ঋণটি উত্তোলন করেননি। পরবর্তী আলোচনায় সেই অন্য কারণগুলোই খোঁজার চেষ্টা করব। দুই লাখ টাকার পরিচিত আরেকজন সিসি (হাইপো) ঋণগ্রহীতার সুদবহির্ভূত বিভিন্ন খাতের খরচের একটি তালিকা তৈরি করে আসুন দেখি কতটা ঋণবান্ধব পরিবেশ পাচ্ছে আমাদের ব্যবসায়ীরা।
যেকোনো ব্যবসায়িক ঋণে ব্যাংকের প্রথম শর্তই হচ্ছে ব্যবসার নামে ট্রেড লাইসেন্স এবং ব্যাংক হিসাব থাকতে হবে। তাই শুরুতেই ট্রেড লাইসেন্স ফি ৬১৮ টাকা এবং হিসাব খুলতে প্রাথমিক জমাবাবদ গ্রাহকের গেল আরও দুই হাজার টাকা। বন্ধকি জমির বায়া দলিল ও খতিয়ানের নকল উত্তোলন বাবদ সাড়ে চার হাজার টাকা; কলমি নকশা (স্কেচ ম্যাপ) ৫০০ টাকা; নামজারি বাবদ পাঁচ হাজার টাকা; নির্দায়ী সনদ বাবদ দুই হাজার ৫০০ টাকা; আইনজীবীর মতামত/ ভেটিং ফি দুই হাজার টাকা; সার্ভেয়রের ভ্যালুয়েশন ফি তিন হাজার টাকা; ঋণ মঞ্জুরির পর বন্ধকি ও পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দলিলের স্ট্যাম্প মূল্য ও কম্পিউটার কম্পোজ ফি দুই হাজার ৯২০ টাকা; বন্ধকি ও পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দলিল প্রস্তুত বাবদ আইনজীবীর ফি দুই হাজার ৫০০ টাকা, রেজিস্ট্রেশনকালীন সরকারি স্ট্যাম্প শুল্ক এক হাজার ৫০০ টাকা (দলিলে ব্যবহৃত স্ট্যাম্প মূল্য বাদে), রেজিস্ট্রেশন ফি ৮০০ টাকা, সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে নগদে প্রদেয় অন্যান্য ফি ও বকশিশ সাড়ে তিন হাজার টাকা; দলিল লেখক সমিতির ফি তিন হাজার টাকা; বন্ধকি ও পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দলিলের নকল উত্তোলন বাবদ তিন হাজার টাকা; বিমা প্রিমিয়াম এক হাজার ৮৭১ টাকা; চার্জ ডকুমেন্টের রেভিনিউ ও অ্যাডেসিভ স্ট্যাম্প ফি এক হাজার ৩০০ টাকা; বিভিন্ন অঙ্গীকারের জন্য ক্রয়কৃত নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প মূল্য ৭২০ টাকা; বন্ধকি জমির সাইনবোর্ড ৫০০ টাকা; স্টক ও বন্ধকি জমির ছবি বাবদ ৩০০ টাকা।
অর্থাৎ সুদ ছাড়াই খরচ ৪২ হাজার ২৯ টাকা, যা ঋণের ২১ শতাংশের সমান! ঋণের সুদ যদি ১৫ শতাংশ হয়, তবে ঋণের খরচ দাঁড়ায় ৩৬ শতাংশ! এই ঋণটি যদি এক লাখ টাকা হয়, তাহলে এই খরচ দাঁড়াবে ৫৭ শতাংশের কাছাকাছি। ভাবা যায়? কী সাংঘাতিক! অথচ সুদবহির্ভূত ৪২ হাজার ২৯ টাকার মধ্যে ব্যাংকের একটি টাকারও কোনো ভাগ নেই, সবই সরকারি ফি, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, আইনজীবী ও অন্যান্য পক্ষসংশ্লিষ্ট খরচ। ঋণের অঙ্ক পাঁচ লাখ টাকার অধিক হলেই আরও যোগ হবে আয়কর সনদ বাবদ কমপক্ষে পাঁচ হাজার টাকা (মিনিমাম কর তিন হাজার টাকা এবং আয়কর আইনজীবীর ফি দুই হাজার টাকা)। ঋণ আরও বড় হলে খাতভিত্তিক এসব খরচ বাড়ার পাশাপাশি আরও যোগ হয় অডিটেড ফিন্যান্সিয়ালস ফি, রেটিং ফি প্রভৃতি।
এছাড়া ট্রেড বা প্রফেশনসংক্রান্ত বিভিন্ন রেগুলেটরি কাগজপত্র ও লাইসেন্স উত্তোলন বাবদ গুনতে হয় আরও কয়েক হাজার টাকা, যা কখনও কখনও ছাড়িয়ে যায় লাখ টাকাও। আবার ঋণের সীমা বাড়লে আগের ঋণসীমা (লিমিট) বাতিল করে রিডেম্পশন ও পাওয়ার প্রত্যাহার করে রিভোকেশন দলিল সম্পাদন করতে এবং একই সঙ্গে পুনরায় বন্ধকি ও পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দলিল রেজিস্ট্রেশন করতে খরচ গুনতে হয় কয়েক হাজার টাকা। এই খরচগুলো প্রকৃত খরচের চেয়ে তিন-চার গুণ বেশি গুনতে হয় গ্রাহককে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে গ্রাহকরা এসব খরচের দোষও ব্যাংকের ওপরই চাপায়।
কিন্তু গ্রাহকের ব্যাংকঋণের এসব খরচের দায় কেবল ব্যাংকের একার নয়। ব্যাংক চাইলেই এই খরচগুলো থেকে গ্রাহককে বাঁচাতে পারে না, কারণ এই খরচগুলোর নিয়ন্ত্রণ ব্যাংকের হাতে নেই। একমাত্র সরকার আন্তরিক হলে এবং উদ্যোগী হয়ে আইন পাস করে এসব খরচ বাতিল করলে বা কমালেই গ্রাহকরা এসব খরচ থেকে রেহাই পেতে পারে। (চলবে)
লেখকঃ মোশারফ হোসেন, শাখা ব্যবস্থাপক, ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড, পাকুন্দিয়া শাখা, কিশোরগঞ্জ। লেখক একজন স্বনামধন্য ব্যাংকার, কলামিস্ট ও ফ্রিল্যান্স লেখক।