ব্যাংকিং পেশায় কর্পোরেট সংস্কৃতি
সার্বিক বিবেচনায় ব্যাংকিং পেশা একটি চমৎকার পেশা। এ পেশায় দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখার পাশাপাশি নিজের জীবনযাত্রার মান, সামাজিক মর্যাদা ও আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়। এমনকি এ পেশায় নিজের দক্ষতা ও যোগ্যতার পরিমাপ করা যায়। এসব কারণে ব্যাংকিং ক্যারিয়ার এখন অনেক মেধাবীর স্বপ্ন। আর এ স্বপ্ন বুননে আপনাকে দিতে হবে মেধা ও মননশীলতার পরিচয়।
✓ নিজের অপারগতা ঢাকতে অফিসের দক্ষ ও যোগ্য সহকর্মীর নেগেটিভ সমালোচনা।
✓ “আমিই ভালো আর সবাই খারাপ”-এটাই সবার সামনে প্রচার করতে থাকা।
✓ টেবিলে কাগজপত্র এলোমেলো করে রেখে বসের সামনে ব্যস্ততা প্রদর্শন করা।
✓ নিজের অক্ষমতা ঢাকার জন্য কাজ বাদ দিয়ে বসের অনুকম্পা লাভের আশায় সারাক্ষণ অবাস্তব প্রশংসা করা।
✓ পরবর্তী উর্ধ্বতনকে পাশ কাটিয়ে তার পরবর্তী উর্ধ্বতনকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে অনুকম্পা লাভের আশায় বিষিয়ে তোলা।
✓ সারাদিন কাজ না করে অফিস ছুটির শেষ একঘন্টা আগে সেইরকম ব্যস্ত হয়ে পড়া।
✓ নিজেকে প্রতিষ্ঠানের জন্য অপরিহার্য মনে করা এবং প্রতিষ্ঠানের মালিকের চেয়েও নিজেকে প্রতিষ্ঠানের দরদী ভাবতে থাকা।
✓ অন্য সহকর্মীর পেশাগত ত্রুটি পেতে ব্যর্থ হয়ে ব্যক্তিগত বিষয় সামনে নিয়ে এসে অন্যের কাছে হেয় প্রতিপন্ন করা।
✓ অফিসের কাজে বিশেষ মনোযোগ নেই। কিন্তু অফিসিয়াল মিটিংগুলোয় সামনের সারিতে বসে কর্তা ব্যক্তিদের কথায় সমর্থন জুগিয়ে বা প্রশংসা করে তাদের চোখে পড়ার চেষ্টা করা।
এমন সহকর্মী দেখেছেন নিশ্চয়ই? আর এই ধরনের ব্যক্তিদেরকে ‘আত্ম-প্রচারকারী’ বলে উল্লেখ করেছে যুক্তরাজ্যের একটি গবেষণা। শুধু তাই নয়, অনেকক্ষেত্রেই দেখা যায়, যারা প্রকৃতই নিবিষ্ট চিত্তে কাজ করে যান তেমন কর্মীদের চেয়ে কিছু ক্ষেত্রে আত্ম-প্রচারকারীরা এগিয়ে থাকেন।
ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন। |
কিন্তু যুক্তরাজ্যের সাম্প্রতিক এই গবেষণা বলছে, এসব ব্যক্তিরা দিন শেষে ‘টিম-ওয়ার্ক’ বা ‘দলগত কাজে’ আদতে কোনো উপকারেই আসে না। তাই এই আত্ম-প্রচারকারী ব্যক্তিদেরকে চিহ্নিত করা হচ্ছে মূলত, ‘কাজের চেয়ে আওয়াজ বেশি’ দেওয়া ব্যক্তি হিসেবে।
কিন্তু নিবিড়ভাবে মনোযোগ দিলে বোঝা যায়, এসব ব্যক্তি আসলে ‘সেল্ফ-প্রমোটার’ বা ‘আত্ম-প্রচারকারী’ মাত্র। আসলে যত বুলি দেন তত কাজ করেন না।বা উল্টো করে বলা যায়, তারা যত না কাজ করে তার চেয়ে বেশি দেয় আওয়াজ।
এসব করার মাধ্যমেই তারা কর্তাব্যক্তিদের চোখে পড়ে এবং কর্ম ক্ষেত্রে ভালো কাজের সুনাম পায় এবং এমনকি পদোন্নতিও পেয়ে যান। এ ধরণের ব্যক্তিদেরকে এই গবেষণায় ‘সুডো-এনগেজ্ড’ বা কাজে গভীরভাবে সম্পৃক্ত হবার ভানধারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
‘আত্ম-প্রচারকারী’ ও অনেক কাজে ডুবে থাকার ভেকধারী ব্যক্তিদেরকে এই গবেষণার জ্যেষ্ঠ গবেষক এমি আর্মস্ট্রং ‘স্বার্থপর’ বলে বর্ণনা করেছেন। এমি আর্মস্ট্রং-এর মতে এ ধরণের ব্যক্তিরা দলগত কাজকে অবমূল্যায়ন করে এবং দিনশেষে তারা আসলে কাজে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।
তবে, কাজে ব্যস্ততা দেখানোর ছদ্মবরণ নেয়া এই কর্মীরাও অনেক সময়ই দেখা যায় অফিসে বেশ প্রশংসা, সুনাম ও পদোন্নতি পেয়ে যায়। এই ধরনের কর্মীরা অফিসে পুরস্কৃত হবার বিষয়টিকে এমি আর্মস্ট্রং ‘অত্যন্ত হতাশাব্যঞ্জক’ বলে উল্লেখ করেছেন। আর্মস্ট্রং ব্যাখ্যা করছিলেন, আত্ম-প্রচারকারী কর্মীরা নিজের সুবিধার্থে অফিসের কর্তা ব্যক্তির সামনে অনেক কিছুই করে।
কিন্তু দিন শেষে এরা তাদের সহকর্মীদেরকে খুব কম বিশ্বাস করে এবং কাজের ক্ষেত্রেও কম সহযোগীতা করতে দেখা যায়। এ ধরণের ব্যক্তিদের কারণে কাজের পরিবেশ বিনষ্ট হতে পারে এবং অন্যরা দলগত কাজে আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে বলেও মনে করেন এমি আর্মস্ট্রং।
আরও দেখুন:
◾ ব্যাংকাররাই ব্যাংকারদের ক্ষতি করছে
◾ ব্যাংকারদের লেনদেন সময় ও টার্গেট কমানো উচিত
◾ ব্যাংকার হতে চান? আরেকবার ভাবুন
◾ একজন ব্যাংকারের যে সকল গুণাবলী থাকা জরুরী
◾ ব্যাংকারদের দেরিতে অফিস ত্যাগ সিস্টেম নাকি অদক্ষতা