ভালো রেটিং (ঋণমান) পেয়েছে ব্যাংকগুলো
ভালো রেটিং (ঋণমান) পেয়েছে ব্যাংকগুলো- বিভিন্ন কারণে আলোচনায় রয়েছে ব্যাংক খাত। ঋণ পরিশোধে শিথিলতার মধ্যেও খেলাপি ঋণ বেড়েছে। দেরিতে সংরক্ষণ বা ডেফারেল সুবিধা নিয়েও মূলধন ও প্রভিশন ঘাটতি থেকে বেরোতে পারেনি অনেক ব্যাংক। নিট লোকসান গুনছে কেউ কেউ। এর মধ্যেও ভালো ঋণমান পেয়েছে বেশিরভাগ ব্যাংক। ৫৯টি ব্যাংকের মধ্যে ৩৫টি ব্যাংকের ঋণমান ‘১’ বা সবচেয়ে ভালো রেটিং দেওয়া হয়েছে।
দেশে বর্তমানে ৬১টি ব্যাংক রয়েছে। এর মধ্যে ৫৯টি ব্যাংক ২০২২ সাল ভিত্তিক ঋণমান বা ক্রেডিট রেটিং করিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠিয়েছে। ২০২৩ ও ২৪ সালের জন্য এ রেটিং বিবেচনা করা হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, সর্বোচ্চ মানের ‘১’ রেটিং পেয়েছে ৩৫টি ব্যাংক। দ্বিতীয় মানের বা ‘২’ রেটিং পেয়েছে ১৭টি ব্যাংক। ৩টি ব্যাংক পেয়েছে ‘৩’ রেটিং। এছাড়া ‘৪’ রেটিং ২টি এবং সবচেয়ে খারাপ ‘৫’ মানের রেটিং পেয়েছে একটি ব্যাংক। আইসিবি ইসলামিক এবং প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক কোনো রেটিং করায়নি।
আরও দেখুন:
◾ বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন সার্কুলার
ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, রেটিং হলো একটি ব্যাংকের আর্থিক সুস্থতার পরিমাপের মাধ্যম। সাধারণভাবে একটি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ, মূলধন পরিস্থিতি, মুনাফার অবস্থা, তারল্য পরিস্থিতি, ঋণ আমানত অনুপাত, ব্যবস্থাপনার দক্ষতা, পরিচালন ও বাজারঝুঁকিসহ বিভিন্ন বিষয় দেখে এজেন্সিগুলোর রেটিং করার কথা। রেটিংয়ের জন্য ব্যাংকগুলো নিজেরাই এজেন্সি নিয়োগ করে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংক থেকে নির্ধারিত ফি’ পায় তারা।
ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন। |
ব্যাংক এশিয়ার সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আরফান আলী বলেন, একটি ব্যাংকের প্রকৃত অবস্থার ভিত্তিতে স্বাধীনভাবে রেটিং দেওয়ার কথা। কিন্তু কোনো রেটিং এজেন্সি যদি নৈতিকতা ও পেশাদারিত্বের বাইরে গিয়ে কাজ করে, তাহলে সে দায় ওই প্রতিষ্ঠানের ওপরই বর্তাবে। এমন হলো তো রেটিং করানোর দরকার নেই।
সংশ্লিষ্টরা জানান, পুনঃতপশিল, করোনা ও বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে আদায় না করেও নিয়মিত দেখানোসহ বিভিন্ন শিথিলতার কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র সামনে আসছে না। গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকগুলো কাগজে কলমে খেলাপি দেখিয়েছে ৮ দশমিক ১৬ শতাংশ। আইএমএফের শর্তের আলোকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিন লাখ ৭৮ হাজার কোটি বা মোট ঋণের ২৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ দুর্দশাগ্রস্থ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ২০২২ সাল শেষে ১০ শতাংশের কম মূলধন ছিল ১১টি ব্যাংকের। সাড়ে ১২ শতাংশের নিচে ছিল আরও ৫টি ব্যাংকের। সাড়ে ১২ থেকে ১৫ শতাংশের নিচে ছিল ১৬টি ব্যাংকের। ১৪টি ব্যাংকের ১৫ থেকে ২০ শতাংশের মধ্যে এবং ১৫টি ব্যাংকর মূলধন ছিল ২০ শতাংশের ওপরে। রেকর্ড লোকসান, পরিচালনায় ব্যাপক হস্তক্ষেপসহ চরম খারাপ অবস্থার কারণে সম্প্রতি বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙ্গে দিয়েছে কেন্দীয় ব্যাংক। ব্যাংকটির রেটিং দেওয়া হয়েছে ‘২’।
দেশে বর্তমানে ৮টি ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থা রয়েছে। এগুলো হলোুক্রেডিট রেটিং ইনফরমেশন অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (ক্রিসল), ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি অব বাংলাদেশ (ক্র্যাব), ইমার্জিং ক্রেডিট রেটিং লিমিটেড (ইসিআরএল), ন্যাশনাল ক্রেডিট রেটিং লিমিটেড (এনসিআরএল), আর্জুস ক্রেডিট রেটিং সার্ভিসেস লিমিটেড, আলফা ক্রেডিট রেটিং লিমিটেড, ডব্লিউএএসও ক্রেডিট রেটিং কোম্পানি ও দ্য বাংলাদেশ রেটিং এজেন্সি লিমিটেড।