দেশ বিধ্বংসী খেলাপি ঋণ ও জাতির প্রত্যাশা
ব্যাংকিং নিউজ বাংলাদেশঃ ১৯৭২ সালের গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) ঋণ খেলাপিদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। সে সময় এ নিয়ম যতটা না প্রয়োজনীয় ছিল, এখন তার চেয়ে অনেক বেশি জরুরি। এ কারণে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২-এর অনেক কিছু সংশোধন করা হলেও সংশ্লিষ্ট ধারা কোনো সরকার বাতিল করেনি।
কিন্তু ঋণ খেলাপিরা নানা কারসাজি করে আইনটি পুরোপুরি অকেজো করতে বিভিন্নভাবে বাধা সৃষ্টি করছে। খেলাপি ঋণের সমস্যাটি বেশ পুরনো এবং পূর্বাপর সব সরকার একে অন্যের ওপর দায় চাপিয়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করলেও ঋণ খেলাপিদের কাছে প্রাপ্য অর্থ উদ্ধারের কার্যকর উদ্যোগ দেখা যায়নি।
দেশের ব্যাংকিং সেক্টরে প্রতিনিয়ত বাড়ছে খেলাপি ঋণের হার। বিশ্বের অন্যান্য দেশে ব্যাংকিং সেক্টরে ঋণ বিতরণের হার বাড়লেও কমছে খেলাপি ঋণ। কিন্তু আমাদের দেশে এ খাতে ঋণের হার সামান্য বাড়লেও খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে কয়েক গুণ হারে। বাংলাদেশের খেলাপি ঋণের হারের এ উল্লম্ফন বিশাল উদ্বেগের কারণ!
আরো উদ্বেগের বিষয়, যাদের দায়িত্ব খেলাপি ঋণ আদায়ে আইন করা, তাদেরই দেখা যায় খেলাপি ঋণের তালিকায়। এসব ঋণগ্রহীতার অনেকে রাজনৈতিকভাবে অনেক প্রভাবশালী অথবা প্রভাবশালী কারো সহায়তায় ঋণ পেয়েছেন, যে কারণে তারা ঋণ ফেরত না দেয়ার সুযোগ নিয়েছেন!
ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন। |
এজন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে, খেলাপি ঋণ বিষয়ে আলাদা করে তাদের রাজনৈতিক অঙ্গীকার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। আর্থিক খাতের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনার পাশাপাশি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বিষয়ে স্পষ্ট বক্তব্য সংযোজন করতে হবে। যেমন-
১. সকল ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখা।
২. রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে ও চাপে নতুন নতুন ব্যাংকের অনুমোদন না দেয়া।
৩. ব্যাংক ও নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বর্তমানে ২ লাখ ৮১ হাজারেরও বেশি মামলা বিচারাধীন। রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে যে, ক্ষমতায় গেলে তারা এ আর্থিক মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেবে।
৪. খেলাপি ঋণ আদায়ে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেয়ার অঙ্গীকার।
৫. ঋণ-খেলাপিদের সামাজিকভাবে চাপ দেয়া।
৬. ঋণখেলাপিদের নামের তালিকা নিয়মিত পত্রিকায় প্রকাশ করতে হবে।
৭. খেলাপী গ্রাহকের গাড়ি কেনা, বিমানের টিকিট কেনা, এবং বাড়ী, ভূমি ও ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে ক্লিন সিআইবি রিপোর্ট বাধ্যতামূলক করতে আইন প্রনয়ন করা ইত্যাদি।
Courtesy: Matiur Rahman Farhadi