আমদানি বাণিজ্য পরিপালনে ব্যাসেল-৩
ড. মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা: আধুনিক ডিজিটাল বিশ্বায়নের যুগেও বিশ্বের উন্নত দেশগুলো ছাড়াও বিশ্বের এমন কোনো দেশ নেই, যে দেশ বা দেশের কোনো অঞ্চল সব ধরনের দ্রব্য ও সেবা উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে পেরেছে। অর্থনৈতিক ও অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য যে কোনো দেশ যন্ত্রপাতি, কৃষি, শিল্প, পরিবহনের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি এবং বিভিন্ন শিল্পের কাঁচামাল আমদানি করে থাকে। দেশের প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী উৎপাদনের লক্ষ্যে বিভিন্ন কাঁচামাল ও যন্ত্রাংশ আমদানি করা হয়ে থাকে। বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নিজেকে তুলে ধরার জন্য এবং অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আর্থসামাজিক ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের জন্য শিল্পকারখানার জন্য চাহিদামতো কাঁচামাল, জ্বালানি সামগ্রী ও বিভিন্ন পণ্য এবং সেবা আমদানি করে। সাধারণত দেশের মানুষের চাহিদা অনুযায়ী যে পণ্য বা সেবা উৎপাদন করা সম্ভব নয় বা উৎপাদনের চেয়ে আমদানি খরচ কম, সেই পণ্য বা সেবা আমদানি করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্য মূলত আমদানিনির্ভর।
বাংলায় আমদানি বাণিজ্যের ইতিহাস:
বাংলার আমদানি ইতিহাস অতি পুরোনো। সপ্তদশ শতকেই ব্রিটেন, হল্যান্ড, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, ডেনমার্কসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ীরা বাংলায় কুঠি প্রতিষ্ঠা করে। তখনকার সময় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের লেনদেন সম্পাদিত হতো মূলত সোনা ও রুপার বিনিময়ে। তখনকার সময় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের অংশ হিসেবে বাংলার অর্থনীতিতে প্রধান ভূমিকা পালন করে রপ্তানি বাণিজ্য। সময়ের পরিক্রমায় জনসংখ্যার পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। প্রয়োজন হয় অতিরিক্ত ভোগ্যপণ্যের এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালের। তখনকার দিনে প্রয়োজনের তুলনায় স্থানীয় উৎপাদন ও সেবার মান ছিল অপ্রতুল। চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবা আমদানির পরিমাণ দিন দিন বাড়তে থাকে।
আরও দেখুন:
◾ ব্যাসেল-৩ পরিপালনে ইসলামি ব্যাংকিং
ইংল্যান্ডে ১৭৬০-১৮৪০ সালে শিল্পবিল্পব সাধিত হয়। এ সময় কৃষি ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যাপক অগ্রগতির ফলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ব্যাপক উন্নতি লাভ করতে থাকে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির আশীর্বাদে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীনসহ অনেক দেশ উন্নত দেশে পরিণত হয়। ফলে প্রতিযোগিতামূলক আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলা ধীরে ধীরে বাণিজ্য হারাতে থাকে। একই সঙ্গে দেশের বর্ধিত চাহিদা ও শিল্পোৎপাদনের লক্ষ্যে বিদেশি পণ্য আমদানির ওপর অধিকতর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে।
ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন। |
স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রধান হাতিয়ার হিসেবে তৈরি পোশাক শিল্পকে বেচে নেয়। আর এ শিল্পের জন্য প্রয়োজন বিভিন্ন ধরনের কাঁচামাল, যার প্রায় সম্পূর্ণ অংশই আমদানিনির্ভর। এটি শিল্প বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানসহ অর্থনীতির নানা সূচকে প্রভাবিত করে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর বাংলাদেশ ১৯৭৫ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় নাম লেখায়। পরবর্তী সময়ে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে নাম লেখানোর জন্য ২০১৮ সালে সব শর্ত পূরণ করে। সেই মোতাবেক অন্যান্য সূচক ঠিক থাকলে ২০২৬ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গণ্য হবে।
আমদানি বাণিজ্য:
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে আমদানি খাতে পণ্য ও সেবায় মোট ব্যয় হয় ৫৫ হাজার ৬৩৪.৯০ মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশি টাকায় এর পরিমাণ হলো ৪ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরে আমদানি খাতে পণ্য ও সেবায় মোট ব্যয় হয় ৬১ হাজার ৬০৯.১০ মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশি টাকায় এর পরিমাণ হলো ৫ লাখ ২২ হাজার ৪৭৫.৮০ কোটি টাকা; যা গত বছরের চেয়ে ৫ হাজার ৯৭৪.২০ মিলিয়ন ডলার বেশি। অতএব বাংলাদেশে আমদানির পরিমাণ দিন দিন বেড়েই চলছে। প্রধানত আমদানি বাণিজ্যের লেনদেন নগদে, বিনিময়, ওয়েজ আর্নার্স ও ঋণ অনুদানের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়।
বিনিময় বাণিজ্য:
বাংলাদেশ যেসব দেশের সঙ্গে বিনিময় বাণিজ্য পরিচালনা করে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো চীন, রাশিয়া ও হাঙ্গেরি। এসব দেশ থেকে সাধারণত যন্ত্রসরঞ্জাম ও যন্ত্রাংশ, রেলওয়ে ইঞ্জিন ও বগি আমদানি করে থাকে।
ওয়েজ আর্নার্স স্কিম:
প্রবাসী বাংলাদেশিদের অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা দেশে প্রেরণ ও তাদের অর্জিত মুদ্রা দ্বারা কিছু নির্ধারিত পণ্য আমদানি করার জন্য এ স্কিম চালু করা হয়েছে। ওয়েজ আর্নার্স স্কিমের মাধ্যমে দেশের ক্রমবর্ধমান আমদানি চাহিদা পূরণ করার জন্য দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র হতে যন্ত্রসরঞ্জাম ও যন্ত্র্যাংশ, ভোজ্যতেল, বৈদ্যুতিক পণ্যসামগ্রী, পানীয়, তামাকসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্যসামগ্রী আমদানি করা হয়।
ঋণ অনুদান খাতে আমদানি:
উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অর্থ জোগানের একটি প্রধান উপায় বৈদেশিক সাহায্য। এই বৈদেশিক সহায়তা হতে পারে ঋণ বা অনুদান বা খাদ্য সাহায্য। সরকার কর্তৃক গৃহীত বৈদেশিক ঋণের বেশিরভাগই হলো মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণ, যা সাধারণত নমনীয় প্রকৃতির হয়ে থাকে। এই ঋণের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ আমদানি খাতে ব্যয় হয়।
মোট আমদানির মধ্যে তিন-চতুর্থাংশ আমদানি হয় বিভিন্ন সরকারি ও আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। আর বাকি অংশ আমদানি হয় বেসরকারি খাতের ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে। অন্যদিকে রপ্তানি বাণিজ্যের প্রায় পুরোটাই সম্পন্ন হয় বেসরকারি খাতের ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে।
লেটার অব ক্রেডিট (এলসি):
রপ্তানি করা পণ্যের মূল্য প্রাপ্তির নিশ্চয়তার লক্ষ্যে আমদানিকারকের পক্ষ নিয়ে ব্যাংক যে প্রত্যয়ন পত্র দেয়, তাকেই এলসি বলা হয়। এলসি প্রদানকারী ব্যাংক আমদানিকারকের পক্ষে রপ্তানিকারকের কাছে এ মর্মে নিশ্চয়তা দেয় যে, আমদানিকারক কোনো কারণে চুক্তিকৃত পণ্যের মূল্য পরিশোধে অনীহা প্রকাশ করলে উক্ত পণ্য বা সেবার সম্পূর্ণ মূল্য পরিশোধ করতে বাধ্য থাকবে। বিদেশ থেকে কোনো পণ্য আমদানি করতে চাইলে অবশ্যই ব্যাংকের মারফত এলসি খুলতে হয়। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে একমাত্র বৈধ মাধ্যম হলো এলসি। এলসির মাধ্যমেই ব্যবসায়ীরা এক দেশ থেকে অন্য দেশে পণ্য বা সেবা আমদানি-রপ্তানি করে থাকে।
বাণিজ্য ঘাটতি:
আমদানির তুলনায় রপ্তানির পরিমাণ যত কম হবে বাণিজ্য ঘাটতি তত বেশি হবে। বাণিজ্য ঘাটতি বাড়লে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে অর্থনীতির ওপর চাপ বাড়াবে। আমদানি ছাড়াও রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার কারণেও বাণিজ্য ঘাটতি বাড়তে পারে। আমদানির আড়ালে অর্থ পাচার বন্ধের পাশাপাশি বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে বাংলাদেশকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ট্রেড ইউনিয়ন বা ইকোনমিক ইউনিয়নের সদস্য হওয়া জরুরি বলে অর্থনীতিবিদরা মনে করেন। ২০২০-২১ অর্থবছরে পণ্য বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২৮০ কোটি ডলার এবং সেবা বাণিজ্যে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩০০ কোটি ৮০ লাখ ডলার। ফলে বৈদেশিক বাণিজ্য খাতে ঘাটতি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটি স্থায়ী বৈশিষ্ট্যে পরিণত হয়েছে।
আমদানি বাণিজ্যনীতি:
বিশ্বের কোনো দেশ ও জাতিই স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। কোনো না কোনো বিষয়ে এক দেশ অন্য দেশের ওপর নির্ভরশীল। তাই প্রয়োজনীয় পণ্য-দ্রব্য ও সেবা আমদানির প্রয়োজন হয়। আর আমদানি বাণিজ্য সুচারুরূপে সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজন আমদানিনীতি। সেই লক্ষ বাস্তবায়নের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অর্থনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ও ক্রমবর্ধমান চাহিদার প্রেক্ষাপটে তিন বছর অন্তর অন্তর নতুন আমদানিনীতি প্রণয়ন করে থাকে। আমদানি ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৫০-এর সেকশন ৩(১) এ প্রদত্ত ক্ষমতা বলে সরকার আমদানি বাণিজ্য-সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট বিধিবিধান সংবলিত আমদানিনীতি প্রণয়ন করে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় ‘আমদানি নীতি আদেশ ২০২১-২৪’-এর রূপরেখা চূড়ান্ত করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। নতুন আমদানিনীতি অনুযায়ী আমদানিকারক এলসির পাশাপাশি ক্রেতা-বিক্রেতা চুক্তির মাধ্যমে পণ্য বা সেবা আমদানি করতে পারবেন। বর্তমান আমদানি নীতি অনুযায়ী ঋণপত্র (এলসি) খোলার পর ঋণপত্রের কপি ১৫ দিনের মধ্যে আমদানি নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হয়। দ্রুত আমদানিকৃত পণ্য পাওয়ার সুবিধার্থে নতুন আমদানিনীতি অনুযায়ী ডিজিটাল মাধ্যমে ঋণপত্রের কপি জমা দিলেই চলবে।
মূলধন ঘাটতি পূরণের উপায়:
ব্যাসেল-৩ হচ্ছে ব্যাংক খাতের মূলধন পর্যাপ্ততা ও তারল্য ঝুঁকি নিরসনে একটি বৈশ্বিক স্বেচ্ছাসেবী নিয়ন্ত্রক কাঠামো। বিশ্বের সব দেশের ব্যাংকই এর নিয়মকানুন অনুসরণ করে থাকে। বাংলাদেশের যেসব ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি রয়েছে তাদের মূলধন ঘাটতি পূরণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক চারটি বিকল্পের কথা উল্লেখ্য করেছে, তা হলো (১) নতুন শেয়ার ছেড়ে পরিশোধিত মূলধন বৃদ্ধি করা, (২) নিট মুনাফা বণ্টন না করে বোনাস শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে মূলধন বৃদ্ধি করা, (৩) খেলাপি ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলো যে প্রভিশন ঘাটতি রয়েছে, তা কমিয়ে মূলধন ঘাটতি কমানো যায়, তা আবার দুই ভাগে করা যায়। (ক) খেলাপি ঋণের মানের উন্নয়ন করে, (খ) সব ঋণের বিপরীতে যোগ্য জামানতের পরিমাণ বৃদ্ধি করে। (৪) ঝুঁকি ভারিত সম্পদের (জরংশ ডবরমযঃবফ অংংবঃং) পরিমাণ কমিয়ে। কিন্তু ব্যাংকের স্বাভাবিক আয় থেকে এ ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব নয়।
দেশের মানুষের সব চাহিদা পূরণ করা সবসময় দেশের উৎপাদিত পণ্য বা সেবা দিয়ে সম্ভব হয় না সে ক্ষেত্রে চাহিদার আলোকে প্রয়োজনীয় পণ্য বা সেবা আমদানি করা হয়ে থাকে। আমদানি বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ হলো, রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানি। ব্যাংকগুলোর আর্থিক সুস্থতা, স্থিতিশীলতা এবং আমানতকারীদের দায় পরিশোধের সক্ষমতা পরিমাপের অন্যতম মাধ্যম হলো মূলধন পর্যাপ্ততা। সেই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং নীতিমালা ব্যাসেল-৩ অনুযায়ী ব্যাংকগুলো ন্যূনতম মূলধন পর্যাপ্ততা সংরক্ষণ করে থাকে। সাধারণভাবে ব্যাসেল-৩-এর আলোকে একটি ব্যাংকের মোট ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের ১২ দশমিক ৫ শতাংশ ন্যূনতম মূলধন রাখতে হয়।
কোনো ব্যাংক যদি এই হারের চেয়ে কম মূলধন সংরক্ষণ করে সে ব্যাংকে আর্থিকভাবে দুর্বল ব্যাংক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। আন্তর্জাতিক বা আমদানি বাণিজ্যের প্রধান মাধ্যম হলো এলসির মাধ্যমে লেনদেন করা। সে হিসেবে এলসি গ্রহণকারী ব্যাংক এলসি গ্রহণ করার সময় ঝুঁকি পরিমাপের অংশ হিসেবে ব্যাসেল-৩ আদর্শ অনুযায়ী ব্যাংকটির সচ্ছলতা পরিমাপ করে থাকে। যখন কোনো ব্যাংক ব্যাসেল-৩ অনুযায়ী মূলধন সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়, তখন সে ব্যাংকের এলসি গ্রহণ করতে রপ্তানিকারী দেশের ব্যাংকগুলো অনীহা প্রকাশ করে। বিভিন্ন শর্তে গ্রহণ করতে চাইলেও অতিরিক্ত ফি দাবি করে থাকে। ফলে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। আমাদের দেশের বেশিরভাগ সরকারি ও বিশেষায়িত ব্যাংক এখন পর্যন্ত মূলধন ঘাটতিতে রয়েছে। আগামী দিনের উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে মূলধন ঘাটতিতে থাকা সব ব্যাংককে ব্যাসেল-৩-এর কাঠামোর আলোকে মূলধন পর্যাপ্ততার রেশিও পরিপালনের মাধ্যমে দেশের আর্থ-সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সময়ের দাবি।
লেখকঃ ড. মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা: অফিসার, ইসলামি ব্যাংকিং ডিভিশন, ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড।