সিসি হাইপো বনাম ইসলামী ব্যাংকের বাই মুরাবাহা/বাই মুয়াজ্জাল বিনিয়োগ
ইসলামী ব্যাংকগুলো বাই-মুয়াজ্জাল পদ্ধতিতে গ্রাহকের কাছে মালামাল বাকিতে বিক্রি করে থাকে। আমাদের দেশে বাই মুয়াজ্জালের অনুশীলন মুলত বাই মুরাবাহার অনুশীলন অনুরুপ। দুটি পদ্ধতিতেই ব্যাংক ক্রেতার চাহিদা মত পণ্য ক্রয়ের পর উক্ত গ্রাহকের কাছে বাকিতে বিক্রি করে থাকে। এক্ষেত্রে ব্যাংক নগদ মূল্যে মালামাল ক্রয়পূর্বক গ্রাহকের কাছে নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে পরিশোধের শর্তে মালামালের ক্রয়মূল্যের উপর নির্ধারিত লাভ যোগ করে বাকিতে বিক্রি করে থাকে।
মালামালের মূল্য একবার নির্ধারিত হলে আর বৃদ্ধি করা যায় না। কনভেনশনাল ব্যাংকের ব্যবসায়ীদেরকে ঋণ প্রদানের একটি পদ্ধতি সিসি হাইপো। এখানে ব্যাংক স্থাবর সম্পত্তি বন্ধকী রেখে তাদেরকে নির্ধারিত সুদে ঋণ দেয়। কনভেনশনাল ব্যাংকের সিসি হাইপো ও ইসলামী ব্যাংকের দুটি পদ্ধতি বাহ্যিকভাবে অনেকটা একই মনে হতে পারে। কিন্তু এর মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে। আজ আমরা জানব একজন ব্যবসায়ী একই হারে লোন গ্রহণ করে দুটি ব্যাংক থেকে কোনটা থেকে বেশি লাভবান হতে পারে।
ধরি বাদল সাহেব ইসলামী ব্যাংক থেকে বাই মুরাবাহা পদ্ধতিতে ১০,০০,০০০ টাকার রড কিনলেন, ব্যাংক ১৪% হারে লাভ ধরল।তাহলে এক বছর পর বাদল সাহেব দিবেন -আসল ১০,০০,০০০ + লাভ ১,৪০,০০০/-; মোট-১১,৪০,০০০/-। ধরলাম তিনি একবছর পর দিতে পারলেন না। সেক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংক তার কাছ থেকে জরিমানা আরোপ করবে এবং তার পাওনা হবে-আসল ১০,০০,০০০+ লাভ ১,৪০,০০০+ কমপেনসেশন ১,৪০,০০০/-, মোট ১২,৮০,০০০/-। এখানে উল্লেখ্য ক্ষতিপুরণবাবদ কমপেনসেশন বা জরিমানা আরোপ করা হয় ঠিকই কিন্তু টাকাটা ইসলামী ব্যাংকের ইনকামে যোগ হয় না, এটা আলাদা রাখা হয় এবং শরীয়াহ নীতিমালা অনুযায়ী জনকল্যানার্থে ব্যয় করা হয়।
এদিকে মতিন সাহেব একটি কনভেনশাল ব্যাংক খেকে সিসি হাইপো লোন হিসেবে ১০ লক্ষ টাকা গ্রহণ করলেন ১৪% ইন্টারেস্ট রেটে।
ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন। |
সেক্ষেত্রে এক বছর পর মতিন সাহেবের কাছে ব্যাংকের পাওনা হবে- আসল ১০,০০,০০০ + মুনাফা/ইন্টারেস্ট ১,৪৭,৫২৩/-মোট ১১,৪৭,৫২৩/- আর মতিন সাহেবও যদি ডিফল্টার হন তাহলে দুই বছর পর ব্যাংকের পাওনা হবে ১৩,১৬,৮০৯/-। এর কারণ মুলত কনভেনশনাল ব্যাংকগুলো সিসি হাইপো তে তিন মাস পরপর চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ কষে।
রেট একই হলেও ইসলামী ব্যাংকে কম দিতে হবে এক বছরান্তে ৭৫২৩/-টাকা আর খেলাপী হলে দুই বছর পর কমপেনসেশন দিয়েও ইসলামী ব্যাংকে কম দিতে হবে ৩৬,৮০৯/- টাকা।
Calculation: For Conventional Bank
FVn=PV(1+r/m)mn
=10,00,000 (1+14%/4)^4X1
=10,00,000X1.1475
=11,47,523/-
After Year 2, bank’s due
=10,00,000 (1+14%/4)^4×2
=10,00,000x (1+0.035)^8
=13,16,809/-
For Islami Bank
FVn=PV(1+nr)
=10,00,000 (1+1X14/100)=11,40,000/-
After Year 2
Bank’s due=10,00,000 (1+2X14/100)=12,80,000/- [This amount takes as compensation which is not mixed with regular income of the bank.]
ইনকামের দিক থেকে একই হার হওয়া সত্ত্বেও দুই বছর পর মতিন সাহেব থেকে কনভেশনাল ব্যাংকের আয় ৩,১৬,৮০৯/- টাকা। আর ইসলামী ব্যাংকের আয় ১,৪০,০০০/-। যেহেতু কমপেনশেসন মুল আয়ের সাথে ধরা হয় না, আলাদা করে রাখা হয়। তাই সুদী ব্যাংকের চেয়ে ইসলামী ব্যাংক মোট ২,৭৬,৮০৯/- টাকা কম মুনাফা পেয়ে থাকে।
আরও দেখুন:
◾ জেনে নিন যে ১০টি ভুলে পারসোনাল লোন হয় না
◾ জামানত নিয়ে ব্যাংকের বিড়ম্বনা ও প্রাসঙ্গিক কিছু কথা
◾ ঋণ খেলাপিদের সামাজিকভাবে বয়কট করুন
◾ ব্যাংক লোন নেয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস
কার্টেসিঃ সংগৃহীত