এজেন্ট ব্যাংকিং

এজেন্টরা লেনদেন ব্যবস্থা বদলে দেবে: মাসরুর আরেফিন

বেসরকারি খাতের ব্যাংক দি সিটি ব্যাংক লিমিটেড এর এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বর্তমানে বিভিন্ন জায়গায় এই ব্যাংকের প্রায় দেড় হাজার এজেন্ট রয়েছে। এই সেবা নিয়ে কথা বলেছেন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন।

প্রশ্ন: এজেন্ট ব্যাংকিং সেবায় কেমন করছে সিটি ব্যাংক?
মাসরুর আরেফিন: এজেন্ট ব্যাংকিং বাজারে আমরা বড় কোনো অংশ নই। এই সেবায় অনেক পরে এসেছি। তবে খুব দ্রুত এগোচ্ছি। এখন পর্যন্ত এই ব্যবসায় আমাদের মুনাফা হচ্ছে না। তবে ব্যবসা আরও ১০ গুণ বাড়াতে পারলে ভালো মুনাফা হবে। এমনকি অন্য ব্যবসা থেকেও বেশি মুনাফা করা সম্ভব। আমরা সেভাবেই কৌশল ঠিক করেছি, যাতে এ বছরে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবার একটি বড় অংশ পাওয়া যায়।

প্রশ্ন: করোনার মধ্যে এই সেবায় বড় প্রবৃদ্ধি হয়েছে। সিটি ব্যাংকের অবস্থা কী?
মাসরুর আরেফিন: ২০২০ সালের শুরুতে আমাদের এই সেবায় গ্রাহক ছিল হিসাব ৭৭ হাজার, যা বেড়ে এখন ১ লাখ ৬০ হাজার হয়েছে। সিটি ব্যাংকের সব শাখা মিলে বছরে দেড় লাখ হিসাব খুলেছে। আর এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে নতুন হিসাব খোলা হয়েছে ৮৩ হাজার। গত বছরে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আমানত সংগ্রহের পরিমাণ ১৩০ কোটি টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৬৫ কোটি টাকা। করোনাকালের এসব পরিসংখ্যান থেকে বোঝা যায়, নতুন এই সেবা কতটা গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে।

প্রশ্ন: ব্যাংকের শাখা থেকে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবায় বেশি প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। এই সেবার ভবিষ্যৎ কেমন?
মাসরুর আরেফিন: আমরা ছোট ও ক্ষুদ্রঋণের সঙ্গে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা যুক্ত করে দিয়েছি। ফলে এজেন্টরা গত এক বছরে ২ হাজার ১৪৩ গ্রাহককে ২৩৬ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। এজেন্টরা এখন সাধারণ মানুষের কাছে বড় আকর্ষণ। কারণ, দেশের অসংখ্য মানুষ কিছু না কিছু করছেন। কেউ হাঁস-মুরগি পালন করছেন, কেউ দোকান বা ছোট ব্যবসা করছেন। তাঁদের তো ঋণের প্রয়োজন।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

আবার অনেকেই বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানে টাকা রাখতে চান। সে ক্ষেত্রে এজেন্টদের কাছে টাকা জমা রাখছেন। আবার গ্রাহকেরা ঋণও পাচ্ছেন, আবার তা শোধও করছেন। বড় কথা হলো, মানুষ এখন বাড়ির পাশেই এসব সেবা পাচ্ছেন। তাই সেবাগুলোয় ভালো প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। এজেন্ট ব্যাংকিং আমানতে খরচ কম। ফলে আমরা বড় অঙ্কের মুনাফা পাব। অন্য আমানতে যেখানে খরচ সাড়ে ৫ শতাংশ, সেখানে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে তা আড়াই শতাংশ। ১ শতাংশ কম খরচ মানে অনেক বড় মুনাফা। তাই সব ব্যাংক এদিকে জোর দিচ্ছে।

প্রশ্ন: এজেন্ট ব্যাংকিং সেবায় নতুন কী উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে?
মাসরুর আরেফিন: আমরা অ্যাসিস্টেড মডেল চালু করতে যাচ্ছি। এর ফলে কারও সহায়তা নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে এজেন্ট ব্যাংকিং হিসাব খোলা যাবে। এটা চালু হলে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবায় আরও ভালো প্রবৃদ্ধি হবে। এ ছাড়া টেলিকম ও বড় এফএমসিজিগুলোর মাধ্যমে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা দিতে চাই। এর ফলে একসঙ্গে অনেক এজেন্ট হয়ে যাবে। এ জন্য শিগগির কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আবেদন করা হবে।

সামনে এজেন্টদের দিয়ে লেনদেন ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা করছি। এজেন্ট পয়েন্টে আমরা কিউআর কোড ও পয়েন্ট অব সেলস (পিওএস) যন্ত্র দেব। এজেন্টদের দিয়ে আমরা ক্রেডিট কার্ড সেবা চালু করব। আর হিসাব খুললে ডেবিট কার্ড তো দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে গ্রামেও কার্ডের ব্যবহার বাড়বে। নগদ টাকার ব্যবহার কমবে। ছোট ছোট লেনদেনও ডিজিটাল মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। এভাবে একদিন ডিজিটাল পদ্ধতির লেনদেন অনেক বেড়ে যাবে। লেনদেন ব্যবস্থায় চেঞ্জমেকার হবে এজেন্টরা। চীনের গ্রামগুলোতে যেভাবে ডিজিটাল মাধ্যমে ছোট ছোট লেনদেন হচ্ছে, বাংলাদেশেও একদিন তা হবে।

সোর্সঃ প্রথম আলো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button