ব্যাংক

ব্যাংকের প্রকারভেদ বা শ্রেণীবিভাগ

ব্যাংকিং নিউজ বাংলাদেশঃ একটি দেশে কার্যরত অবস্থায় বিভিন্ন ধরনের ব্যাংকিং প্রতিষ্টান দেখা যায়। এক এক প্রকার ব্যাংক এক এক ধরনের ব্যাংকিং কার্য সম্পাদন করে থাকে। এগুলিকে Operational Banking বলা হয়। কাজের প্রকৃতি ও ধরন অনুযায়ী যখন ব্যাংককে বিভক্ত করা হয়, তখন তাকে ব্যাংকের কার্যভিত্তিক শ্রেণীবিভাগ বলা হয়। কাঠামো, মালিকানাভিত্তিক, সংগঠনভিত্তিক, নিবন্ধনভিত্তিক, অঞ্চলভিত্তিক ও নিয়ন্ত্রণভিত্তিক ব্যাংকিং ব্যবসাকে নিম্নোক্তভাবে ভাগ করা যায়-

১. Structural Classification of Bank (কাঠামোভিত্তিক ব্যাংকের শ্রেণীবিভাগ)
ব্যাংকের কাঠামোর ভিত্তিতে ব্যাংককে নিম্নোক্তভাবে শ্রেণীবদ্ধ করা যায়:-

ক. Unit Banking (একক ব্যাংকিং)
যে ব্যাংক একটি মাত্র অফিসের মাধ্যমে ব্যাংকিং কার্য পরিচালনা করে তাকে একক ব্যাংকিং বলে। বাংলাদেশে কোন একক ব্যাংক নেই। এ ব্যাংকগুলো প্রধানত এক মালিকানা সংগঠন হিসেবে গড়ে ওঠে। যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ ব্যাংক একক ব্যাংক।

খ. Branch Banking (শাখা ব্যাংকিং)
যে বৃহদায়তন ব্যাংক অনেকগুলো শাখার মাধ্যমে ব্যাংকিং কার্য পরিচালনা করে তাকে শাখা ব্যাংকিং বলে। বাংলাদেশের সবগুলো ব্যাংক শাখা ব্যাংক।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।
রিলেটেড লেখা

অন্য কথায়- যে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় একটি প্রধান কার্যালয়ের অধীনে দেশে-বিদেশে শাখা প্রতিষ্ঠা করে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় এবং শাখা অফিসগুলো প্রধান অফিসের নির্দেশ ও নিয়ম-কানুন মেনে চলতে বাধ্য থাকে তাকে শাখা ব্যাংক বা শাখা ব্যাংকিং বলে।

গ. Chain Banking (চেইন ব্যাংকিং)
যখন একই শ্রেণীভুক্ত কতিপয় ব্যাংক বৃহদায়তন ব্যাংকিং-এর সুবিধা ভোগের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়ে নিজ নিজ সত্তা বজায় রেখে সমঝোতা ও সহযোগিতার ভিত্তিতে ব্যাংকিং কার্য পরিচালনা করে, তখন তাকে চেইন ব্যাংকিং বলে। বাংলাদেশে এ ধরনের ব্যাংক নেই।

ঘ. Group Banking (গ্রুপ ব্যাংকিং)
যেকোন সমজাতীয় কতিপয় দুর্বল ব্যাংক একটি শক্তিশালী ব্যাংকের অধীনে জোটবদ্ধ হয়ে ব্যাংকিং কার্য পরিচালনা করে তখন তাকে গ্রুপ ব্যাংকিং বলে। যে ব্যাংকের অধীনে অন্যান্য ব্যাংকগুলো সংঘবদ্ধ হয়, তাকে ধারক বা হোল্ডিং কোম্পানি ব্যাংক বলে। পক্ষান্তরে জোটভুক্ত ব্যাংকগুলোকে সাবসিডিয়ারি বা অধীনস্থ ব্যাংক বলা হয়।

অন্য কথায়- যে ব্যাংক ব্যবস্থায় কোনো একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান একই ধরনের কতকগুলো ছোট ব্যাংক গঠন করে বা একাধিক ব্যাংকের অধিকাংশ শেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমে তাদের নিয়ন্ত্রণভার গ্রহণ করে সমন্বিত ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে তাকে গ্রুপ ব্যাংক বলে।

ঙ. Merchant Bank (মার্চেন্ট ব্যাংক)
বিনিময় ব্যাংকিং ও বিনিয়োগ ব্যাংকিং এর সংমিশ্রণে গড়ে ওঠা ব্যাংককেই মার্চেন্ট ব্যাংক বলে। বৈদেশিক বাণিজ্যে এসব ব্যাংক গ্রাহকদের পক্ষে প্রত্যয়পত্র ইস্যু, রপ্তানিকারক কর্তৃক উত্থাপিত বিলে স্বীকৃতি দান ও বিলের অর্থ পরিশোধ করে। মার্চেন্ট ব্যাংক দীর্ঘমেয়াদে ঋণ দেয়, যৌথ উদ্যোগে অর্থ বিনিয়োগ করে এবং অবলেখকের দায়িত্ব পালন করে থাকে।

চ. Mixed Banking (মিশ্র ব্যাংকিং)
জনগণের কাছ থেকে বিভিন্ন হিসাবের মাধ্যমে আমানত সংগ্রহের মাধ্যমে আমানত ব্যাংকিং এবং শিল্প প্রতিষ্ঠান সমূহে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের মাধ্যমে বিনিয়োগ ব্যাংকিং এর সমন্বয়ে যে নতুন ব্যাংকিং ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে তাকেই মিশ্র ব্যাংক বলে।

২. Functional Classification of Bank (কার্যভিত্তিক ব্যাংকের কার্যভিত্তিক শ্রেণীবিভাগ)
ব্যাংকের কার্যাবলির ভিত্তিতে ব্যাংককে নিম্নোক্তভাবে শ্রেণীবদ্ধ করা যায়:-

ক. Central Bank (কেন্দ্রীয় ব্যাংক)
কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের সব ব্যাংকের মুরব্বি পরিচালক নিয়ন্ত্রক৷ গোটা ব্যাংকিং ব্যবস্থার প্রাণকেন্দ্র৷ মুদ্রা বাজারকে সুসংগঠিত আকারে পরিচালিত করার উদ্দেশ্যেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক গঠিত হয়েছে৷ সাধারণত মুদ্রা প্রচলন, অর্থ সরবরাহ, তথা ঋণ নিয়ন্ত্রণের বিশেষ ক্ষমতা ও দায়িত্বে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়োজিত৷ যেমন- বাংলাদেশ ব্যাংক, ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেম।

খ. Commercial Bank (বাণিজ্যিক ব্যাংক)
সাধারণভাবে ব্যাংকিং বলতে বাণিজ্যিক ব্যাংকিংকে বুঝানো হয়। বাণিজ্যিক ব্যাংক একটি মুনাফাকেন্দ্রিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান। যে আর্থিক প্রতিষ্ঠান মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে স্বল্পমেয়াদী ঋণ নিয়ে কারবার করে, সেই আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে বাণিজ্যিক ব্যাংক বলে। বাণিজ্যিক ব্যাংকের কার্যাবলিই বাণিজ্যিক ব্যাংকিং। বাণিজ্যিক ব্যাংক ব্যাংকি কোম্পানি আইন অনুযায়ী গঠন করা হয়ে থাকে। যেমন- সোনালী ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক।

গ. Agricultural Bank (কৃষি ব্যাংক)
কৃষি ক্ষেত্রে উন্নয়নের লক্ষ্যে কৃষকগণকে বিভিন্ন মেয়াদের ঋণ প্রদানসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে যে ব্যাংক কাজ করে তাকে কৃষি ব্যাংক বলে৷ এটি একটি বিশেষায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠান৷ যেমন- বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক৷

ঘ. Industrial Bank (শিল্প ব্যাংক)
দেশের শিল্প খাত উন্নয়নের জন্যে যে ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয় তাকে শিল্প ব্যাংক বলে৷ যন্ত্রপাতি সংগ্রহ, ভূমি ক্রয়, কারখানা নির্মাণ ইত্যাদির জন্য শিল্প ব্যাংক ঋণ প্রদান করে থাকে। বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক শিল্প ব্যাংক নামে পরিচিত।

ঙ. Exchange Bank (বিনিময় ব্যাংক)
বৈদেশিক লেনদেন নিষ্পত্তি ও বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ের জন্য যে ব্যাংক গঠিত হয় তাকে বিনিময় ব্যাংক বলে৷ বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় রপ্তানি ইত্যাদি এ সকল ব্যাংকের কাজ৷

চ. Investment Bank (বিনিয়োগ ব্যাংক)
বিনিয়োগ ব্যাংক নবগঠিত শিল্প-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণ প্রদান ব্রিজ ফাইন্যান্স ডিফেন্স ফাইন্যান্স সহ বিভিন্ন পরামর্শমূলক কার্যাদি সম্পাদন করে থাকে৷

ছ. Savings Bank (সঞ্চয়ী ব্যাংক)
জনগণের অর্থ সঞ্চয় হিসেবে গ্রহণ ও মুনাফা বা সুদ প্রদানের মাধ্যমে জনগণকে অধিক সঞ্চয়ে উৎসাহিত করে যে ব্যাংক গঠিত হয় তাকে সঞ্চয়ী ব্যাংক বলে৷

জ. Mortgage Bank (বন্ধকি ব্যাংক)
ভূমি বা জমি বন্ধক রেখে কৃষি ও শিল্পের প্রয়োজনে দীর্ঘমেয়াদে যে ব্যাংক ঋণ প্রদান করে থাকে তাকে বন্ধকী ব্যাংক বলে৷

ঝ. Transport Bank (পরিবহন ব্যাংক)
পরিবহন শিল্পের উন্নয়নের লক্ষ্যে যে বিশেষায়িত ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয় তাকে পরিবহন ব্যাংক বলে৷ এই সকল ব্যাংক যানবাহন নির্মাণ, যন্ত্রাংশ আমদানি ইত্যাদির জন্য ঋণ সরবরাহ করে থাকে৷

ঞ. Small and Cottage Industry Bank (ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প ব্যাংক)
ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করে শিল্পায়ন উন্নত করার জন্য ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে অর্থায়ন করার জন্য যে ব্যাংক গড়ে ওঠে তাকে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প ব্যাংক বলে৷

ট. Import-Export Bank (আমদানি-রপ্তানি ব্যাংক)
আমদানী-রপ্তানী বানিজ্যে সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যে যে ব্যাংক গঠিত হয় তাকে আমদানি-রপ্তানি ব্যাংক বলা হয়৷ আমদানির জন্য ঋণ সরবরাহ, এলসি সুবিধা ইত্যাদি উদ্দেশ্যে এ ব্যাংক কাজ করে থাকে৷

৩. Organizational Classification of Bank (ব্যাংকের সংগঠনভিত্তিক শ্রেণীবিভাগ)
ব্যাংকের সংগঠন এর ভিত্তিতে ব্যাংককে নিম্নোক্তভাবে শ্রেণীবদ্ধ করা যায়:-

ক. Single Ownership Bank (একক মালিকানা ব্যাংক)
একক উদ্যোগে ও পুঁজিতে এবং একক ব্যক্তি বা এক মালিকানা দ্বারা পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত ব্যাংককে একক মালিকানা ব্যাংক বলে৷

খ. Partnership Bank (অংশীদারি ব্যাংক)
অংশীদারি আইনের ভিত্তিতে যে ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয় তাকে অংশীদারি ব্যাংক বলে৷ ১৯৩২ সালের অংশীদারি আইন দ্বারা প্রণীত, সদস্য ১-১০ জনের মধ্যে থাকতে হয়।

গ. Joint Ownership Bank (যৌথ মালিকানা ব্যাংক)
কোম্পানি আইনের আওতায় যে ব্যাংকের মূলধন গঠিত হয় এবং পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয় তাকে যৌথ মালিকানা ভিত্তিক ব্যাংক বলে৷ ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইন এবং ১৯৯১ সালের ব্যাংকিং আইন দ্বারা এই সকল ব্যাংক গঠিত। যেমন- বাংলাদেশের সকল বাণিজ্যিক ব্যাংক।

ঘ. Specialized Bank (বিশেষায়িত ব্যাংক)
যে ব্যাংক গ্রাহকদের প্রয়োজন ও অর্থনীতির বিশেষ কোনো দিক নিয়ে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে, তাকে বিশেষায়িত বাংক বলে। যেমন বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক।

ঙ. Cooperative Bank (সমবায় ব্যাংক)
সমবায়ের নীতি ও আইন অনুযায়ী যে ব্যাংক গঠিত ও পরিচালিত হয় তাকে সমবায় ব্যাংক বলে৷ সমবায় আইন দ্বারা গঠিত। যেমন- রাজশাহী কো-অপারেটিভ ব্যাংক।

চ. State Bank (রাষ্ট্রীয় ব্যাংক)
পুরোপুরিভাবে সরকারি মালিকানা ও পরিচালনার জন্য যে সকল ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয় তাকে রাষ্ট্রীয় বা সরকারি ব্যাংক বলে৷ অর্থাৎ যে ব্যাংকের মালিক রাষ্ট্র। যেমন- সোনালী ব্যাংক।

৪. Ownership Based Classification of Bank (ব্যাংকের মালিকানাভিত্তিক শ্রেণীবিভাগ)
ব্যাংকের মালিকানার ভিত্তিতে ব্যাংককে নিম্নোক্তভাবে শ্রেণীবদ্ধ করা যায়:-

ক. Government Bank (সরকারি ব্যাংক)
সরকারি উদ্যোগে গঠিত ও সরকারি অর্থে পুঁজি সংগৃহীত, পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত ব্যাংককে সরকারি ব্যাংক বলে৷ অর্থাৎ যে সকল ব্যাংকের সংগঠন, নিয়ন্ত্রক ও মালিক সরকার। যেমন- সোনালী ব্যাংক৷

খ. Private Bank (বেসরকারি ব্যাংক)
ব্যক্তি মালিকানায়, যৌথ মালিকানায় বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত, পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত ব্যাংককে বেসরকারি ব্যাংক বলে৷ যেমন- পূবালী ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক৷

গ. NGO Bank (এনজিও ব্যাংক)
গ্রামীণ ব্যাংক এ ধরনের একটি ব্যাংক৷ গতানুগতিক ব্যাংক জামানত ব্যতীত ঋণ দিতে পারত না বলে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের দরিদ্র জনগণ ব্যাংক সেবা বা ঋণ পেতে পারত না। গ্রামীণ ব্যাংক তাদেরকে জামানতবিহীন ঋণ সৃষ্টি করে থাকে৷

ঘ. Autonomous Bank (স্বায়ত্বশাসিত ব্যাংক)
যে ব্যাংক সরকারের বিশেষ আইন বলে ও সংবিধানের বিশেষ অধ্যাদেশের মাধ্যমে গঠিত হয় এবং যা স্ব-নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় স্বাধীনভাবে পরিচালিত হয় তাকে স্বায়ত্তশাসিত ব্যাংক বলে। যেমন- কৃষি ব্যাংক, শিল্প ব্যাংক।

ঙ. Partial Bank (আংশিক ব্যাংক)
আংশিক তহবিল ব্যাংক এমন এক ধরনের ব্যাংক যাতে ব্যাংকসমূহ তাদের ডিপোজিটের অংশবিশেষ তহবিলে বা রিজার্ভে রাখে এবং বাকীটুকু ধার দিয়ে দেয়। তবে চাহিদার সময় ব্যাংককে সমস্ত ডিপোজিট ফেরত দিতে হয়। এই পদ্ধতিটি সারা বিশ্বজুড়ে প্রচলিত এবং এটিই প্রামাণ্য ব্যাংকিং ব্যবস্থা হিসেবে স্বীকৃত।

চ. Foreign Owned Bank (বিদেশি মালিকানাধীন ব্যাংক)
যখন কোন ব্যাংক এক দেশে নিবন্ধিত কিন্তু অন্য দেশে এসে ব্যবসা পরিচালনা করে থাকে তখন তাকে বিদেশী ব্যাংক বলে৷ অর্থাৎ বিদেশি মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত ব্যাংককে বিদেশী ব্যাংক বলা হয়৷ যেমন- স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক৷

ছ. Government-Private Joint Venture Bank (সরকারি-বেসরকারি যৌথ মালিকানার ব্যাংক)
সরকারি ও বেসরকারি উভয় মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত যে ব্যাংক তাকে যৌথ মালিকানার ব্যাংক বলে৷ অর্থাৎ যে সকল ব্যাংকের ৫১% বা তার অধিক শেয়ার সরকারের, ৪৯% বা তার কম শেয়ার বেসরকারি। যেমন- বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক লিমিটেড।

৫. Region Based Classification of Bank (ব্যাংকের অঞ্চলভিত্তিক শ্রেণীবিভাগ)
ব্যাংকের অঞ্চল ভিত্তিতে ব্যাংককে নিম্নোক্তভাবে শ্রেণীবদ্ধ করা যায়:-

ক. Regional Bank (আঞ্চলিক ব্যাংক)
কোন একটি নির্দিষ্ট অঞ্চল বিশেষ এর কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যখন কোন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হয় তখন তাকে আঞ্চলিক বা রিজিওনাল ব্যাংক বলে৷ যেমন- ADB (Asian Development Bank), রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক৷

খ. National Bank (জাতীয় ব্যাংক)
কোন একটি দেশের মধ্য থেকে ব্যাংকিং ব্যবসা পরিচালনা করলে তাকে জাতীয় বা ন্যাশনাল ব্যাংক বলে৷ যেমন- অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড৷

গ. International Bank (আন্তর্জাতিক ব্যাংক)
একটি দেশের জাতীয় সীমানার গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যাংকিং ব্যবসা পরিচালনা করার উদ্দেশ্যে যে ব্যাংকের শাখা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিস্তৃত তাকে আন্তর্জাতিক বা ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংক বলে৷ যেমন- WB (World Bank), IMF (International Monetary Fund)।

৬. Registration Based Classification of Bank (ব্যাংকের নিবন্ধনভিত্তিক শ্রেণীবিভাগ)
ব্যাংকের নিবন্ধন এর ভিত্তিতে ব্যাংককে নিম্নোক্তভাবে শ্রেণীবদ্ধ করা যায়:-

ক. Domestic Bank (দেশি ব্যাংক)
দেশের ব্যাংকিং আইনের আওতায় যে সকল ব্যাংক প্রতিষ্ঠা ও পরিচালিত হয় তাকে দেশি ব্যাংক বলে৷ যেমন- অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড৷

খ. Foreign Bank (বিদেশি ব্যাংক)
যখন কোন ব্যাংক এক দেশে নিবন্ধিত কিন্তু অন্য দেশে এসে ব্যবসা পরিচালনা করে থাকে তখন তাকে বিদেশী ব্যাংক বলে৷ অর্থাৎ বিদেশি মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত ব্যাংককে বিদেশী ব্যাংক বলা হয়৷ যেমন- স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক৷

৭. Special Client Based Based Classification of Bank (ব্যাংকের বিশেষ মক্কেলভিত্তিক শ্রেণীবিভাগ)
ব্যাংকের বিশেষ মক্কেল বা গ্রাহক এর ভিত্তিতে ব্যাংককে নিম্নোক্তভাবে শ্রেণীবদ্ধ করা যায়:-

ক. Labor Bank (শ্রমিক ব্যাংক)
শ্রমিকদের মধ্যে সঞ্চয়ের মানসিকতা সৃষ্টি করে তাদের জীবন ধারণের মানোন্নয়নের লক্ষ্যে যে সকল ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয় তাকে শ্রমিক ব্যাংক বলে৷ তবে বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ভাবে কোন শ্রমিক ব্যাংক নেই৷

খ. Women Bank (মহিলা ব্যাংক)
মহিলাদের মধ্যে সঞ্চয়ের মন মানসিকতা তৈরি করার জন্য ও তাদেরকে ব্যাংকিং কার্যক্রমের সাথে পরিচিত করা এবং বিশেষভাবে ব্যাংকিং সুবিধা প্রদান করার জন্য যে সকল ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয় তাদেরকে মহিলা ব্যাংক বলে৷ তবে বাংলাদেশে কোন মহিলা ব্যাংক নেই৷

গ. School Bank (স্কুল ব্যাংক)
স্কুলের শিক্ষার্থীদের সঞ্চয় এর মন মানসিকতা তৈরী ও শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ধরনের সেবা প্রদানের জন্য যে সকল ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়ে থাকে তাদেরকে স্কুল ব্যাংক বলে৷ বাংলাদেশের স্বতন্ত্র কোন স্কুল ব্যাংক নেই তবে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকগুলো ছাত্রদের বিভিন্ন ধরনের ব্যাংকিং সেবা দিয়ে থাকে৷

ঘ. Consumer Bank (ভোক্তা ব্যাংক)
ভোক্তাদের বাকিতে পণ্য ক্রয়ের সুবিধা প্রদানের জন্য এ সকল ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত হয়৷ ব্যাংক তার গ্রাহককে একটি কার্ড সরবরাহ করে যার নাম ক্রেডিট কার্ড এবং এর দ্বারা ভোক্তা বাকিতে বাজার থেকে পণ্য ক্রয় করতে পারে৷

৮. Control Based Classification of Bank (ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণভিত্তিক শ্রেণীবিভাগ)
ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ ভিত্তিতে ব্যাংককে নিম্নোক্তভাবে শ্রেণীবদ্ধ করা যায়:-

ক. Full State Controlled Bank (পূর্ণ রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রিত ব্যাংক)
যে সকল ব্যাংকের কার্যক্রম পুরোপুরি সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয় তাকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রিত ব্যাংক বলে৷

খ. Partially Controlled Bank (আংশিক নিয়ন্ত্রিত ব্যাংক)
যে সকল ব্যাংকের কার্যক্রম আংশিকভাবে সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত এবং আংশিক ব্যাংকের নিজস্ব নীতির অধীনে নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয় তাকে আংশিক নিয়ন্ত্রিত ব্যাংক বলে৷

গ. Market Controlled Bank (বাজার নিয়ন্ত্রিত ব্যাংক)
এ ধরনের ব্যাংক এর উপর সরকার বা অন্য কোন কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ নেই৷ বাজার অর্থনীতিতে সাধারণত এ ধরণের ব্যাংক গড়ে ওঠে৷

৯. Religious Perspective Based Classification of Bank (ব্যাংকের ধর্মীয় দৃষ্টিকোণভিত্তিক শ্রেণীবিভাগ)
ব্যাংকের ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাংককে নিম্নোক্তভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায়:-

বিভিন্ন ধর্ম তাদের ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ধর্মীয় অনুশাসন প্রকল্পে যে সকল ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে থাকে তাদেরকে ধর্মীয় বলে৷ যেমন- IDB (Islamic Development Bank)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button