ক্রেডিট কার্ড

ব্যাংকারদের ক্রেডিট কার্ড এবং ব্যাংক ঋণের বাড়তি বোঝা বনাম করোনার থাবা

ব্যাংকের চাকুরীর সুবাদে খুব সহজেই, অন্য ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড এর অফার আমরা পেয়ে থাকি, যা অন্য পেশাজীবীদের জন্য অতটা সহজ নয়। তাছাড়া খুব সহজলভ্য ডকুমেন্টস এবং শক্ত রেফারেন্স থাকায় কার্ড নিতে অনেক ক্ষেত্রে বাধ্য থাকি। আর কার্ডের সংখ্যাও বাড়তে থাকে, এছাড়া সংসার ও পরিবারের প্রয়োজনে পারসোনাল লোন তো আছেই। এটা হয়তো ৭০% বা ৮০% ব্যাংকারদের কথা বলছি।

অনেকের বেতন হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে অ্যাকাউন্ট শূন্য হয়, কারন কার্ড ও লোন সব খেয়ে ফেলে পরবর্তীতে আবার কার্ড ব্যবহার! এভাবেই বাকি দিনগুলো চলতে থাকে। খুব ভালো চলছি? পরিবার পরিজনও বেশ খুশি! কিন্তু মাস শেষে বাড়তি সুদ? কিংবা সেটা কতো % একবারো কি ভাবছি? কেউ কেউ ভাবছি কিন্তু পারছিনা। দুটিই সত্য!

ব্যাংকিং নিউজ বাংলাদেশ (Banking News Bangladesh. A Platform for Bankers Community.) প্রিয় পাঠকঃ ব্যাংকিং বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবরগুলো নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ ব্যাংকিং নিউজ বাংলাদেশ এ লাইক দিয়ে আমাদের সাথেই থাকুন।

ব্যাংকার হিসেবে নিশ্চয় আপনারা/ আমরা করোনার থাবা আঁচ করতে পারছি। ইতিমধ্যে অনেক ব্যাংক কর্মীদের দিগুণ কাজ করাচ্ছে। আবার অনেক ব্যাংক বেতন কমিয়ে দিয়েছে। আবার অনেক ব্যাংক চিন্তা করছে ব্যয় সংকোচণের নানা পন্থা।

প্রতিষ্ঠান বাঁচলে হয়তো আমরা বাঁচবো, তারপর হয়তো বেতন বৃদ্ধি বা অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার প্রশ্নগুলো আসবে। প্রতিষ্ঠান যখন ব্যয় সংকোচণের কথা ভাবছে, সুতরাং আমাদেরও ব্যয় সংকোচণের কথা ভাবতে হবে। আমার ক্ষুদ্র চিন্তা ধারা থেকে নিম্নোক্ত কাজ গুলো করতে পারিঃ

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

১) একটা বা দুটি কার্ড রেখে বাকি গুলো বন্ধ করে দেওয়া।
২) বেতনের অতিরিক্ত খরচ না করা।
৩) গুরুত্ব বুঝে আসবাবপত্র বা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয় করা।
৪) ১০%-২০% বেতন আমানত হিসেবে রাখা।
৫) বেতন বাড়বে ভেবে অতিরিক্ত খরচ না করা।
৬) যত্রতত্র কার্ড ব্যবহার না করা।
৭) আয় ও ব্যয় নিয়ে পরিবারের সাথে খোলামেলা আলোচনা করা।
৮) ধার-দেনা থেকে নিজেকে গুটিয়ে রাখা।
৯) অতিরিক্ত লাভের আশায়/ কিংবা লোভনীয় হয়ে কোন কাজ না করা।
১০) পরিবারের সাথে পরামর্শ করে মৌলিক চাহিদাগুলো মেটানো।

আজ যে ব্যাংকিং সেক্টর মন্দ ঋণে জর্জরিত, যা নিয়ে আমরা প্রতিনিয়ত হিমশিম খাচ্ছি ঠিক তেমনি আমরা যারা বেশি দায় (লোন) নিয়ে চাকরি করছি। আল্লাহ মাফ করুন- আমরা চাকরি থেকে ছাঁটাই হলে আমি তথা আমার পরিবারও কিন্ত ঋণ খেলাপি হয়ে পরবে। জানি অনেকে হয়তো কষ্ট পাচ্ছে, আমার এই ক্ষুদ্র লেখায়। তাদের কাছে দুঃখিত কিন্তু যাদের জন্য চাকরীটাই একমাত্র অবলম্বন তাদের জন্য চিরন্তন সত্য।শখের বশে যারা চাকরি করে কিংবা যাদের পরিবারে অন্য অবলম্বন আছ্‌ তাদের জন্য এই লেখাটি নয়।

চাকরি জীবনে অনেক বড় পদের সহকর্মীদের দেখেছি, এক কার্ড দিয়ে অন্য কার্ডের দায় শোধ করতে কিংবা সমস্ত বেতন দিয়ে দায় শোধ করে পুনরায় কার্ড চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করতে। কার্ড এর বিল না দিতে পারায় (খেলাপি হলে) অনেক ব্যাংকের কর্মীদের নামে প্রধান কার্যালয়ের মানব সম্পদ বিভাগে চিঠিও পাঠানো হয় যা চাকরির ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলে।

তাই আসুন কারো করুনার পাত্র না হয়ে, করোনার থাবা থেকে নিজে বাঁচি, পরিবারকে বাঁচাই সাথে নিজে দায় মুক্ত থাকি, টেনসন মুক্ত থাকি, পরিবারকে ঋণমুক্ত রাখি। এই লেখা কাউকে উদ্দেশ্য করে নয়, একান্তই আমার ব্যক্তিগত মতামত, কেউ কষ্ট পেলে ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।

লেখকঃ মোঃ শাহিনুর ইসলাম, প্রিন্সিপাল অফিসার এবং ম্যানেজার অপারেশন। [প্রকাশিত এই লেখাটি লেখকের একান্তই নিজস্ব। ব্যাংকিং নিউজ বাংলাদেশ লেখকের মতাদর্শ ও লেখার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। প্রকাশিত লেখা ও মতামতের জন্য ব্যাংকিং নিউজ বাংলাদেশ দায়ী নয়।]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button