প্রেফারেন্স শেয়ারের সুবিধা ও অসুবিধাসমূহ
অনেক সময় বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজার সম্পর্কে না জেনেই শেয়ার ব্যবসা শুরু করে থাকে। যা বিনিয়োগকারীদের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই প্রত্যেক বিনিয়োগকারীর উচিত প্রথমে শেয়ারবাজার সর্ম্পকে জানা। বিনিয়োগকারীর দৃষ্টিকোণ থেকে প্রেফারেন্স বা অগ্রাধিকার শেয়ারের কিছু সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে। যা নিম্নে তুলে ধরা হলো।
প্রেফারেন্স বা অগ্রাধিকার শেয়ারের সুবিধা ও অসুবিধা
বিনিয়োগকারীর দৃষ্টিকোণ থেকে প্রেফারেন্স বা অগ্রাধিকার শেয়ারের কিছু সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে। নিম্নে সেগুলো আলোচনা করা হলো-
প্রেফারেন্স বা অগ্রাধিকার শেয়ারের সুবিধা
নিম্নে প্রেফারেন্স বা অগ্রাধিকার শেয়ারের সুবিধাসমূহ তুলে ধরা হলো-
১. নির্দিষ্ট হারে আয়ঃ প্রেফারেন্স বা অগ্রাধিকার শেয়ার মালিকদেরকে নির্দিষ্ট হারে লভ্যাংশ প্রদান করা হয়। ফলে এদের আয় সাধারনত নিশ্চিত থাকে।
২. লভ্যাংশের উপর অগ্রাধিকারঃ লভ্যাংশ প্রদানের সময় প্রেফারেন্স বা অগ্রাধিকার শেয়ার মালিকদেরকে সাধারণ শেয়ার মালিকদের চেয়ে অগ্রাধিকার প্রদান করা হয়। সবার আগে এদেরকে লভ্যাংশ প্রদান করা হয়।
৩. সম্পদের উপর দাবিঃ কোম্পানি অবসায়ন বা বিলুপ্তির সময় সম্পদের উপর প্রেফারেন্স বা অগ্রাধিকার শেয়ার মালিকদের দাবি সাধারণ শেয়ার মালিকদের দাবির পূর্বে পরিশোধ করা হয়। তবে ঋণপত্রের মালিকদের দাবির পূরণ করার পর এদের দাবি পূরণ করা হয়।
৪. সম্পদের উপর কোন চার্জ ধার্য করা হয় নাঃ প্রেফারেন্স বা অগ্রাধিকার শেয়ারে কোম্পানির সম্পদের উপর কোনও চার্জ সৃষ্টি করে না। ভবিষ্যতে ঋণ বৃদ্ধির জন্য কোম্পানি তার স্থায়ী সম্পদগুলো মুক্ত রাখতে পারে।
৫. কোন হস্তক্ষেপ নেইঃ আগেই জেনেছি, প্রেফারেন্স বা অগ্রাধিকার শেয়ারের কোনও ভোটের অধিকার নেই, তাই কোম্পানি কোনও হস্তক্ষেপ ছাড়াই তাদের মূলধন বাড়াতে পারে। ইক্যুইটি শেয়ার হোল্ডাররা শুধুমাত্র একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে পারে কোম্পানির উপর।
৬. নমনীয়তাঃ একটি কোম্পানি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পরিশোধযোগ্য শেয়ারগুলো ইস্যু করতে পারে। যখন ব্যবসার প্রয়োজন হয় না, তখন পুঁজি পরিশোধ করা যেতে পারে।
ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন। |
৭. ইক্যুইটির উপর ট্রেডিংঃ প্রেফারেন্স বা অগ্রাধিকার শেয়ারের লভ্যাংশের হার নির্দিষ্ট করা হয়। কোম্পানির উপার্জন বৃদ্ধির সঙ্গে, ইক্যুইটি শেয়ারহোল্ডারদের ইক্যুইটির উপর ট্রেডিং এর সুবিধা প্রদান করে।
৮. শেয়ার ইস্যুঃ বিনিয়োগকারীদের চাহিদার উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ধরণের শেয়ার ইস্যু করা যেতে পারে। অংশগ্রহণকারী প্রেফারেন্স বা অগ্রাধিকার শেয়ার এবং রূপান্তরিত প্রেফারেন্স বা অগ্রাধিকার শেয়ার বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার জন্য ইস্যু করা যেতে পারে।
প্রেফারেন্স বা অগ্রাধিকার শেয়ারের অসুবিধা
নিম্নে প্রেফারেন্স বা অগ্রাধিকার শেয়ারের অসুবিধাসমূহ তুলে ধরা হলো-
১. নিয়ন্ত্রণঃ প্রেফারেন্স বা অগ্রাধিকার শেয়ার মালিকদের কোনো ভোটাধিকার প্রয়োগ করার অধিকার থাকে না। ফলে এরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করে কোম্পানির উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারে না।
২. সীমিত আয়ঃ প্রেফারেন্স বা অগ্রাধিকার শেয়ার মালিকদের আয় সীমিত। কারণ এদেরকে নির্দিষ্ট হারে লভ্যাংশ প্রদান করা হয়ে থাকে।
৩. লো রিটার্নঃ কোম্পানি যখন উচ্চ হারে উপার্জন করে থাকে, শেয়ারের উপর নির্দিষ্ট লভ্যাংশ অযৌক্তিক হয়ে যেতে পারে। প্রেফারেন্স বা অগ্রাধিকার শেয়ার হোল্ডারদের কোম্পানির সমৃদ্ধির উপর অংশগ্রহণ করার অধিকার নেই।
৪. কোম্পানির উপর আর্থিক বোঝাঃ যৌথ প্রেফারেন্স বা অগ্রাধিকার শেয়ারের ক্ষেত্রে, কোম্পানি যখন মুনাফা অর্জন করে তখন বকেয়া লভ্যাংশ প্রদেয় হয়, যা কোম্পানির উপর একটি বিশাল আর্থিক বোঝা সৃষ্টি করে।
৫. দায়িত্বঃ প্রেফারেন্স বা অগ্রাধিকার শেয়ারগুলোতে লভ্যাংশ নির্দিষ্ট হারে প্রদেয় হয়। এছাড়াও ইক্যুইটি শেয়ারের উপর কোন লভ্যাংশ প্রদান করার আগে প্রদেয় করতে হয়। কিউমুলেটিভ প্রেফারেন্স বা অগ্রাধিকার শেয়ারের ক্ষেত্রে দায়িত্ব আরও বেশি, কারণ লভ্যাংশের সংযোজিত বকেয়া পরিশোধ করতে হবে।