এক বছরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ৪ লাখ কোটি টাকা লেনদেন
ব্যাংকিং সুবিধার পাশাপাশি কেনাকাটায় নানারকম অফার থাকায় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের প্রতি ঝুঁকছে মানুষ। ফলে প্রতি মাসেই এ সেবায় অন্তর্ভুক্ত হচ্ছেন হাজার হাজার গ্রাহক। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে মাত্র চার বছরের ব্যবধানে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে মোবাইলভিত্তিক লেনদেনের পরিমাণ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর শেষে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) গ্রাহক দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৯৬ লাখ। অন্যদিকে, ডিসেম্বর মাসে এ সেবায় দৈনিক লেনদেন হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৩১১ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০১৯ সালে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে মোট লেনদেন হয়েছে ৪ লাখ ৩৪ হাজার ৫১৮ কোটি টাকা। তবে মাত্র চার বছর আগেও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের পরিমাণ ছিল এর অর্ধেক। ২০১৬ সালে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে মোট লেনদেন ছিল ২ লাখ ৩৪ হাজার ৭১১ কোটি টাকা।
বছর জুড়ে নানা রকম ছাড় ও অফারের কারণে ডিজিটাল এই পেমেন্ট ব্যবস্থায় ঝুঁকছে মানুষ। তবে বর্তমানে কেনাকাটার ক্ষেত্রে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে ক্রেডিট কার্ড ও মোবাইল ব্যাংকিং। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, বর্তমানে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহক প্রায় এক কোটি ৮৬ লাখ। এর মধ্যে ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহক সাড়ে ১৪ লাখ। আর মোবাইল ব্যাংকিয়ের গ্রাহক সাত কোটি ৯৬ লাখ। বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো এসব সেবায় এগিয়ে রয়েছে।
ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন। |
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে মোট ১৬টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং করছে। এসব প্রতিষ্ঠানে ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট নিবন্ধিত হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৯৬ লাখ ৪৯ হাজার। এর মধ্যে সক্রিয় হিসাব রয়েছে ৩ কোটি ৪৭ লাখ ৬৩ হাজার। এ সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ লাখ ৭১ হাজার ২০ জন। ডিসেম্বর মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে দৈনিক লেনদেনের পাশাপাশি মোট লেনদেনও বেড়েছে।
তথ্য অনুযায়ী, ডিসেম্বর মাস জুড়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে মোট লেনদেন হয়েছে ৩৭ হাজার ৯১৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। অক্টোবরে এর পরিমাণ ছিল ৪০ হাজার ৬৪৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ নভেম্বরের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। এ মাসে গড় লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৩১১ কোটি ২১ লাখ টাকা।
নভেম্বরে যা ছিল ১ হাজার ২৬৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। এ হিসাবে নভেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরে দৈনিক লেনদেন বেড়েছে ৩ দশমিক ৭০ শতাংশ। ডিসেম্বর মাস জুড়ে মোবাইল ব্যাংকিং হিসেবে টাকা উত্তোলন ও জমার পরিমাণ দুটোই বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ডিসেম্বর মাস জুড়ে মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবগুলোতে ক্যাশইন হয়েছে ১৪ হাজার ৫৬২ কোটি ৭০ লাখ টাকা। নভেম্বরে যার পরিমাণ ছিল ১৩ হাজার ৪০৭ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এক মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ক্যাশইন বেড়েছে ৮ দশমিক ৬০ শতাংশ। ডিসেম্বর মাসে মোট উত্তোলন করা বা ক্যাশ আউট হয়েছে ১৩ হাজার ৪৭৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। নভেম্বর মাস জুড়ে উত্তোলন করা হয়েছিল ১২ হাজার ৬৯৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডিসেম্বর মাসে ব্যক্তি হিসাব থেকে ব্যক্তি হিসাবে অর্থ স্থানান্তর হয়েছে প্রায় ৯ হাজার ৮৫১ কোটি টাকা। আগের মাস নভেম্বরের চেয়ে যা ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ বেশি।
জানা গেছে, ২০১১ সালের মার্চে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক প্রথমবারের মতো দেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে। এ পর্যন্ত ৫৯টি ব্যাংকের মধ্যে ২৮টি ব্যাংককে এই সেবা চালুর অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে ২০টি ব্যাংক সেবাটি চালু করতে পারলেও পরবর্তী সময় চারটি ব্যাংক সেবাটি বন্ধ করে দেওয়ায় এখন ১৬টি ব্যাংক এ সেবা দিচ্ছে। ২০১৩ সালের নভেম্বরে প্রথম এ সেবার নিবন্ধিত গ্রাহকসংখ্যা ১ কোটি ছাড়ায়।