অর্থনীতি

বন্ড কী? এবং কত প্রকার ও কী কী?

বন্ড হচ্ছে এক ধরণের ঋণপত্র। এ ঋণপত্র ছেড়ে ইস্যুকারী প্রতিষ্ঠান ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে। স্টক এক্সচেঞ্চে তালিকাভূক্ত অথবা তালিকা-বহির্ভূত কোন কোম্পানি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির অনুমোদনক্রমে বাজারে ঋণপত্র ছেড়ে তার বিপরীতে অর্থ সংগ্রহ করতে পারে। এতে সুদের হার উল্লেখ করা থাকে। সে অনুসারে নির্দিষ্ট সময় পর পর বন্ডের বিপরীতে সুদ প্রদান করা হয়। সুদের সঙ্গে মূলধনের আংশিক অর্থও প্রদান করা হয়। তবে এটি বন্ডের ধরনের উপর নির্ভর করে।

বন্ড কি?
বন্ড এক ধরনের ঋণপত্র। এ ঋণপত্র ছেড়ে ইস্যুকারী প্রতিষ্ঠান ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে। বন্ড সরকারি ও বেসরকারি উভয় প্রকারের হতে পারে। বন্ড স্বল্পমেয়াদি, দীর্ঘমেয়াদি ও মেয়াদবিহীন হতে পারে। বন্ড স্টক এক্সচেঞ্জ এ তালিকাভুক্ত হতে পারে আবার নাও হতে পারে। সরকার, ব্যাংক, বীমা কোম্পানি দেশীয় বাজার বা আন্তর্জাতিক বাজারে বন্ড বিক্রি করতে পারে। আমাদের দেশে প্রায় সব বন্ড সরকারি।

আইবিবিএল-এর ৩ শত কোটি টাকার বন্ড বাজারে আছে। এটি মেয়াদবিহীন। তাদের এ বন্ডের মেয়াদকাল সীমিত নয়। আইবিবিএল-এর বন্ডে যে হারে লাভ দেওয়া হবে তার ফর্মূলা দেওয়া আছে। আইবিবিএল বন্ডের অর্থ বিনিয়োগ করে যে আয় হয় তার উপর বন্ডের লাভের হার নির্ধারিত হয় এবং শেয়ার ডিভিডেন্ড-এর ২.৫ শতাংশ বন্ড মালিকদেরকে দেওয়া হয়। ২০০৮ ও ২০০৯ সনে বন্ডের উপর যথাক্রমে ১৩.২৫% এবং ১২.৩৫% হারে লাভ দেওয়া হয়েছে। ২০০৯ সালে বেশ কয়েকটি মেয়াদি বন্ড বাজারে এসেছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো উত্তরা ফাইন্যান্স এবং এসিআই-এর জিরো কুপন বন্ড। এই বন্ডের উপর বাৎসরিক কোনো সুদের ব্যবস্থা নাই। এসিআই বন্ডটি স্টক এক্সচেঞ্জ-এর তালিকাভুক্ত। ৫০০০ টাকার বন্ড উত্তরা ফাইন্যান্স ৩,৭৫০ টাকা করে বিক্রি করেছে। মেয়াদ শেষে বন্ডমালিকগণ ৫,০০০ টাকা পাবেন।

মজার ব্যাপার হলো, এসিআই ছাড়া বাকি বন্ডগুলো লিস্টেড ছিল না। আরও কয়েকটি ব্যাংক বিএসইসি থেকে বন্ড ছাড়ার অনুমতি পেয়েছে। এ বন্ডগুলোর নির্দিষ্ট সুদের হার রয়েছে। কেবলমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীগণ এ ধরনের বন্ড ক্রয় করে থাকেন। লিস্টেড না হলে সাধারণ বিনিয়োগকারী বন্ড ক্রয় করতে পারেন।

ব্যাংক, ব্যাংকার, ব্যাংকিং, অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ খবর, প্রতিবেদন, বিশেষ কলাম, বিনিয়োগ/ লোন, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ফিনটেক, ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারগুলোর আপডেট পেতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ 'ব্যাংকিং নিউজ', ফেসবুক গ্রুপ 'ব্যাংকিং ইনফরমেশন', 'লিংকডইন', 'টেলিগ্রাম চ্যানেল', 'ইন্সটাগ্রাম', 'টুইটার', 'ইউটিউব', 'হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল' এবং 'গুগল নিউজ'-এ যুক্ত হয়ে সাথে থাকুন।

বন্ডের প্রকারভেদ
বন্ড সাধারণত দুই ধরনের হতে পারে। যথা-
১| কনভার্টেবল এবং
২| রিডেমেবল।

১| কনভার্টেবল বন্ডঃ এই বন্ডের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময় শেষে ওই সিকিউরিটিজের একটি অংশ, ক্ষেত্র বিশেষে পুরোটা শেয়ারে পরিণত হয়।
২| রিডেমেবল বন্ডঃ এটি হচ্ছে এমন একটি ঋণপত্র যা নির্দিষ্ট সময় পর যার পূর্ণ অবসান ঘটে। ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা বিধিবদ্ধ যে কোন কোম্পানি বা সংস্থা “এসইসির” অনুমোদনক্রমে বাজারে বন্ড ছেড়ে তার বিপরীতে অর্থ সংগ্রহ করতে পারে। তবে ব্যাংকের বেলায় “এসইসি” ছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়।

বন্ডে সুদের হার নির্ধারণ করা থাকতে পারে; অনির্ধারিতও থাকতে পারে। অনির্ধারিত মুনাফার বেলায় কোম্পানি বন্ড থেকে সংগৃহীত অর্থ বিনিয়োগের মাধ্যমে যে লভ্যাংশ পায় তার ভিত্তিতে মুনাফা দিয়ে থাকে। ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক পরিচালিত প্রতিষ্ঠান সাধারণত এই ধরনের বন্ড ইস্যু করে থাকে।

মেয়াদের দিক থেকে সাধারনত বন্ড দুই ধরণের হয়ে থাকে। যথা-
১| পারপিচুয়াল বন্ড এবং
২| রিডেমেবল বন্ড।

১| পারপিচুয়াল বন্ডঃ পারপিচুয়াল বন্ডের কোন মেয়াদ থাকে না। কোম্পানি প্রত্যাহার করে নেওয়া না পর্যন্ত এটি কার্যকর থাকে।
২| রিডেমেবল বন্ডঃ রিডেমেবল বন্ড একটি নির্দিষ্ট সময় পর অবসায়িত হয়।

লভ্যাংশ যুক্ত কুপন বিবেচনায়ও বন্ড দুই ধরণের হয়। যথা-
১| কূপনযুক্ত বন্ড ও
২| জিরো-কুপন বন্ড।

১| কূপনযুক্ত বন্ডঃ কুপনযুক্ত বন্ডের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর বন্ডের মালিক নির্ধারিত হারে লভ্যাংশ পায়।
২| জিরো-কুপন বন্ডঃ জিরো-কুপন বন্ডে কোনো লভ্যাংশ দেওয়া হয় না। বরং বাজারে এ বন্ড বিক্রি করার সময় অভিহিত মূল্যের তুলনায় বেশ কিছুটা কমে বিক্রি করা হয়। কিন্তু মেয়াদ শেষে বন্ডের মালিক অভিহিত মূল্য অনুসারে পুরো টাকা ফেরত পায়।

বন্ডের বিপরীতে সাধারণত পর্যাপ্ত স্থাবর সম্পদ জামানত রাখা হয়। বন্ড ইস্যুকারী প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগকারীকে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অর্থ ফেরত দিতে ব্যর্থ হলে ওই সম্পদ বিক্রি করে তা পরিশোধ করা হয়। বন্ড স্বল্পমেয়াদি এবং দীর্ঘমেয়াদি- উভয় ধরণের হতে পারে।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বন্ডের সংখ্যা ৩টি। যথা-
১| জিরো-কুপন বন্ড,
২| কুপনযুক্ত এবং
৩| পারপিচুয়াল বন্ড।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

রিলেটেড লেখা

Back to top button