ব্যাংকারদের বেতন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ
নূরুল ইসলাম খলিফাঃ অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ, অর্থব্যবস্থা, ব্যাংকিং ব্যবস্থা ইত্যাদির কথা আমরা যথেষ্ট শুনতে পাই। আমাদের জাতীয় নেতৃবৃন্দ, অর্থনীতিবিদ ও সমাজ বিজ্ঞানীরা হামেশাই এই জাতীয় জ্ঞানগর্ভ কথাবার্তা বলেন আর আমরা প্রান্তিক জনগোষ্ঠি খুশী হই এই ভেবে যে, আমাদের ভাগ্য বোধহয় এইবার বদলাবে। কিন্তু বাস্তবে কি হয়? সর্বত্রই পূঁজিবাদের জয়জয়কার, বিত্তবানদের পক্ষেই সব কিছু। প্রান্তিক জনগোষ্ঠি শুধু মাথাপিছু আয়ের হিসাবের মাথা গননায় আসে কিন্তু বাস্তবে তাদের ভাগ্যের শিকা আর ছিঁড়ে না।
২০১৫ সাল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যাংকিংয়ের কথা জোরেশোরে বলা শুরু করেছিল। দশ টাকা দিয়ে হিসাব খোলা হবে, এসএমই কে প্রাধান্য দেয়া হবে ইত্যাদি। উদ্দেশ্য সাধারণ জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন করতে হবে, তাদেরকে ব্যাংকিংয়ে এ্যাকসেস দিতে হবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম লক্ষ্য ছিল একটি বৈষম্যহীন সমাজ গড়া। বাইশ পরিবারের বিরুদ্ধে কথা বলেছি আমরা মাঠে ময়দানে যারা সম্পদ কুক্ষিগত করে রেখেছিল বলে বলা হতো।
আরও দেখুন:
◾ নতুন সফরে পাল তুলে দাও হে মাঝি সিন্দাবাদ
কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক’দিন আগে একটা নীতিমালার কথা বলেছিল যাতে ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিশেষ করে নিচের দিকের কর্মীদের বেতন ভাতার একটা পরিমানের কথা বলা হয়েছিল। এটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবস্থারই একটা অংশ বলেই আমরা মনে করি। এই শ্রেণির কর্মীরা কিন্তু প্রান্তিক জনগোষ্ঠিরই একটা অংশ। মূল্যস্ফীতির এই দু:সময়ে তাদের নূন আনতে পান্তা ফুরায়। বাড়ি ভাড়া, সন্তানটির পড়ালেখার খরচ, বৃদ্ধ মা বাবার চিকিৎসা এই মৌলিক প্রয়োজন পূরণেই তাদের নাভিশ্বাস উঠছে।
ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন। |
তারা হয়তো সামান্য হলেও কিছুটা স্বস্তির নি:শ্বাস নিতে পারতো। কিন্তু সেটি বাস্তবায়নে কত প্রতিবন্ধকতা চলে আসলো! বাংলাদেশের প্রথম বেতন স্কেলে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বেতনের অনুপাত ছিল ১:১০। সেটি ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল চেতনার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কিন্তু ধীরে ধীরে আমরা সে মূল্যবোধ থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়লাম। এখন দশ লাখ, বারো লাখ, বিশ লাখ টাকায় প্রধান নির্বাহী ভাড়া করা যাবে, কিন্তু চল্লিশ হাজার টাকা একজন এন্ট্রি লেভেল অফিসারের বেতন করা সম্ভব না।
লেখকঃ নূরুল ইসলাম খলিফা, সাবেক ডিএমডি, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড ও সাবেক প্রিন্সিপাল, ট্রেইনিং অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড।