চেক ডিজঅনার করার সময় ব্যাংকারদের করণীয় ও বর্জনীয়
মোশারফ হোসেনঃ প্রতিদিন অসংখ্য চেকের পেমেন্ট করার পাশাপাশি ব্যাংকারগণ কিছু কিছু চেকের পেমেন্ট প্রত্যাখ্যানও করেন, যাকে ব্যাংকিং ভাষায় ‘চেক ডিজঅনার’ বলে। অনেক সময় চেক দাতার বা চেক গ্রহীতার কিছু ছোটখাট ভুলের জন্যও চেক প্রত্যাখ্যাত হতে পারে, যা পরবর্তীতে সংশোধন করে যথারীতি ব্যাংক থেকে চেকের পেমেন্ট গ্রহণ করা যায়। যেমন- চেকের তারিখে ভুল বা তারিখ না লেখা, একাউন্টে টাকা জমা হওয়ার আগেই চেক উপস্থাপন, প্রাতিষ্ঠানিক চেকে করপোরেট সিল না থাকা ইত্যাদি।
কিন্তু কখনো কখনো চেক দাতা ইচ্ছাকৃতভাবে চেক গ্রহীতার সাথে প্রতারণার আশ্রয় নেয়, যেমন- একাউন্টে টাকা না থাকা সত্ত্বেও কাউকে চেক ইস্যু করে, চেক ইস্যু করার পর ‘চেক হারিয়ে গেছে’ বলে থানায় জিডি করে আবেদনসহ জিডির কপি ব্যাংকে দিয়ে সংশ্লিষ্ট চেকের পেমেন্ট স্টপ করে রাখে। কেউ কেউ আবার একাউন্টই বন্ধ করে ফেলে। আবার কখনো কখনো চেক দাতা আর্থিক অক্ষমতার কারণেও কমিটেড তারিখে চেকের পেমেন্ট নিশ্চিত করতে পারেন না।
এক্ষেত্রে চেক গ্রহীতা/প্রাপক বিপদে পড়েন। পাওনা টাকা আদায়ে বিভিন্ন দেনদরবার ও নেগুসিয়েশনেও যখন চেক দাতার সাথে পেরে ওঠেন না, তখন তিনি মামলা করে পাওনা টাকা আদায়ের উদ্দেশ্যে চেকটি ব্যাংকার কর্তৃক ডিজঅনার করিয়ে নেন। মূলত এটাই হচ্ছে চেকের ফরমাল বা আনুষ্ঠানিক ডিজঅনার। তবে সাধারণ ডিজঅনারে ব্যাংকার যেমন মৌখিকভাবে চেকের উপস্থাপককে ডিজঅনারের কারণটি জানিয়ে দেন, ফরমাল বা আনুষ্ঠানিক ডিজঅনারের ক্ষেত্রে সেই কারণটিই ব্যাংকার একটি ‘ডিজঅনার মেমো’তে লিখিতভাবে উল্লেখপূর্বক চেকের উপস্থাপককে জানিয়ে দেন।
অর্থাৎ এক্ষেত্রে ডিজঅনারের পদ্ধতিগত পার্থক্য আছে। প্রকৃতপক্ষে শুধু পদ্ধতিগত পার্থক্যই নয়, উভয় ডিজঅনারের মধ্যে পদ্ধতিগত পার্থক্যের পাশাপাশি পরিণামগত পার্থক্যও আছে। ব্যাংকারকে মনে রাখতে হবে, ফরমাল চেক ডিজঅনারের পরিণতি আদালত পর্যন্ত গড়াতে পারে– আইনি নোটিশ হবে, তারপর মামলা হতে পারে, ব্যাংকারকে আদালতে সাক্ষ্য দিতে হতে পারে, এমনকি প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আদালত ব্যাংক কর্মকর্তাকে তলবও (সমন জারি) করতে পারে।
ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন। |
মামলার রায়ে চেকদাতার সর্বোচ্চ ১২ মাসের জেলসহ চেকের টাকার তিনগুণ পরিমাণ জরিমানা হতে পারে। একইসাথে ডিও ডিলিজেন্স বর্জিত ও ভুল ডিজঅনারের কারণে ব্যাংকার নিজেও কিন্তু পড়তে পারেন বিপদে! তাই চেককে ফরমালি ডিজঅনার করতে ব্যাংকারকে একটু বাড়তি সতর্ক হতে হয়। আমার নিজ অভিজ্ঞতা ও ব্যাংকিং চর্চার আলোকে এক্ষেত্রে ব্যাংকারদের কিছু করণীয় ও বর্জনীয় প্রস্তাব করতে চাই।
১. ফরমাল চেক ডিজঅনারের ক্ষেত্রে ডিজঅনারকৃত চেকের তথ্য সংরক্ষণের পাশাপাশি চেকের প্রাপক (বেনিফিশিয়ারি), উপস্থাপক (বাহক), দাতা, কালেকটিং ব্যাংক, পেয়িং ব্যাংক- এ সকল পক্ষসংশ্লিষ্ট তথ্য ডিজঅনারকারী ব্যাংকারকে সংগ্রহে রাখতে হবে।
২. ওভার দ্যা কাউন্টার ক্যাশ পেমেন্ট চেয়ে ডিজঅনার করাতে চাইলে, প্রাপক/বাহককে বলুন, উপস্থাপিত চেকের সাথে তার এনআইডির ফটোকপি (মোবাইল নম্বরসহ) সংযুক্ত করতে। কারণ, আপনার কাছে চেক দাতার পরিচিতি আছে, কারণ সে আপনার একাউন্ট হোল্ডার। কিন্তু চেক গ্রহীতা আপনার কাস্টমার (একাউন্ট হোল্ডার) না হলে, তার পরিচিতি সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে তার এনআইডির কপি নিবেন। কারণ মামলা হলে, আদালত আপনার কাছে উভয়ের তথ্যই জানতে চাইতে পারে। তবে চেক গ্রহীতাও যদি আপনার কাস্টমার হয়ে থাকে, তাহলে তাকে ওভার দ্যা কাউন্টার ডিজঅনার না চেয়ে নিজের একাউন্টে জমা দেখিয়ে ডিজঅনার করাতে বলবেন।
৩. ‘একাউন্ট পেইয়ি’ চেক হলে, অর্থাৎ চেকটি প্রাপকের হিসাবে জমা করাতে চাইলে, প্রাপককে/জমাকারীকে বলুন, চেকের তথ্য দিয়ে জমাস্লিপ পূরণ করে জমাস্লিপসহ চেকটি জমা দিতে।
৪. চেকটি আপনার (ব্যাংকার) হস্তগত হলে-
● প্রথমেই দেখুন, চেকটি বাহ্যত ঠিক আছে কিনা। অর্থাৎ চেকটি ড্যামেজড (স্যাঁতসেঁতে, পোড়া, মেটে, তৈলাক্ত, ভাঙা, ছেঁড়া, ওয়াশড ইত্যাদি) কিনা সেটা শুরুতেই নিশ্চিত হয়ে নিন। যদি চেকটি যেকোনোভাবে ড্যামেজড (নষ্ট) হয়ে থাকে, তাহলে ‘চেক ড্যামেজড’ কারণ দেখিয়ে চেকটি ডিজঅনার করতে হবে। তবে এই ডিজঅনারের জন্য দাতার কোনো দায় থাকবে না। অর্থাৎ এই ডিজঅনারের কারণে দাতার বিরুদ্ধে মামলা করা যাবে না।
● দ্বিতীয়ত চেকে কোনো ঘষামাজা (tampering), কাটাকাটি (overwriting) বা কোনো material alterations আছে কিনা ভালো করে খেয়াল করুন।
● তৃতীয়ত দেখুন, চেকটি যথাযথভাবে লেখা হয়েছে কিনা, অর্থাৎ চেকের ৫টি apparent tenor– তারিখ, প্রাপকের নাম, কথায় টাকার পরিমাণ, অংকে টাকার পরিমাণ, দাতার স্বাক্ষর– সবগুলো অংশই সঠিকভাবে লেখা হয়েছে কিনা।
● চতুর্থত, ভালোভাবে খেয়াল করুন- চেকটি stale বা post-dated কিনা।
● একাউন্ট পেইয়ি চেকের ক্ষেত্রে জমাস্লিপে উল্লিখিত প্রাপকের একাউন্ট নম্বর ও একাউন্টের নামটি আপনার ব্যাংকের সিবিএসে ট্যালি করছে কিনা চেক করে নিন। একইসাথে চেকে উল্লিখিত প্রাপকের নাম ও একাউন্ট নম্বর জমাস্লিপে উল্লিখিত প্রাপকের নাম ও একাউন্ট নম্বরের সাথে মিলছে কিনা- সেটাও নিশ্চিত হয়ে নিন।
৫. অনেক ব্যাংকার চেক হাতে পেয়েই ’ক্যাশ পেইড’, ‘পোস্টেড’ ইত্যাদি সিল বসিয়ে দেন! সাবধান! এটা করা যাবে না। চেক হাতে পেয়েই চেকে কোনো সিল মারা, ক্রসিং করা, এনডোর্সমেন্ট করা, স্বাক্ষর, ইনিশিয়াল বা ক্যানসেলেশন করে ফেলবেন না। কারণ, আপনি কিন্তু নিশ্চিত নন- শেষ পর্যন্ত এই চেকটির পেমেন্ট হবে কিনা। এ সতর্কতাটুকু রেগুলার চেক পেমেন্টের ক্ষেত্রেও অবলম্বন করা উচিত।
অর্থাৎ চেকে কোন সিল বসানো বা কলম ধরার আগে আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে, চেকটি পরিশোধযোগ্য কিনা। তার আগ পর্যন্ত আপনি চেকে কিছু করতে যাবেন না। কারণ, চেকটির পেমেন্ট যদি শেষ পর্যন্ত না করা যায়, তাহলে আপনার অনর্থক সিল বসানো ও কলম চালানোর কারণে চেকটির অকার্যকারিতার এবং প্রাপকের ক্ষতির দায় আপনার উপরে বর্তাবে। তবে ক্লিয়ারিং চেক (অন্য ব্যাংকের চেক) হলে পেইয়িং ব্যাংকে উপস্থাপনের স্বার্থে আপনি ক্রসিং, এনডোর্সমেন্ট ইত্যাদি যথারীতি করবেন।
৬. চেকটি অনার করার মতো পর্যাপ্ত ব্যালেন্স দাতার একাউন্টে আছে কিনা দেখে নিন।
৭. চেক দাতার স্বাক্ষর ব্যাংকের sample signature (specimen signature) এর সাথে match করে কিনা নিশ্চিত হয়ে নিন।
৮. দাতার একাউন্টে ব্যালেন্স না থাকলে যেমন চেকটি ডিজঅনার হতে পারে, ব্যালেন্স থাকার পরও কিন্তু চেকটিকে আপনার ডিজঅনার করতে হতে পারে। তাই সিবিএস এর চেক পেমেন্ট মেনু, চেক স্ট্যাটাস, চেক রিপোর্ট ইত্যাদি অপশন ব্যবহার করে উপস্থাপিত চেকটির স্ট্যাটাস চেক করুন– চেকটি ইতিমধ্যে দাতার আবেদনক্রমে লস্ট/স্টুলেন/ডেস্ট্রয়েড/ক্যানসেলড ইত্যাদি মার্কড করা আছে কিনা বা এর পেমেন্ট দাতা কর্তৃক স্টপ করা আছে কিনা।
৯. এছাড়াও স্টপ পেমেন্ট রেজিস্টারে ও ফাইলে তল্লাশি দিয়ে বেটার শিউর হয়ে নিন, এই চেকটি ইতিমধ্যে দাতার আবেদনক্রমে লস্ট/স্টুলেন/ডেস্ট্রয়েড/ক্যানসেলড ইত্যাদি মার্কড করা আছে কিনা বা এর পেমেন্ট দাতা কর্তৃক স্টপ করা আছে কিনা।
১০. চেক দাতার হিসাবটি আদালতের গার্নিশি অর্ডারে বা অন্য কোনো অনুমোদিত কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ফ্রিজ করা আছে কিনা- নিশ্চিত হয়ে নিন।
১১. ব্যালেন্স অ্যাসাইনমেন্ট, চেক দাতার মৃত্যু বা দেউলিয়াত্বের কোনো নোটিশ প্রাপ্ত হয়েছেন কিনা- নিশ্চিত হয়ে নিন।
১২. চেক দাতার হিসাবের ব্যালেন্স ব্যাংকের lien বা set-off right এর অধীনে কিনা নিশ্চিত হয়ে নিন।
১৩. সবকিছু চেক-রিচেকের পর, ডিজঅনার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলে, ডিজঅনারের তারিখ, চেক নম্বর, টাকার পরিমাণ, ডিজঅনারের প্রকৃত কারণ ও কারণের ক্রমিক নং উল্লেখ করে ‘ডিজঅনার মেমো’ ইস্যু করবেন। অনেক ব্যাংকার বন্ধুরা ডিজঅনারের কারণ হিসেবে কেবল ‘insufficient fund’-কেই উল্লেখ করেন। অন্য আর কোনো কারণ থাকলেও সেটা উল্লেখ করেন না। কিন্তু আমার মতে, ডিজঅনারের গুরুত্বপূর্ণ সব কারণই উল্লেখ করা উচিত; কারণ, আমরা ব্যাংকাররা বিচারক নই, বিচারের দায়িত্ব আদালতের।
তাই ডিজঅনারের একাধিক কারণ পাওয়া গেলে ডিজঅনার মেমোতে সবগুলোই উল্লেখ করা উচিত। সিদ্ধান্ত যা নেয়ার বা ডিজঅনারের যে কারণকে আমলে নেয়ার- সেটা আদালত নেবে। ডিজঅনার মেমোতে ডিজঅনারকারী কর্মকর্তা তার অথারাইজড স্বাক্ষর দিয়ে তার নিচে তার নাম, পদবি, ব্যাংক ও শাখার নামযুক্ত সিল ব্যবহার করবেন। অনেকে কেবল ব্যাংক ও শাখার নামযুক্ত রাউন্ড সিল ব্যবহার করেন; এতে করে পরবর্তীতে আদালতে সাক্ষ্য দেয়ার সময় কোন কর্মকর্তা চেকটি ডিজঅনার করেছেন- এ নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়।
১৪. চেক উপস্থাপনকারীর কাছ থেকে ব্যাংকের শেডিউল অব চার্জেস অনুযায়ী ডিজঅনার চার্জ (ভ্যাটসহ) আদায় করুন। অথবা, আপনার ব্যাংকের সার্কুলার মতে এই চার্জ যদি চেক ইস্যুয়ারের কাছ থেকে আদায় করার নির্দেশনা থাকে, তাহলে তার একাউন্ট ডেবিট করে আদায় করে নিবেন।
১৫. ডিজনারকৃত চেক ও ডিজঅনার মেমো ফটোকপি করে জমাস্লিপ (যদি প্রযোজ্য হয়) ও প্রাপকের/বাহকের/জমাকারীর এনআইডির সাথে চেক ডিজঅনার ফাইলে রেখে দিন। এজন্য আপনার শাখায় চেক ডিজঅনার রেজিস্টারের পাশাপাশি একটি চেক ডিজঅনার ফাইলও সংরক্ষণ করুন।
১৬. তারপর চেক ডিজঅনার রেজিস্টারে প্রয়োজনীয় তথ্য এন্ট্রি দিয়ে প্রাপক/বাহক/জমাকারীর স্বাক্ষর নিয়ে তার কাছে ডিজঅনারকৃত মূল চেক, ডিজঅনার মেমো ও জমাস্লিপের কার্বনাইজড কপি/ডুপ্লিকেট (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) হস্তান্তর করুন।
১৭. চেক ডিজঅনার রেজিস্টারে যেসব তথ্য উল্লেখ থাকা জরুরি-
● চেক দাতার হিসাব নম্বর ও হিসাবের নাম
● চেক নং
● চেকের তারিখ
● প্রাপকের নাম
● প্রাপকের হিসাব নম্বর (যদি একাউন্ট পেইয়ি চেক হয়)
● টাকার পরিমাণ
● ডিজঅনারের তারিখ
● ডিজঅনারের কারণ
● ক্লিয়ারিং চেকের ক্ষেত্রে কালেক্টিং ব্যাংক ও শাখার নাম
● ডিজঅনারকারী কর্মকর্তার নাম, স্বাক্ষর
● ম্যানেজারের কাউন্টার স্বাক্ষর
● চেক গ্রহীতার নাম, স্বাক্ষর ও মোবাইল নম্বর।
১৮. ইনওয়ার্ড ব্যাচের মাধ্যমে উপস্থাপিত কোনো চেক যদি রিজেক্ট বা ডিজঅনার করেন, তাহলে রিজেকশন রিপোর্ট বা ডিজঅনার রিপোর্ট প্রিন্ট করে চেক ডিজঅনার ফাইলে রাখবেন।
১৯. চেক ডিজঅনারেই ব্যাংকারের কাজ শেষ নয়। সাক্ষ্য দিতে ম্যানেজারকে আদালত সমন জারি করলে, চেক ডিজঅনার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকেই সাক্ষ্য দিতে পাঠানো উচিত। এক্ষেত্রে ওই কর্মকর্তাকে ম্যানেজার কর্তৃক একটি ‘অথারাইজেশন লেটার’ ইস্যু করে আদালতে সাক্ষ্য দেয়ার অথরিটি দিয়ে দেয়া উত্তম। আর সমনে যদি সরাসরি চেক ডিজঅনারকারী কর্মকর্তার নাম উল্লেখ থাকে, তাহলে তো সেই নির্দিষ্ট কর্মকর্তাই আদালতে যাবেন।
২০. আদালতের বিষয়টি মাথায় রেখে, চেক ডিজঅনার শেষে চেকের উপস্থাপককে বলে দিবেন, যদি শেষ পর্যন্ত মামলা করতেই হয় এবং সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যন্ত টাকা অনাদায়ী থাকে, তাহলে সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ পড়লে বাদী যেন সেটা ব্যাংকে যোগাযোগ করে জানিয়ে দেন। কারণ, এমনও নজির আছে, স্বাক্ষী তলব করে দেয়া আদালতের সমন ব্যাংকের কাছে আসতে আসতে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ চলে যায়।
আরও দেখুন:
◾ ব্যাংকে রেখে যাওয়া মৃত ব্যক্তির আমানত কে পাবে?
◾ ব্যাংক গ্রাহকের মৃত্যুতে উত্তরাধিকারী ও নমিনী কর্তৃক টাকা উত্তোলনের নিয়ম
◾ মৃত ব্যক্তির হিসাবে গচ্ছিত টাকা কে পাবে নমিনী নাকি ওয়ারিশ?
২১. সাক্ষ্য দেয়ার জন্য ব্যাংকের নিকট আদালত হতে সমন আসলে, সমনে যদি বাদীর নাম বা চেক সংক্রান্ত কিছু উল্লেখ থাকে তাহলে চেক ডিজঅনার রেজিস্টার ও ফাইলে তল্লাশি দিয়ে ওই চেকটির তথ্য খুঁজে বের করে সাক্ষ্য দিতে যাওয়া কর্মকর্তা চেক, চেকের বিভিন্ন পক্ষ, ডিজঅনারের কারণ, ডিজঅনারকারী কর্মকর্তা সম্পর্কে ভালোভাবে স্টাডি করে তারপর আদালতে যাবেন। প্রয়োজনে চেক ও ডিজঅনার মেমোর ফটোকপি সাথে নিয়ে যেতে পারেন।
লেখকঃ মোশারফ হোসেন, ব্যাংকার ও কলামিস্ট।