বৈদেশিক মুদ্রায় লেনদেনের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিধি বিধান
ব্যাংকিং নিউজ বাংলাদেশঃ বিভিন্ন খাতে বৈদেশিক মুদ্রা (Foreign Currency) লেনদেনের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিধিব্যবস্থাদি গ্রহণ প্রসঙ্গে প্রায়শঃ জিজ্ঞাসিত বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব।
১. বাংলাদেশি নিবাসী/অনিবাসী কারা?
উত্তরঃ ক. সচরাচর বাংলাদেশে বসবাসকারী/বিগত এক বছরে অন্যূন ৬ মাস বাংলাদেশে অবস্থানকারী অথবা নিবাসী পরিচয়ে বাংলাদেশে করদাতা ব্যক্তিরা বাংলাদেশী নিবাসী গণ্য হন; বাংলাদেশ প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা/কর্মচারীরা বিদেশে দায়িত্ব পালন বা ছুটি যাপনকালেও বাংলাদেশী নিবাসী গণ্য থাকেন।
খ. উপর্যুক্ত বর্ণনা ভুক্ত নন এমন বিদেশি জাতীয়তার ব্যক্তিবর্গ এবং বাংলাদেশ প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারী নন এমন বাংলাদেশী নাগরিকগণ বিদেশে থাকাকালীন সময়ে বাংলাদেশে অনিবাসী গণ্য হন৷
২. বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয়ের বৈধ পক্ষ কারা?
উত্তরঃ বৈদেশিক মুদ্রায় লেনদেনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের লাইসেন্স প্রাপ্ত তফসিলি ব্যাংকের শাখাগুলো [অনুমোদিত ডিলার বা এডি (Authorized Dealer) নামে পরিচিত] বিভিন্ন খাতে বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয় ও বিক্রয়ের বৈধ পক্ষ; ভ্রমণ খাতে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সীমিত লাইসেন্সধারী মানি চেঞ্জাররাও বিদেশ থেকে আগত বিদেশগামী যাত্রীদের সঙ্গে ভ্রমণ খাতে বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয় ও বিক্রয়ের জন্য বৈধ পক্ষ। বাংলাদেশে অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক ও লাইসেন্সধারী মানি চেঞ্জার ছাড়া অন্য কোনো পক্ষের সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয় ফরেন এক্সচেঞ্জ রেগুলেশন এক্ট, ১৯৪৭ (সেপ্টেম্বর, ২০১৫ পর্যন্ত সংশোধিত) এর আওতায় দণ্ডযোগ্য অপরাধ৷
৩ কোন যাত্রী বিদেশ থেকে কি পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা সঙ্গে আনতে পারেন?
উত্তরঃ বিদেশ থেকে আগত যাত্রী যে কোন পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সঙ্গে আনতে পারেন; তবে এর পরিমাণ ৫ হাজার মার্কিন ডলার বা সমমূল্যের বেশি হলে সমুদয় অংকের ঘোষণা শুল্ক কর্তৃপক্ষের কাছে FMJ ফরমে দাখিল করতে হয়। আনীত পরিমাণ অনধিক পাঁচ হাজার মার্কিন ডলার সমমূল্যের হলে শুল্ক কর্তৃপক্ষের কাছে ঘোষণা দরকার হয় না৷
ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন। |
৪. বিদেশ থেকে আনা বৈদেশিক মুদ্রার সঙ্গে রাখা যায় কি?
উত্তরঃ ক. বাংলাদেশী নিবাসী কোন ব্যক্তি বিদেশ থেকে সঙ্গে আনা অনধিক পাঁচ হাজার মার্কিন ডলার মূল্যমানের বৈদেশিক মুদ্রা নিজের কাছে বা অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকে নিবাসী বৈদেশিক মুদ্রা একাউন্টে জমা রাখতে পারেন, পরবর্তী বিদেশ যাত্রায় সঙ্গে নিয়েও যেতে পারেন। ৫ হাজার মার্কিন ডলারের অতিরিক্ত পরিমাণ আনিত বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আসার এক মাসের মধ্যে অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকে বা লাইসেন্সধারী মানি চেঞ্জার এর কাছে বিক্রি বা নিবাসী বৈদেশিক মুদ্রা একাউন্টে জমা রাখা নিবাসী বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য বাধ্যতামূলক৷
খ. বিদেশ থেকে আগত অনিবাসীরা সঙ্গে আনা (এবং পাঁচ হাজার মার্কিন ডলারের বেশি হলে শুল্ক কর্তৃপক্ষের কাছে ঘোষণা দেয়া) বৈদেশিক মুদ্রা নিজের কাছে বা অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা একাউন্টে জমা রাখতে পারেন; অব্যবহৃত অংশ বাংলাদেশ ত্যাগকালে সঙ্গে নিয়ে যেতে পারেন।
৫. বিদেশ থেকে সঙ্গে আনা বৈদেশিক মুদ্রা নগদায়নের ক্ষেত্রে কি ধরনের রেকর্ড রাখা বাঞ্ছনীয়?
উত্তরঃ আনীত বৈদেশিক মুদ্রার বিধিসম্মত সদ্ব্যবহারের প্রমাণ হিসেবে অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক বা লাইসেন্সধারী মানি চেঞ্জার এর কাছে বৈদেশিক মুদ্রা বিক্রির প্রতি ক্ষেত্রে নগদায়ন সনদপত্র (Encashment certificate) সংগ্রহ ও সংরক্ষণ বাঞ্জনীয়।
৬. বিদেশ থেকে বাংলাদেশে অর্থ প্রেরণের বৈধ পন্থা কি?
উত্তরঃ প্রাপকের অনুকূলে রেমিট্যান্স/চেক/ড্রাফট/টিটি/এমটি ইত্যাদি শুধুমাত্র বাংলাদেশে ব্যবসায়রত কোন ব্যাংকের মাধ্যমে সংগ্রহই বৈধ। বাংলাদেশে ব্যাংকিং চ্যানেলে বৈদেশিক মুদ্রা সংগৃহীত হবে না এমন কোনো পন্থার (যেমন- অবৈধ হুন্ডি কার্যক্রম) অবলম্বন Foreign Exchange Regulation Act, 1947 (সেপ্টেম্বর, ২০১৫ পর্যন্ত সংশোধিত) এর আওতায় বন্ধ যোগ্য এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের আওতায় দণ্ডনীয় হতে পারে৷
৭. প্রবাসী বাংলাদেশীরা দেশে কি কি ধরনের বৈদেশিক মুদ্রা একাউন্ট রাখতে পারেন?
উত্তরঃ তারা বাংলাদেশে অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রায় অনিবাসী চলতি ও মেয়াদী জমা হিসাব পরিচালনা করতে পারেন (যা অন্যান্য জাতীয়তার অনিবাসীদের জন্যও উন্মুক্ত)। এসব হিসাবের স্থিতি মুনাফা/সুদ সমেত অবাধে বিদেশে প্রত্যাবাসন করা যায়৷
৮. প্রবাসী/অনিবাসী বাংলাদেশী ও অন্যান্য জাতীয়তার অনিবাসিরা বাংলাদেশে আর কি কি ধরনের আর্থিক বিনিয়োগ করতে পারেন?
উত্তরঃ ক. বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশীরা টাকায় সরাসরি Wage Earners Development Bond এ বিনিয়োগ করতে পারেন। এ বিনিয়োগের আসলের অংক বৈদেশিক মুদ্রায় অবাধে বিদেশে প্রত্যাবাসন যোগ্য এবং মুনাফার অংক টাকায় বাংলাদেশে ব্যবহার্য৷
খ. প্রবাসী/অনিবাসী বাংলাদেশী ও অন্যান্য জাতীয়তার অনিবাসিরা বাংলাদেশেঃ
১) টাকায় সরকারি ট্রেজারি বন্ড এ বিনিয়োগ করতে পারেন। মেয়াদ পূর্তিতে অথবা যেকোনো সময় সেকেন্ডারি মার্কেটে বিক্রয় করে আলোচ্য বন্ডের আসল বিদেশে প্রত্যাবাসন করা যায়, এই বন্ডের মুনাফার অংকও অবাধে বিদেশে প্রত্যাবাসনযোগ্য।
২) অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক শাখায় অনিবাসী টাকা বিনিয়োগ হিসাব (NI TA) এর মাধ্যমে স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত শেয়ার/Securities এ বিনিয়োগ করতে পারেন; এসব বিনিয়োগের আসল ও মুনাফা অবাধে বিদেশে প্রত্যাবাসন করা যায়।
গ. অনিবাসী বাংলাদেশীগন বাংলাদেশ সরকারের মার্কিন ডলার Premium Bond ও মার্কিন ডলার Investment বন্ডে বিনিয়োগ করতে পারেন। এগুলোর আসল এবং ইনভেস্টমেন্ট বন্ড এর মুনাফা অবাধে বিদেশে প্রত্যাবাসনযোগ্য, প্রিমিয়াম বন্ডের মুনাফা টাকায় বাংলাদেশে ব্যবহার্য।
৯. স্থানীয় উৎসের তহবিল অনিবাসী বৈদেশিক মুদ্রা একাউন্টে জমা করা যায় কি?
উত্তরঃ বিদেশ থেকে আনীত স্মৃতির উপর অর্জিত বৈধ মুনাফা ছাড়া অন্যবিধ স্থানীয় উৎসের কোন তহবিল অনিবাসী বৈদেশিক মুদ্রা একাউন্টে জমা যোগ্য নয়।
১০. বাংলাদেশী নিবাসীরা বৈদেশিক মুদ্রা অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করতে পারেন কি?
উত্তরঃ ক. বিদেশ সফর শেষে প্রত্যাগত নিবাসীরা সঙ্গে আনা অব্যবহৃত বৈদেশিক মুদ্রা অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকে নিবাসী বৈদেশিক মুদ্রা হিসেবে জমা করতে পারেন; হিসাবের স্থিতি টাকায় নগদায়ন ছাড়াও পরবর্তীতে বিদেশ যাত্রার সময় হিসাবধারী সঙ্গে নিয়ে বা আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ব্যবহার করতে পারেন।
খ. রপ্তানিকারকদের প্রত্যাবাসিত রপ্তানি আয়ের প্রধান অংশ অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকে রপ্তানিকারকের রিটেনশন কোটা একাউন্টে জমা রাখা যায়। এ হিসাবের স্থিতি রপ্তানিকারকের ব্যবসায়িক বিদেশ ভ্রমণ বা অন্যবিধ ও ব্যবসায়িক প্রয়োজনে বৈদেশিক মুদ্রায় ব্যবহার করা যায়।
১১. বিদেশ থেকে পাঠানো অর্থের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে প্রাপকের নামে ব্যাংক একাউন্ট থাকা বাধ্যতামূলক কি?
উত্তরঃ না। তবে প্রাপকের অনুকূলে সংশ্লিষ্ট ড্রাফট/টিটি/এমটির অর্থ বাংলাদেশে তফসিলি ব্যাংকের মাধ্যমে সংগ্রহ বাধ্যতামূলক।
১২. অনুমোদিত ডিলার নয় এমন ব্যাংক শাখায় প্রাপকের টাকা অ্যাকাউন্টে বিদেশ থেকে অর্থ প্রেরণ করা যায় কি?
উত্তরঃ হ্যাঁ। প্রাপকের হিসাবধারী ব্যাংক শাখা সংশ্লিষ্ট রেমিটেন্স কোন অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক শাখা থেকে টাকায় নগদান করে নেবে।
১৩. বাংলাদেশি নিবাসিরা ব্যক্তিগত ভ্রমণ খাতে কি পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা কিনতে পারেন?
উত্তরঃ মায়ানমার এবং সার্কভুক্ত দেশগুলোয় ব্যক্তিগত ভ্রমণের জন্য অতি পঞ্জিকাবর্ষে মাথাপিছু অনধিক পাঁচ হাজার মার্কিন ডলার কেনা যায়। বিশ্বের অন্যান্য দেশ ভ্রমণের জন্য অতি পঞ্জিকাবর্ষে মাথাপিছু অনধিক সাত হাজার মার্কিন ডলার ক্রয়যোগ্য।
১৪. বৈদেশিক মুদ্রায় ক্রয়যোগ্য/উত্তোলনযোগ্য অংক নগদ নোট আকারে ছাড়ের কোন পরিমাণ সীমা আছে কি?
উত্তরঃ মার্কিন ডলার নগদ নোট আকারে এককালীন উত্তোলন/ছাড়ের পরিমাণসীমা ৫ হাজার মার্কিন ডলার। সমুদয় ছাড়/উত্তোলনযোগ্য অংক অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রায় নগদ নোট আকারে নেয়া যায়, Travelers Cheque/Draft আকারেও সমুদয় ছাড়/উত্তোলনযোগ্য অংক মার্কিন ডলারসহ যেকোনো বৈদেশিক মুদ্রায় নেয়া যায়।
১৫. বিদেশে চাকুরী/অভিবাসন ইত্যাদি সূত্রে একমুখী টিকিটে বিদেশ যাত্রায় বাংলাদেশী নিবাসী ব্যক্তির প্রাপ্য বৈদেশিক মুদ্রা কত হবে?
উত্তরঃ একমুখী টিকেটে এ ধরনের বিদেশ যাত্রায় অব্যবহৃত ভ্রমণ কোটার সম্পূর্ণ পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা কেনা যাবে (যেমন ৫০০ মার্কিন ডলার আগে ব্যবহার করা হয়ে থাকলে পঞ্জিকা বর্ষের অবশিষ্ট অব্যবহৃত ৪,৫০০ মার্কিন ডলার একমুখী টিকিটে বিদেশ যাত্রার জন্য কেনা যাবে)।
১৬. ব্যবসায়িক/দাপ্তরিক প্রয়োজনে বিদেশ ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশী নিবাসীরা বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয় করতে পারেন কি?
উত্তরঃ দাপ্তরিক প্রয়োজনে বিদেশ ভ্রমণের জন্য সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত খাতের কর্মকর্তারা সরকার নির্ধারিত হারে এবং পেশাগত/ব্যবসায়িক প্রয়োজনে বিদেশ ভ্রমণের জন্য বেসরকারি খাতের নিবাসী ব্যক্তিরা মাথাপিছু দৈনিক অনধিক ৪০০ মার্কিন ডলার হারে বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয় করতে পারেন (মায়ানমার এবং সার্ক দেশগুলোর জন্য প্রযোজ্য মাত্রা দৈনিক অনধিক ৩৫০ মার্কিন ডলার)।
১৭. ভ্রমণ কোটা বাবদ প্রাপ্যের পুরো অংক লাইসেন্সধারী মানি চেঞ্জার থেকে বা অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক থেকে কেনা যায় কি?
উত্তরঃ লাইসেন্সধারী মানি চেঞ্জার ভ্রমণ কোটা বাবদ প্রাপ্য পরিমাণ হতে যাত্রী প্রতি অনধিক এক হাজার মার্কিন ডলার বিক্রি করতে পারে। অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক শাখা ভ্রমণ কোটা বাবদ ছাড়যোগ্য সম্পূর্ণ অংক বিক্রি করতে পারে।
১৮. বাংলাদেশী নিবাসীদের বিদেশে অধ্যয়নের ব্যয়বাবদ বৈদেশিক মুদ্রা কেনা যায় কি?
উত্তরঃ হ্যাঁ। বিদেশে ভাষা শিক্ষা কোর্স সহ স্বীকৃত সুপরিচিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পেশাগত ডিপ্লোমা, সার্টিফিকেট কোর্স এবং স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অধ্যায়নের ফি/বেতন ও বিদেশে থাকা খাওয়ার খরচ বাবদ বৈদেশিক মুদ্রা (বিদেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জানানো ব্যয় প্রাক্কলন মোতাবেক) অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক থেকে কেনা যায়। দূরশিক্ষণ/স্কুল পর্যায়ে অধ্যায়ন বা অন্যান্য ব্যতিক্রমী ব্যবস্থায় পড়াশোনা বাবদ বৈদেশিক মুদ্রা ছাড় বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্ব অনুমতি সাপেক্ষ।
১৯. বিদেশে চিকিৎসা ব্যয় বাবদ বাংলাদেশ নিবাচ era বৈদেশিক মুদ্রা কিনতে পারেন কি?
উত্তরঃ হ্যাঁ। বিদেশি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের দেয়া ব্যয় প্রাক্কলন মোতাবেক অনধিক ১০ হাজার মার্কিন ডলার পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক থেকে কেনা যায়, এর বেশি মাত্রার বৈদেশিক মুদ্রা ছাড় বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্ব অনুমতি সাপেক্ষে।
২০. কোন কোন ধরনের বৈদেশিক মুদ্রা প্রাপ্যতার বিপরীতে আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করা যায়?
উত্তরঃ বার্ষিক ব্যক্তিগত ভ্রমণ কোটা, রপ্তানিকারকদের রিটেনশন কোটা হিসাবের স্থিতি, সরকারি ও বেসরকারি খাতে দাপ্তরিক বা পেশাগত প্রয়োজনে ভ্রমণের জন্য ছাড়যোগ্য অংক, হজ্ব উপলক্ষে হজ্ব কোটা এবং নিবাসী বৈদেশিক মুদ্রা হিসাবের স্থিতির বিপরীতে আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড বাংলাদেশে অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক থেকে সংগ্রহ ও ব্যবহার করা যায়।
২১. বিদেশগামীরা বাংলাদেশ ত্যাগকালে এবং বিদেশ থেকে আগতরা বাংলাদেশে আসার সময় বাংলাদেশ টাকায় কি পরিমান অংক সংখ্যা সঙ্গে রাখতে পারবে?
উত্তরঃ অনধিক দশ হাজার টাকা।
২২. বাংলাদেশে আগত অনিবাসীর সঙ্গে আনা বৈদেশিক মুদ্রা টাকায় ভাঙ্গানোর পর বৈদেশিক মুদ্রায় পুনঃরূপান্তর করা যায় কি?
উত্তরঃ যে অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক এর কাছে বৈদেশিক মুদ্রা টাকায় ভাঙানো হয়েছিল, সেই অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক থেকে অব্যয়িত টাকার অংক বৈদেশিক মুদ্রায় পুনঃরূপান্তর করে সংশ্লিষ্ট অনিবাসী বাংলাদেশ ত্যাগকালে সঙ্গে নিতে পারেন। এছাড়াও বাংলাদেশে আগত অনিবাসীগন তাদের রূপান্তরকৃত টাকা যেকোনো লাইসেন্সপ্রাপ্ত Money Changer এর নিকট থেকে নগদায়ন উপস্থাপন সাপেক্ষে বৈদেশিক মুদ্রায় পুনঃরূপান্তর করতে পারেন। তবে মানি চেঞ্জার এর বেলায় পুনঃরূপান্তরিত বৈদেশিক মুদ্রার অংক ৫০০ মার্কিন ডলারের বেশি হবে না। উল্লেখ্য, বিমানবন্দরের বহির্গমন লাউঞ্জে অবস্থিত ব্যাংক বুথ অনধিক ১০০ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ অংকের পুনঃরূপান্তর সুবিধা দিতে পারে।
২৩. বিদেশে অভিবাসন আবেদনের ফি ইত্যাদি বাবদ বাংলাদেশী নিবাসীরা বৈদেশিক মুদ্রা কিনতে পারেন কি?
উত্তরঃ বিদেশি অভিবাসন কর্তৃপক্ষ যাচিত সনদপত্র মূল্যায়ন কি, ইমিগ্রেশন ভিসা ফি ও Right of Landing ফি বাবদ বৈদেশিক মুদ্রা অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক থেকে ক্রয় ও প্রেরণ করা যায়।
২৪. বাংলাদেশী নিবাসিরা স্থাবর সম্পত্তি বিক্রয়লব্ধ টাকা বৈদেশিক মুদ্রায় বিদেশে পাঠাতে পারেন কি?
উত্তরঃ না, বাংলাদেশ টাকা মূলধনী খাতে আন্তর্জাতিক লেনদেনের জন্য অবাধ রূপান্তরযোগ্য ঘোষিত হয়নি।
২৫. বিদেশে প্রত্যক্ষ বা পোর্টফোলিও বিনিয়োগ বাংলাদেশী নিবাসীদের জন্য উন্মুক্ত কি?
উত্তরঃ না। ২৪ নং ক্রমিকের উত্তরে উল্লেখিত কারণে।
২৬. বাংলাদেশী নিবাসিরা বিদেশ থেকে অবাধে ঋণ/আগাম নিতে পারেন কি?
উত্তরঃ না। তবে বাংলাদেশি নিবাসীরা দেশে শিল্প উদ্যোগ অর্থায়নের জন্য বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এর পূর্ব অনুমোদনক্রমে বিদেশ থেকে মধ্য বা দীর্ঘমেয়াদি ঋণ নিতে পারেন।
২৭. বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশী ও অন্যান্য জাতীয়তার নিবাসিরা বাংলাদেশ ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিতে পারেন কি?
উত্তরঃ বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশী ও অন্যান্য জাতীয়তার নিবাসিরা Offshore Banking Unit থেকে বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ নিতে পারেন। এছাড়াও বিদেশে কর্মরত অনিবাসী বাংলাদেশীগণ গৃহঋণ সুবিধা বাবদ টাকা ঋণ নিতে পারেন।
উল্লিখিত তত্ত্বের অতিরিক্ত কোনো তথ্য বা ব্যাখ্যার প্রয়োজন হলে যোগাযোগ করুনঃ
মহাব্যবস্থাপক, বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা।
ফোনঃ ৯৫৩০২৯৮, ৯৫৩০৩৫১
ইমেইলঃ gm.fepd@bb.org.bd
সূত্রঃ বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক, জুলাই, ২০০৯ (সেপ্টেম্বর ২০১৭ পর্যন্ত সংশোধিত)।