বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক

বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক লিমিটেড

অবিভক্ত বাংলায় সমবায় সমিতি ও কৃষক পর্যায়ে ঋণ প্রদানের লক্ষ্যে সরকারী উদ্যোগে ১৯২২ সালে সমবায় ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক লিমিটেড বা বিপিআই একটি স্বায়ত্তশাসিত জাতীয় গবেষণা ইনস্টিটিউট যা একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হিসাবে কাজ করে। বাংলাদেশে পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের গবেষণা ও পরিকল্পনা পরিচালনা করে এবং কৃষক ও কৃষি খাতে ঋণ সহায়তা করে। এই ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয় ঢাকা, বাংলাদেশে অবস্থিত।

অবিভক্ত বাংলায় সমবায় সমিতি ও কৃষক পর্যায়ে ঋণ প্রদানের লক্ষ্যে সরকারী উদ্যোগে ১৯২২ সালে প্রতিষ্ঠিত বেঙ্গল প্রভিন্সিয়াল কো-অপারেটিভ ব্যাংকের সদর দপ্তর কোলকাতায় থাকায় ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর পূর্ব পাকিস্তানে সমবায় প্রতিষ্ঠান ও কৃষক পর্যায়ে কৃষি ঋণ প্রবাহ সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এ সমস্যা হতে উত্তরণের জন্য ১৯৪৭ সালের শেষ দিকে ইষ্ট বেঙ্গলের রেজিষ্ট্রার অব কো-অপারেটিভ সোসাইটিজ জনাব ইকবাল আতাহার আলী পি.এ.এস এর আহবানে পূর্ব পাকিস্তানের সমবায় নের্তৃবৃন্দের একটি সভা মাননীয় প্রাদেশিক সমবায় মন্ত্রী সৈয়দ মোঃ আফজালের সভাপতিত্বে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় পূর্ব পাকিস্তানে নতুনভাবে একটি প্রাদেশিক সমবায় ব্যাংক প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত হয়। তারই প্রেক্ষাপটে কতিপয় উদ্যোগী ব্যক্তির সক্রিয় অংশগ্রহনে ৩১-০৩-১৯৪৮ খ্রিঃ তারিখে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক সমবায় ব্যাংক লিঃ নামে নিবন্ধন লাভের পর সদরঘাট এলাকায় অবস্থিত ভিক্টোরিয়া পার্ক সংলগ্ন জনশন রোডের একটি ভাড়া বাড়িতে ০১-০৪-১৯৪৮ খ্রিঃ হতে এর কার্যক্রম শুরু করা হয়।

পরবর্তীতে ২৫-১১-১৯৪৯ খ্রীঃ সালে একই এলাকায় ৩/১০ জনশন রোডে অবস্থিত ইম্পিরিয়াল ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার মালিকানাধীন ভবনটি ১.৩৮ লক্ষ টাকায় ক্রয় করে পুরোদমে কার্যক্রম চালু করা হয়। ১৯৫৯ সালে ৯-ডি, মতিঝিলস্থ ৮.৭৬ কাঠা জমি পূর্ব পাকিস্তান সরকার হতে ৩৮৯৩৮.০০ টাকায় ৯৯ বছরের জন্য স্থায়ী লীজ গ্রহণ করে ৯ তলা বিশিষ্ট বর্তমান ভবন তৈরী করা হয়। প্রতিষ্ঠাকালীন ব্যাংকের নিবন্ধন নং ছিল ৩, তারিখ ৩১-০৩-১৯৪৮ খ্রীঃ। পরবর্তীতে সমবায় সমিতি আইন ও বিধিমালা নতুনভাবে জারী হওয়ার পর ২০০৫ সালে উপ-আইন সংশোধিতভাবে নিবন্ধন করা হয়। সংশোধিত নিবন্ধন নং ০১ বি, তারিখ ০৯-০৩-২০০৫ খ্রীঃ।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

একনজরে বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক

নামবাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক লিমিটেড
Bangladesh Samabaya Bank Limited
লোগোবাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক লিমিটেড (বিএসবিএল)
লিগ্যাল স্টাটাসপাবলিক লিমিটেড কোম্পানী
প্রতিষ্ঠাকাল১৯২২
ধরনবিশেষায়িত ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক
ক্যাটাগরিকমার্শিয়াল ব্যাংক
উৎপত্তিদেশী ব্যাংক
কোড
ঠিকানাপ্রধান কার্যালয়ঃডি, মতিঝিল বা/, ঢাকা১০০০
টেলিফোন+৮৮০২ ৯৫৯০৮৮৯
ফ্যাক্স+৮৮০২ ৯৫৫৮১১৭
ইমেইলbdbsbl_bank@yahoo.com
bsblrdcd@gmail.com
ওয়েবসাইটwww.bsbl.org.bd

বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংকের সার্ভিস
বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকিং সেবা প্রদান করে। নিম্নে বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক এর সেবাসমূহ তুলে ধরা হলো-
– খুচরা ব্যাংকিং
– ভোক্তা ঋণ
– এসএমই ব্যাংকিং
– লিজ ফাইন্যান্সিং
– ট্রেড ফাইনান্স ইত্যাদি।

বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংকের কাজ
বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক লি.-এর প্রধান কাজ হলো মধ্যভাগে অবস্থিত কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংকসমূহকে অর্থের যোগান দেওয়া, যাতে তারা পুনরায় সে অর্থ প্রাথমিক সমিতিসমূহের নিকট লগ্নি করতে পারে। প্রাথমিক সমিতিসমূহ আবার কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংকগুলি হতে প্রাপ্ত তহবিল তাদের সদস্যদের মধ্যে ঋণ হিসেবে বিনিয়োগ করে থাকে। দেশের সকল সমবায় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক লি.-এর সদস্য।

বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন
বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন ১০ কোটি টাকা যা প্রতিটি ১,০০০ টাকা মূল্যের ১,০০,০০০টি শেয়ারে বিভক্ত। এর ৪,৫০০টি সাধারণ শেয়ার সরকার কর্তৃক পরিশোধিত, ৫৪,৬৮৭টি শেয়ার কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংক এবং সমিতিসমূহ দ্বারা ৫০০ টাকা হারে আংশিক পরিশোধিত। অর্থাৎ বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংকের মোট পরিশোধিত মূলধন হচ্ছে ৩.১৮ কোটি টাকা।

কো-অপারেটিভ সোসাইটিজ অর্ডিন্যান্স ১৯৮৪-র ৩৯(১) ধারা অনুযায়ী সমবায় ব্যাংক-এর সদস্য ব্যতীত অন্যকোন ব্যক্তিকে ঋণ প্রদান করতে পারে না। ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংকের সদস্য সংখ্যা ছিল ৪৮২। ৩০.৬.৯৮ তারিখে ব্যাংকটির সদস্য সংখ্যার বিভাজন নিম্নরূপ:

ক. কেন্দ্রীয় সমিতিসমূহ: কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংক (৭১), কেন্দ্রীয় বহুমুখী সমবায় সমিতি (৪৩), কেন্দ্রীয় ইক্ষুচাষি সমবায় সমিতি (১৬), থানা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি (৫৩)।
খ. প্রাথমিক সমিতিসমূহ: সমবায় জমি বন্ধকী ব্যাংক (৪৩), প্রাথমিক বহুমুখী সমবায় সমিতি (১৫৫), টাউন কো-অপারেটিভ ব্যাংক সোসাইটি (১২), মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি (৩), অন্যান্য সমিতি (৮৬)।

বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংকের উদ্দেশ্য
বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক লিমিটেডের উদ্দেশ্যসমূহ হচ্ছে:
ক. সমবায় সেক্টরে শীর্ষ (apex) আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করা;
খ. সমবায় সমিতিসমূহের উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধিতে সহায়তা করা;
গ. কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংকসহ অপরাপর সদস্য সমিতিসমূহের নিয়ন্ত্রণ এবং তাদের কাজের সমন্বয় সাধন;
ঘ. প্রাথমিক সমিতিসমূহের উৎপাদিত দ্রব্যাদি বাজারজাতকরণে সহায়তা করা এবং এ সকল উৎপাদিত দ্রব্যাদি সংরক্ষণের জন্য গুদামঘরসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা;
ঙ. আওতাভুক্ত/তালিকাভুক্ত সমিতিসমূহকে সহায়তা ও পরামর্শ প্রদান এবং
চ. সমবায় আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী সমবায় সমিতিসমূহের সাথে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করা।

বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংকের ঋণ
সমবায় ঋণকাঠামোর প্রাথমিক একক হলো প্রাথমিক ঋণদান সমিতিসমূহ। প্রাথমিক সমিতিসমূহের উদ্দেশ্য হলো কৃষি, বনায়ন, মৎস্য শিকার এবং কুটির শিল্পে নিয়োজিত সমবায়ী সদস্যদের অর্থ যোগান দেওয়া। এ সমিতিগুলি আংশিকভাবে মধ্যস্তরের কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংকগুলি কর্তৃক অর্থপুষ্ট হয়ে থাকে। সমবায় জমি বন্ধকী ব্যাংক এবং নগর/শহরভিত্তিক সমবায় ব্যাংকগুলিও প্রাথমিক সমিতিসমূহের অন্তর্ভুক্ত। এ ব্যাংকগুলিও তাদের কৃষি এবং কুটির শিল্পে নিয়োজিত সদস্যদেরকে অর্থ যোগান দিয়ে থাকে। তবে আংশিকভাবে এ ব্যাংকগুলি বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক লিমিটেড কর্তৃক অর্থপুষ্ট হয়ে থাকে। এ ধরনের সমিতি বা ব্যাংকের সদস্যপদ কেবল ব্যক্তিসাধারণের জন্য উন্মুক্ত।

বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংকের বাণিজ্যিক ব্যাংকিং
সমবায় ব্যাংক মূলত কোন বাণিজ্যিক ব্যাংকিং কার্যক্রমে সম্পৃক্ত নয়। এটি গ্রামাঞ্চলে ক্ষুদ্রঋণ সরবরাহ, বিশেষত কৃষি অর্থায়নে জড়িত। বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলি তাদের শাখা নেটওয়ার্কের মাধ্যমে প্রধান কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। পক্ষান্তরে বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক লি. এবং কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংকসমূহের প্রত্যেকটি স্ব স্ব ক্ষেত্রে এক একটি স্বতন্ত্র ব্যাংক হিসেবে পৃথক পৃথক এলাকায় স্বতন্ত্র পরিচালনা বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। সমবায় ব্যাংকগুলি সমবায় ভিত্তিতে গঠিত, সমবায় আইনের অধীনে সমবায়ী সদস্যদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এবং সমবায় সমিতিসমূহের নিবন্ধক কর্তৃক নিরীক্ষিত হয়ে থাকে। অপরদিকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলি ব্যাংক কোম্পানি আইনের অধীনে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত এবং সরকার কর্তৃক নিয়োজিত বহির্নিরীক্ষক কর্তৃক নিরীক্ষিত হয়ে থাকে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলি নিয়মাচার পালন সাপেক্ষে জনসাধারণের নিকট ঋণ বিনিয়োগ করতে পারে এবং আমানত গ্রহণ করতে পারে। এদের ব্যাংকিং ও ঋণদান নীতিমালা অনেক ব্যাপক। তবে বাণিজ্যিক ব্যাংকের ঋণগ্রহীতারা ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণে কোন ভূমিকা রাখে না। পক্ষান্তরে সমবায় ব্যাংকসমূহ শুধু সদস্যদের মধ্যে সমবায় আইন এবং সমবায় বিভাগের ঋণনীতিসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশ অনুযায়ী ঋণ প্রদান করতে পারে এবং সদস্যদের নিকট হতে আমানত গ্রহণ করতে পারে। ঋণগ্রহীতাগণ ব্যাংকের সদস্য বিধায় সমবায় ব্যাংকের পরিচালনার ক্ষেত্রে তাদের অংশগ্রহণ এবং ভূমিকা/বক্তব্য থাকে।

ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১-এর বিধান অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক সমবায় ব্যাংকসমূহের কার্যক্রম পরিদর্শন ও নিয়ন্ত্রণ করে।

বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংকের আর্থিক কার্যক্রম
বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংকের বিগত কয়েক বছরের আর্থিক কার্যক্রমের একটি চিত্র নিম্নে উপস্থাপন করা হলো।
১) বছর-১৯৯৩-৯৪, ঋণদান-৩.৭৮, ঋণ-৩.৯৯, মোট আয়-৪.১৫, মোট ব্যয়-১.৪৭, নীট মুনাফা-২.৬৮, সদস্য সংখ্যা-৪৬৫
২) বছর-১৯৯৪-৯৫, ঋণদান- ৪.৩৬, ঋণ-৪.৮১, মোট আয়-৭.১৪, মোট ব্যয়-৩.১৩, নীট মুনাফা-৪.০০, সদস্য সংখ্যা-৪৬৮
৩) বছর-১৯৯৫-৯৬, ঋণদান-৪.১৮, ঋণ-৩.৮৯, মোট আয়-৪.৩৯, মোট ব্যয়-১.৫৩, নীট মুনাফা-২.৬৮, সদস্য সংখ্যা-৪৭৪
৪) বছর-১৯৯৭-৯৮, ঋণদান-৫.৭১, ঋণ-৪.৭৯, মোট আয়-৫২.৮৮, মোট ব্যয়-৩৮.২৪, নীট মুনাফা-১৪.৬৩, সদস্য সংখ্যা-৪৮২
উৎস সংশ্লিষ্ট বছরসমূহের বার্ষিক রিপোর্ট, বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক লিমিটেড।

যোগাযোগ
বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক লিমিটেড (বিএসবিএল)
প্রধান কার্যালয়ঃ ৯-ডি, মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০
ফোন নম্বর- ০২৯৫৯০৮৮৯
ফ্যাক্স নম্বর- ৯৫৫৮১১৭
ইমেইলঃ bdbsbl_bank@yahoo.com; bsblrdcd@gmail.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button