বিশেষ কলাম

ব্যাংক ব্যালেন্স কিংবা লিকুইডিটি ইস্যু

শাহেদ আব্দুর রকীবঃ এক মুরব্বী চাচার ছেলে অনেক বছর ধরে প্রবাসে আছেন। বাবার নামের ব্যাংক একাউন্টে তিনি টাকা পাঠান প্রতি মাসে। মাসিক খরচের জন্য প্রয়োজনীয় উত্তোলন বাদে বাকী টাকা একাউন্টে জমা থাকে। এবং এতোদিনে সে টাকা জমতে জমতে অনেক টাকা হয়ে যাবার কথা।

ছেলে চিঠি পাঠালেন বাবার কাছেঃ বাবা, ব্যাংকে গিয়ে কি খোঁজটোজ নিয়েছ? টাকাগুলো ঠিক ঠিক আছে কি না?
বাবা পরের দিনই ছুটে যান ব্যাংকে। ম্যানেজারকে জিজ্ঞেস করেনঃ একাউন্টে আমার টাকাগুলো ঠিক ঠিক আছে তো বাবা? একাউন্টে এখন আমার মোট কতো টাকার ব্যালান্স আছে?

ম্যানেজার তাঁকে জানান যে তাঁর টাকাগুলো ঠিক ঠিক আছেঃ চাচা, ব্যাংকে থাকা টাকা বেঠিক হওয়ার কোন সুযোগ নাই। এই যে আপনার একাউন্ট স্টেটমেন্ট আর এই যে এখানে দেখাচ্ছে আপনার একাউন্টে বর্তমানে জমা আছে মোট ত্রিশ লক্ষ বিশ হাজার সাতশত তেরো টাকা মাত্র!
মুরব্বী চাচা তাঁর নিজের কাছে থাকা হিসাবের সাথে ম্যানেজারের দেয়া হিসাবের মিল পেলেন বটে কিন্তু ভরসা করতে পারলেন না। বললেনঃ হিসাব ঠিক আছে বাবা, তবে আমাকে আমার টাকাগুলো দেখাতে হবে!

ম্যানেজার পড়লেন বিপদে! অনেকভাবে চেষ্টা করেও মুরব্বী চাচাকে বিষয়টা বুঝাতে তিনি ব্যর্থ হলেন। এই শাখায় গ্রাহকগণের মোট আমানতের পরিমাণ প্রায় পঁচিশ কোটী টাকা। সবগুলো টাকা শাখায় রেখে দেয়া হয়না। টাকাগুলো হেড অফিসের কেন্দ্রীয় হিসাবে জমা করে রাখা হয়। গ্রাহকের চাহিদা মতো শাখায় টাকা আনা-নেয়া করা হয়। একটি শাখায় একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে নগদ টাকা রাখার অনুমতি থাকে। এর বেশি রাখা যায় না। এটাকে ভল্ট লিমিট বলা হয়। এই শাখার ভল্ট লিমিট মাত্র দশ লক্ষ টাকা।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

আরও দেখুন:
◾ চেক ডিজঅনার মামলার লাভ-ক্ষতি

নিরুপায় ম্যানেজার সাহেব মুরুব্বি চাচাকে পরের দিন আসতে অনুরুধ করলেন। তারপর ফিডিং ব্রাঞ্চে পরের দিনের জন্য ডিমান্ড পাঠালেন নগদ একত্রিশ লক্ষ টাকার। পরের দিন সকালে চাচা আসলেন, নগদ টাকাও আসলো। পুরো ত্রিশ লক্ষ বিশ হাজার সাতশত তেরো টাকার ক্যাশ রাখা হলো চাচার সামনে। তিনি সেগুলো হাতের স্পর্শে ছুঁয়ে, টাকার বাণ্ডিলগুলো নাড়াচাড়া করে দেখলেন, আশ্বস্থ হলেন। যাইহোক, টাকাগুলো ঠিক ঠিক আছে তাহলে! ম্যানেজারকে বললেন, ঠিক আছে বাবা, টাকাগুলো আবার জায়গামতো তুলে রেখে দিন।

লেখকঃ শাহেদ আব্দুর রকীব

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button