পরীক্ষার রাজ্যে আরও একটি অপেক্ষার প্রহর
অনজন কুমার রায়ঃ পরীক্ষার রাজ্যে আরও একটি অপেক্ষার প্রহর – পরীক্ষায় না বসার ইচ্ছাটাই বেশি ছিল বলে আগেও পরীক্ষা নামক সৃজনশীলতা (সৃজনশীলতা এ জন্যেই বলেছি যে, বিজ্ঞানের আদিখ্যেতা কিংবা মানবিকের পৌরাণিক কাহিনী ওখানে টিকিবে না মশায়!) থেকে নিজেকে গুটিয়ে রেখেছিলাম। লাগাম টেনে রাখতে না পেরে তিন তিনটি বছর পর পরীক্ষার রূপায়নে নিজেকে বৃথা সমর্পনের চেষ্টা করিলাম!
যাই হোক; বহু কষ্টে পরীক্ষার হলে নিজেকে তিন ঘন্টা সঁপে দিয়েছিলাম। ব্যাটা পড়লি বিজ্ঞান, তবে কেন আজ হিসাব বিজ্ঞানে হিসাব চষা? অত:পর বলিল সাহেব; শূন্যকেই নিয়ে ভাসি, শূন্য করিল মোরে বঞ্চনা…!
তাও ওই আজব হিসাব বিজ্ঞানে পাশ করতে হলে ২৮ নম্বরের শুদ্ধ গাণিতিক উত্তর না করলে ফলাফল যে রহস্যাবৃতের এক ডগায় আটকা পড়ে থাকে! মনরে তোরে কেমনে বুঝাই; আমি যে ওই অংক কোনকালে চষিয়ে বেড়াই নি! তাহলে কেমনে তোমায় করিব বরণ? কিন্তু; তারপরও পাশ করতে পেরেছিলাম! তবে, এখন যে পরীক্ষায় বসতে পারাটাই সূক্ষ্মতার তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ!
ছাত্রজীবন থেকে একটি বছর খসে পড়া মানেই পেছন থেকে লাগাম টেনে ধরা। সেটা বোধ হয় আঁচ করতে পারলেও সেশন জটের ধাক্কায় কেমন যেন সওয়া হয়ে গেছে। বিষয়টি এখন আর তেমন ভাবায় না। অথচ সেটার নেতি বাচক প্রভাব সারা জীবনই আমাদের বয়ে যেতে হবে। তাই শেষ বিকেলে চাকরি পাওয়ায় অনেকেরই অপূর্ণতা থেকে যায়।
ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন। |
বহমান এ ধারায় কর্মক্ষেত্রেও এর নেতিবাচক প্রভাব বিদ্যমান থাকে। তার উপর চাকরিক্ষেত্রে কোন কারণে পিছিয়ে পড়লে নেতিবাচক প্রভাব ভাবিয়ে তুলে। জীবনের মসৃণ পথটুকু নিরাশার দোলাচলে ধাবিত হয়। অনেকদিনের অভ্যাসবশত হয়তো সেটাই আঁচ করে চলেছি।
তাই পরীক্ষার মতো কোন প্রতিযোগিতামুলক স্থানে পিছিয়ে পড়লে ভাবায় না কিংবা মনের মাঝে বিরুপ প্রভাব ফেলে না। ফলে, অতি সহজেই সেটাকে মেনে নিতে আমরা সদা তৎপর।
তারপরও শুনেছি, পাড়ার বাংকাররা গ্রুপ ডিসকাসনে রাজি হয়েছে। আজব বিজ্ঞানে পাশ করতে “Zoom Apps”-এর মাধ্যমে নিয়মিত ক্লাসও করছে! মাঝে মাঝে সীমার চেয়েও ব্যত্যয় প্রকাশে পারঙ্গম বলে অতি উচ্চ আকাঙ্ক্ষায় সন্তষ্টি জ্ঞাপন করি। তাই স্বপ্নের ঝুলিতে আটকে থাকা প্রমোশনের কথাই বার বার মাথায় বিঁধে রাখি!
কাল্পনিক ছন্দে আবিষ্কার করি প্রমোশনের গতিধারা। দৃঢ়চিত্তে এগিয়ে চলি সম্মুখে পথপানে। স্বপ্ন কি আর কাল্পনিক বারতায় সত্য হয়ে আসে? ভাবনার দ্বারে কড়া নাড়ে প্রমোশনের মুহূর্তটি। কিন্তু; পেছনে যে বিশ্লষণধর্মী পরীক্ষার সনদটাই অনেকের নেয়া হয়ে উঠেনি। তাই ব্যর্থতার গ্লানি বার বার তাড়া করে ফিরে।
মহামারী প্রকোপের দিনগুলোতেও থেমে থাকেনি ব্যাংকিং সেবা। নিস্তব্ধতার আঁধারে ধেয়ে আসা কঠিনতর পথটুকুর মাঝেও ব্যাংকিং সেবা চালিয়ে যাওয়া দু:সাহসিক কাজেরই নামান্তর বটে। এক রকম আতঙ্কের মাঝেই দিনগুলো পাড়ি দিতে হয়েছে। তার মাঝেও থেমে থাকেনি পরীক্ষা প্রস্তুতির ব্যাপকতা। ব্যাংকিং সেবার কাজ সামলে পরীক্ষায় অবগাহন করতে পারা কষ্টের নামান্তরই বটে।
কিন্তু, মহামারী প্রকোপের দরুণ পরীক্ষার প্রহর দীর্ঘায়িত হতে থাকে। তারপরও স্বপ্নের ডানায় উড়াল দিয়ে ডিসেম্বরে পরীক্ষায় অবগাহন করার প্রত্যয়ে এগিয়ে যাই। কিন্তু, পরিস্থিতি অনেকটা প্রতিকূল সান্নিধ্যে যাওয়ায় কাল্পনিক ছন্দটুকু আটকা পড়ে নৈরাশ্যবাদের কাহনে। তারপরও পথচলা স্বপ্নের বিভূইয়ে চড়ে। মাঝে মাঝে প্রমোশনের শুন্যতা বিষমতায় পর্যুবসিত করে। সার্টিফিকেটের শূণ্যতা ভাবিয়ে তুুুলে।
মহামারী প্রাদুর্ভাবের দরুণ এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের অটো পাশ দিয়ে ভাল উদ্যোগ নিয়েছে বলে মনে হয়। তাদের জীবন থেকে একটি বছর ঝরে গেলে অপূরণীয় ক্ষতি থেকেই যেত। শিক্ষা জীবনে এহেন মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব বিরাজ করলে ভবিষ্যতের তরে নেতিবাচক প্রভাব ধেয়ে আসতো।
তাই, চাকরিক্ষেত্রে আশা জাগানিয়ায় আমরাও এমন স্বপ্ন বুনন করতে পারি। কিন্তু, পেশাদারিত্বে নিজস্ব একটা পন্থা থাকে। ঈপ্সিত আশাটুকু ব্যত্যয় প্রকাশে পারঙ্গম বলেই উদাসীন মনটাকে আবারও সান্ত্বনার আটপৌড়ে বেঁধে রাখি।
সময়ের কঠিন পরিস্থিতি বিবেচনায় আঁধারে ডুবন্ত থেকেও জেগে উঠি কাল্পনিক বারতায়। তাড়িত স্বরে আবারও একটি পরীক্ষার প্রহর গুনতে শুরু করি। কখন আমাদের ‘পরীক্ষা’ নামক অতি প্রত্যাশিত স্বপ্নটি কাছে টেনে নেবে! মনের বিরূপতার মাঝে নেতিবাচক প্রভাবে শুধুই নিস্তব্ধতায় দিন পার করা চলে। মাঝে মাঝে ভেসে আসে পরীক্ষার দিনক্ষণ।
আরও দেখুন:
◾ সার্কুলার, সময়সূচি, সিলেবাস, রেজাল্ট, বিগত সালের প্রশ্ন ও সাজেশন
◾ আইবিবি ব্যাংকিং ডিপ্লোমা সার্টিফিকেট উত্তোলন করবেন যেভাবে
◾ আইবিবি ব্যাংকিং ডিপ্লোমা মার্কশিট উত্তোলন করবেন যেভাবে
ভাবি, মহামারীর প্রকোপ থেকে দেশটি রক্ষা পেয়েছে। হৃদয়ের মাঝে প্রকম্পিত করে তুলে হৃদস্পন্দনে। কিন্তু সময়ের পরিস্থিতি বিবেচনায় সেটাও সম্ভব হয়নি। ফলে, আবারও পরীক্ষায় বিচরণের আশায় দিন ক্ষণ গণনা করি।
অনজন কুমার রায়, ব্যাংক কর্মকর্তা ও লেখক। প্রিন্সিপাল অফিসার, রূপালী ব্যাংক পিএলসি, বন্দর বাজার শাখা, সিলেট।