ফিনটেক

সবার কাছে উন্নত ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দেবে ফিনটেক

ড. শাহাদাত খানঃ দেশের অন্যতম ফিনটেক কোম্পানি শিওরক্যাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও)। বুয়েট থেকে পড়াশোনা শেষে সেখানেই শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন তিনি। ১৯৯২ সালে কমনওয়েলথ বৃত্তি নিয়ে কানাডা যান। সেখানে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। প্রায় দুই দশক পর দেশে ফিরে শিওরক্যাশ চালু করেন তিনি। দেশে ফিন্যান্সিয়াল টেকনোলজির বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে সম্প্রতি কথা বলেছেন।

দেশের আর্থিক খাতে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার ও এর ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বলুন।
তথ্যপ্রযুক্তি আমাদের জীবনধারায় অনেক সুবিধা ও পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। দৈনন্দিন জীবনে অনেক বিষয়েই আজকাল প্রযুক্তি ব্যবহার করছি আমরা। বিশেষ করে মোবাইল ফোনের ব্যবহার আমাদের জীবনধারাকে অনেকটা পাল্টে দিয়েছে।

আর্থিক সেবা দিতে যেসব তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে, তাদের সবগুলোকে একসঙ্গে ফিন্যান্সিয়াল টেকনোলজি বা ফিনটেক বলা হয়। ফিনটেক অনেক ধরনের হতে পারে। ব্যাংকের শাখা ছাড়াই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে গ্রাহকের কাছে বিভিন্ন ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দেয়া হয় মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের মাধ্যমে, যেটি ফিনটেকের অন্তর্ভুক্ত। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো তাদের সেবা দেয়ার জন্য কিছু বিশেষ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারে। যেমন নতুন গ্রাহকের জন্য কেওয়াইসি সংগ্রহ ও তথ্য যাচাই-বাছাই, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে গ্রাহকদের ঋণ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া, ব্যাংকের শাখা ছাড়াও এজেন্টদের মাধ্যমে ব্যাংকিং সেবা দেয়া, এআই ব্যবহার করে মানি লন্ডারিং নিয়ন্ত্রণ করা, নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে এক দেশ থেকে আরেক দেশে দ্রুত রেমিট্যান্স পাঠানো ইত্যাদি।

দেশের সব মানুষের কাছে সুলভ মূল্যে উন্নত আর্থিক সেবা পৌঁছে দেয়ার জন্য ফিনটেক অত্যন্ত সম্ভাবনাময় একটি মাধ্যম। বাংলাদেশে এখন প্রায় ৯৮ শতাংশ মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে। ইন্টারনেট ব্যবহার করছে নয় কোটিরও বেশি মানুষ। তবে এখনো দেশের মাত্র ২৫ শতাংশ মানুষ ব্যাংকিং সেবা ব্যবহার করছে। বাকি তিন-চতুর্থাংশ মানুষ রয়ে গেছে সেবাটির বাইরে। বিশেষ করে শহরের বাইরে ব্যাংকিং সেবা অত্যন্ত সীমিত ও অপ্রতুল। ফিনটেক ব্যবহার করে বাংলাদেশের সব মানুষের কাছে বিভিন্ন আর্থিক সেবা পৌঁছে দেয়া সম্ভব।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

বাংলাদেশে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ব্যাংকিং সেবা বা মোবাইল ব্যাংকিং চালু হয়েছে ২০১১ সালে। গত নয় বছরে দেশে সেবাটি অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এখন পর্যন্ত আট কোটিরও বেশি মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে ও মাসে লেনদেনের পরিমাণ ৪০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষ টাকা পাঠানো, বিল দেয়া, মোবাইল ফোন রিচার্জ করা ইত্যাদি নানা ধরনের সেবা পাচ্ছে। সেবাটির কলেবরও ধীরে ধীরে বিস্তৃত হচ্ছে। ১০ বছরেরও কম সময়ে আমাদের মোবাইল ব্যাংকিং সারা পৃথিবীতে শীর্ষস্থানীয় বলে বিবেচিত হচ্ছে।

তুলনামূলক পরিসংখ্যানে দেখা যাবে, প্রায় সত্তর বছরে যে পরিমাণ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে, গত নয় বছরে খোলা হয়েছে তার চেয়ে বেশি মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট। এটি থেকে অনুমেয়, এ দেশের মানুষ সহজে প্রযুক্তিকে গ্রহণ করছে। দেশের সাধারণ মানুষের আধুনিক আর্থিক সেবার চাহিদা আছে ও এখানে অন্যান্য আর্থিক সেবা উন্নতি হওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা আছে।

ফিনটেকের সুবিধাগুলো কী কী?
ফিনটেকের মাধ্যমে ব্যাংকিং সেবার সুবিধা অনেক। যেমন সাধারণ মানুষ কোনো ব্যাংকের শাখায় না গিয়ে শুধু মোবাইল ফোন থেকেই সব ধরনের লেনদেন করতে পারেন। একজন চাকরিজীবী সরাসরি তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বেতন পেতে পারেন। তাত্ক্ষণিকভাবেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এ তথ্য পেয়ে যাবেন তিনি। ফোন ব্যবহার করেই বাড়িভাড়া দিয়ে দিতে পারেন। শুধু একটি কিউআর কোড স্ক্যান করে দোকানে বা রেস্তোরাঁয় কেনাকাটা করতে পারেন। ফোন ব্যবহার করে যানবাহনের ভাড়া দেয়া কিংবা টিকিট কাটার সুযোগও রয়েছে।

যেহেতু প্রতিটি লেনদেনের তথ্য সংরক্ষিত থাকছে, সেহেতু অ্যাকাউন্টধারীও সামগ্রিক ব্যয়ের তথ্য সম্পর্কে ধারণা পান। ফলে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় এড়িয়ে সঞ্চয়ের সুযোগ তৈরি হয়। এছাড়া উন্নত আর্থিক সেবা যেমন ব্যক্তিগত বা ব্যবসায়িক প্রয়োজনে ঋণ গ্রহণ, ইন্স্যুরেন্স ও বিনিয়োগের জন্য শেয়ার কেনাবেচায়ও এ সেবা ব্যবহার করা যেতে পারে।

ফিনটেকের মাধ্যমে স্বল্প খরচে অপেক্ষাকৃত বেশি ও উন্নত সেবা দেয়া সম্ভব। এর মাধ্যমে গ্রাহক ব্যাংকে না গিয়ে ঘরে বসেই সব ধরনের ব্যাংকিং সেবা পেতে পারেন। এতে ঝামেলা কমে ও সময় বাঁচে। এছাড়া মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ করলে গ্রাহকদের নিজের আর্থিক অবস্থার বিষয়ে সচেতনতা বাড়ে এবং অনেক ক্ষেত্রে আর্থিক ব্যবস্থাপনা অভ্যাস উন্নত হয়। দেখা গেছে, যদি প্রতিটি লেনদেনের পর গ্রাহক একটি বার্তা পায়, তবে তার খরচের প্রবণতা ১৭ শতাংশ কমে যায়। এছাড়া ফোনের মাধ্যমে বিল পরিশোধ করলে তা ঝামেলামুক্তভাবেই করা সম্ভব।

স্বয়ংক্রিয়ভাবে দিনে ১০ টাকা করে সঞ্চয়ের সুযোগ পেলে অনেক গ্রাহকই এ সেবার ব্যাপারে আগ্রহী হবেন। কখনো কখনো মাসের শেষদিকে চাকরিজীবীদের কিছুটা অর্থসংকট দেখা দেয়। এক্ষেত্রে ব্যাংক থেকে স্বয়ংক্রিয় ঋণের সুবিধা পাওয়া গেলে বিব্রতকর পরিস্থিতি থেকে রেহাই পাওয়া যেতে পারে। আমাদের কৃষকরা যদি সহজে ও স্বল্পমূল্যে নিজের ফোন থেকেই ফসলের বীমা কিনতে পারেন, তবে তাদের জন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা অনেক সহজ হবে।

ব্যক্তি পর্যায়ের লেনদেনে এটি কী ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে?
বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গ্রাহকরা এখন কিছু প্রাথমিক সেবা পাচ্ছেন। এর মধ্যে রয়েছে—এজেন্টের কাছে টাকা জমা দেয়া, এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় টাকা পাঠানো, মোবাইল রিচার্জ করা ও বিদ্যুৎ বা পানির বিল দেয়া। যেহেতু আমাদের অনেক গ্রাহক মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আর্থিক সেবায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন, তাই দৈনন্দিন লেনদেনের ক্ষেত্রে আমাদের পক্ষে দ্রুত এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। আমরা জানি উন্নত দেশে লেনদেনের জন্য ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ড বেশ জনপ্রিয়। সেখানে প্রায় প্রতিটি দোকানেই ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ড লেনদেনের জন্য পিওএস মেশিন প্রয়োজন হয়।

অথচ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে স্মার্টফোন ব্যবহার করে গ্রাহকরা খুব সহজেই যেকোনো দোকানে লেনদেন করতে পারবেন। এজন্য দোকানগুলোকে শুধু একটি কিউআর কোডের স্টিকার ব্যবহার করতে হবে। দামি পিওএস মেশিনে বিনিয়োগ করার কোনো প্রয়োজন হবে না তাদের। যেহেতু আমাদের দেশে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড তেমন একটা জনপ্রিয় না, তাই আমরা সরাসরি উন্নততর মোবাইল পেমেন্ট পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারি। সহজে ও কম বিনিয়োগে অল্প সময়ে সারা দেশে তা চালু করতে পারি।

এশিয়ার দুটি বড় দেশ চীন ও ভারত ফিনটেক ব্যবহারের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। বিশেষ করে চীনে সাধারণ মানুষ তাদের দৈনন্দিন সব লেনদেন ও আর্থিক সেবার জন্য মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে। চীনে দুপুরের খাবার হিসেবে নুডলস কেনার জন্যও আলিপে অথবা উইচ্যাট ব্যবহার করতে হয়। অনেক রেস্তোরাঁয় নগদ লেনদেন একেবারেই গ্রহণযোগ্য না। আমরা মনে করি, আগামী তিন বছরে স্মার্টফোন ও ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশেও মোবাইল ফোনভিত্তিক লেনদেন যথেষ্ট প্রসার লাভ করবে।

নিজের ফোন থেকে সব ধরনের আর্থিক সেবা পাওয়া গেলে গ্রাহকরা সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন। অধিকাংশ সেবার জন্য তাদের কখনো ব্যাংক ব্রাঞ্চে যেতে হবে না। চেক বই ব্যবহার বা সঙ্গে করে ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড বহন করতে হবে না। অ্যাপ অথবা এসএমএসের মাধ্যমে গ্রাহকরা নিজের ফোনে সব সময় লেনদেনের সব খোঁজখবর পেয়ে যাবেন। যেকোনো ঝামেলায় সহজেই সব ধরনের আর্থিক সেবা গ্রহণ করতে পারবেন গ্রাহকরা।

এক্ষেত্রে ব্যাংক বা সেবাদাতারা কী ধরনের সুবিধা পাবেন?
ফিনটেক জনপ্রিয় হলে ব্যাংক বা সেবাদাতারাও অনেক সুবিধা পাবেন। সব মানুষ ব্যাংকিং সুবিধা পেলে সেবাদাতাদের গ্রাহক সংখ্যা বেড়ে যাবে। পাশাপাশি উন্নত ব্যাংকিং সেবা সবার কাছে পৌঁছানো সম্ভব হবে। মোটের ওপরে এ খাতে প্রবৃদ্ধি আসবে। যেহেতু অধিকাংশ সেবা প্রযুক্তির মাধ্যমে দেয়া হবে, তাই স্বল্পসংখ্যক ব্রাঞ্চ ও সীমিত লোকবল নিয়েই অনেক বেশি মানুষকে সেবা দেয়া সম্ভব হবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, সাধারণ ব্যাংকিং সেবার ক্ষেত্রে তিন হাজার গ্রাহকের জন্য একটি শাখা স্থাপন করতে হয়। এতে গড়ে পাঁচজন করে কর্মকর্তা ও অন্যান্য লোকবলের প্রয়োজন হয়।

অথচ ফিনটেক ব্যবহার করে দুটি সার্ভার কম্পিউটার ও কিছু সফটওয়্যারের মাধ্যমে ১০ লাখ গ্রাহককে আর্থিক সেবা দেয়া সম্ভব। ব্যাংকের খরচ কমে গেলে সাধারণ মানুষকে সুলভ মূল্যে সব রকমের আর্থিক সেবা দেয়া সম্ভব হবে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে গ্রাহকদের সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা যাবে, যার ভিত্তিতে এআই ব্যবহার করে ঋণ প্রদানের ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান। এর ফলে দেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু খাত, যেমন কৃষি ও এসএমইতে বিনিয়োগ বাড়ানো সম্ভব হবে। ত্বরান্বিত হবে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন।

ইন্টার-অপারেবিলিটি নিয়ে আলোচনা রয়েছে। এ বিষয়ে আপনার ভাবনা কী?
ইন্টার-অপারেবিলিটির বিষয়টি একটি উদাহরণ দিয়ে বলি, আমরা সবাই কোনো না কোনো মোবাইল অপারেটরের সিম ব্যবহার করি। এখন এমন যদি হতো, যে অপারেটরের সিম, শুধু সেই সিমের গ্রাহককেই কল করা যাবে, তাহলে কি এটা আমাদের জন্য খুব একটা ভালো জিনিস হতো? হতো না অবশ্যই। ইন্টার-অপারেবিলিটি সেবাগ্রহীতাদের জন্য ভালো। মোটের ওপরে দেশের জন্যও ভালো। এটা যদি না হতো, তাহলে আজ মোবাইল ফোন সেবা এ রকম প্রসার লাভ করত না।

পাশের দেশ ভারতে ন্যাশনাল পেমেন্ট করপোরেশন অব ইন্ডিয়ার (এনপিসিআই) মাধ্যমে এখন চমৎকার ইন্টার-অপারেবিলিটি সেবা চালু হয়েছে। তারা এত চমৎকার একটা পেমেন্ট প্লাটফর্ম করেছে, যেখানে যে কেউ যে কাউকে টাকা পাঠাতে পারবে যেকোনো একটা প্লাটফর্ম ব্যবহার করে। আমাদের এখানেও জাতীয় পর্যায়ে ইন্টার-অপারেবিলিটিকে ফ্যাসিলেটেট করার জন্য আরো অনেক কাজ করা দরকার। বাংলাদেশ ব্যাংক এক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।

শিওরক্যাশ কিন্তু চারটি ব্যাংকের সঙ্গে কাজ করছে। আমাদের ও এ চারটি ব্যাংকের মধ্যে আবার সম্পূর্ণ ইন্টার-অপারেবিলিটি কার্যকর আছে। আমাদের একটি পেমেন্ট সুইচ আছে, যেটা রূপালী ব্যাংক অপারেট করছে। সুতরাং আপনার যদি ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ওয়ালেট হয়, সেখান থেকে রূপালী ব্যাংকে পেমেন্ট করতে পারবেন। সুতরাং ইন্টার-অপারেবিলিটি যে খুব কঠিন জিনিস, সেটা আমরা মনে করি না। কিন্তু জাতীয় পর্যায়ে বাস্তবায়নের জন্য অবশ্যই সবাইকে একসঙ্গেই এগিয়ে আসতে হবে।

ফিনটেকে নিরাপত্তা ঝুঁকিগুলো কী কী? এতে আমাদের করণীয় কী?
তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করলে আমাদের অবশ্যই এর নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে ভাবতে হবে। প্রথমেই উল্লেখ করা দরকার, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ডিজিটাল লেনদেন মূলত একটি নিরাপদ সেবা। একটি লেনদেন করতে গেলে আপনার ফোনটি যেমন দরকার, তেমনি গ্রাহকের গোপন পিনটাও অপরিহার্য। এছাড়াও গ্রাহক প্রতিটি লেনদেনের পর এসএমএস পাচ্ছেন ও যেকোনো সময় অ্যাকাউন্টের স্থিতি দেখে নিতে পারছেন। মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেনের ঝুঁকির ক্ষেত্রে গ্রাহকের সচেতনতা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। একজন গ্রাহককে তার ফোন ও পিন নিরাপদভাবে সংরক্ষণ করতে হবে।

আমাদের অধিকাংশ গ্রাহক সুলভ মূল্যের ফিচার ফোন ব্যবহার করে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন করে থাকেন। দুঃখের বিষয় ফিচার ফোন দিয়ে লেনদেন করা কিছুটা জটিল। তাই অনেক গ্রাহক এজেন্ট বা অন্য কারো সহযোগিতা নিয়ে লেনদেন করে থাকেন। এক্ষেত্রে গ্রাহক কিছুটা ঝুঁকির মুখোমুখি হন, যা নিরসনের জন্য সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান এবং রিটেইল এজেন্টসহ সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। তবে যেসব গ্রাহক স্মার্টফোন ব্যবহার করেন, তারা অ্যাপ ব্যবহার করে সহজেই লেনদেন করতে পারেন। তাই আশা করা যায়, আগামী দুই-তিন বছরে স্মার্টফোনের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গ্রাহকদের লেনদেনের বিষয়ে আস্থা ও নিরাপত্তাবোধ বৃদ্ধি পাবে।

সোর্সঃ বণিক বার্তা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button